মামুন খান: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ব্যবসায় প্রশাসনের চতুর্থ সেমিস্টারের শিার্থী অমিত সাহা হত্যা মামলায় দুজনের মৃত্যুদ- এবং একজনকে যাবজ্জীবন কারাদ-ের রায় দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকার এক নম্বর দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন এই রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদ-প্রাপ্ত দুই আসামি হলেন আফতাব আহমেদ শিহাব এবং আল আমিন ইসলাম পিন্টু। রুহুল আমিন রুবেলকে যাবজ্জীবন কারাদ- দেওয়া হয়েছে। দ-প্রাপ্ত তিনজনই অমিতের বন্ধু।
দ-বিধির ৩৯৪/৩৪ ধারায় শিহাব, পিন্টু এবং রুবেলকে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছেন আদালত। তাদেরকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে তাদেরকে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাভোগ করতে হবে। দ-বিধির ৪১১/৩৪ ধারায় এ তিনজনকে তিন বছরের কারাদ- এবং দশ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। জরিমানা অনাদায়ে তাদেরকে তিন মাসের কারাদ- দেওয়া হয়েছে।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, তিন অক্ষরের ‘বন্ধু’ শব্দটির অর্থ যে কিনা শত্রু নয় এবং যার উপর বিশ্বাস রাখা যায়। বন্ধুত্ব হচ্ছে মমত্ব, আনুগত্য, ভালবাসা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা, আস্থা ও গভীর বিশ্বাসের মিশ্রণ। বন্ধুত্বের মধ্যে লোভ-লালসা থাকবে কেন? কি অপরাধ ছিল অমিত সাহার এবং তার পরিবারের? বন্ধু নির্বাচনই কি তার অপরাধ ছিল? নাকি অমিত সাহার পরিবারের ভুল ছিল বন্ধু নামীয় শত্রুদের সঙ্গে অমিত সাহাকে মিশতে দেওয়া। বন্ধু নির্বাচন কখনই ভুল হবে না যদি বন্ধুটির মাঝে মানবিক গুণাবলি ও মূল্যবোধ থাকে, যদি বন্ধুটির মনের মাঝে লোভ-লালসা বাঁধা না থাকে। এক বন্ধু অন্য বন্ধুর জীবনের হুমকি হয়ে দাঁড়াবে সেই বন্ধুত্ব নাইবা হোক। নিহত অমিত সাহার বন্ধুদের দ্বারা নৃশংসভাবে হত্যা ‘বন্ধুত্ব’ শব্দটিকে কলঙ্কিত করেছে।
পর্যবেক্ষণে বিচারক আসামিগণ বন্ধুত্বের পরিচয় দিয়ে যে নৃশংস ঘটনার অবতারণা করেছে তার পুনরাবৃত্তি না হোক আদালত তা কামনা করে। সে কারণে আসামিগণকে তাদের কৃতকর্মের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান যুক্তিসঙ্গত। এতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে বলে আদালত মনে করে।
রায় ঘোষণার পর অমিত সাহার বাবা শ্যামল চন্দ্র বলেন, রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। ন্যায় বিচার পেয়েছি। অপরদিকে আসামিপরে আইনজীবী সাফায়েত হোসেন সজিব বলেন, আমরা ন্যায়বিচার পাইনি। এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম