লড়াই করে হারলো বাংলাদেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক: পারলো না বাংলাদেশ, দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচে সিডনি থান্ডারের কাছে ৬ উইকেটে হারলো। গতকাল শুক্রবার সিডনির স্পটলেস স্টেডিয়ামে টাইগার বোলাররা লড়লেন। কিন্তু প্রতিপক্ষ বিগ ব্যাশ চ্যাম্পিয়ন সিডনি থান্ডারের তাতে খুব সমস্যা হলো না। আগে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ১২২ রান করেছিল মুশফিকরা।
টি-টুয়েন্টি ম্যাচে ১২৩ কোনো বড় টার্গেট নয়। আর যখন প্রতিপক্ষ দলই টি-টুয়েন্টি স্পেশালিস্ট, অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটের সেরা দল তখন তো সেটা আরও বড় নয়। প্রথম ম্যাচে ব্যাটিং-বোলিংয়ে বিগ ব্যাশের আরেক দল সিডনি সিক্সার্সকে উড়িয়ে দিয়েছিল মাশরাফির দল। কিন্তু মুশফিকের দল এদিন সেই দাপট দেখাতে পারল না। থান্ডারের দুই ওপেনার শুরু থেকে মারলেন। কিন্তু ৪৮ রানের সময় প্রথম উইকেট হারায় তার। জে লেনটনকে (২৫) শিকার করেন রুবেল হোসেন। রুবেলই এরপর তুলে নেন অন্য ওপেনার রায়ান গিবসনকে। তাকে মারতে গিয়ে কাভারে ইমরুলের হাতে ধরা পড়েন গিবসন। ৫৭ রানে পড়ে দ্বিতীয় উইকেট। এর ৩ রান পর লেগ স্পিনার তানবিরকে তুলে মারেন ডোরান। বাউন্ডারি লাইনে ধরা পড়ে ফেরেন তিনি। প্রথম ওভারেই উইকেট পান তানবির। এরপর ৮০ রানের সময় পেসার শুভাশিস চৌধুরী আঘাত হানলে চতুর্থ উইকেট হারায় থান্ডাররা। ফিরে যান বিজার্ড। মনে হয়েছিল লড়াইয়ে ফিরছে টাইগাররা। কিন্তু অধিনায়ক ইয়ন মরগ্যান ও অর্জুন নায়ার আর পথ হারাতে দিলেন না দলকে। স্টেডিয়ামের উৎসাহী বাংলাদেশি সমর্থকদের ম্রিয়মান করে দিয়ে দাপটে জয় তুলে নিলেন তারা।
এর আগে বাংলাদেশের ব্যাটিং চিত্রটা একটু অন্য রকম। ২১ রানে ৪ উইকেট। ৪৯ রানে ৬টি। এই ব্যাটিং বিপর্যয়ের মাঝে থান্ডারের বিপক্ষে রুখে দাঁড়ান বাংলাদেশের লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানরা। টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় বড় রান হয়নি। নুরুল হাসানের ৩৫ এবং শুভাগত হোমের ২৫ রানের বড় ভূমিকা টাইগারদের ইনিংসে। এই ম্যাচে টাইগারদের নেতৃত্ব দিলেন মুশফিকুর রহীম। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামল তার দল। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ান বোলার প্যাট কামিন্স প্রথম ওভারেই তুলে নেন ইমরুল কায়েসকে। পরের ওভারে ম্যাককের শিকার হয়ে ফেরেন সৌম্য সরকার (৩)। তৃতীয় ওভারে গুরিন্দর সান্ধু তুলে নেন সাব্বির রহমানকে। টানা দুই ম্যাচে ব্যর্থ সাব্বির। ৩ ওভারে ৩ উইকেটে তখন ১৩ রান বাংলাদেশের। ২১ রানে পড়ে ৪ উইকেট। ষষ্ঠ ওভারে। বিদায় নেন মুশফিকও। এই স্টেডিয়ামে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি উপস্থিত হয়েছিলেন টাইগারদের সমর্থন দিতে। কিন্তু প্রিয় দলের জন্য গলা ফাটানোর উপলক্ষ পাচ্ছিলেন না তারা।
মোসাদ্দেক হোসেন অষ্টম ওভারে দুটি বাউন্ডারি মেরে নাচিয়ে তুলেছিলেন বাংলাদেশি সমর্থকদের। কিন্তু পরের ওভারে স্পিনার নায়ারের বোলিংয়ের লাইন মিস করে বোল্ড। ৩৮ রানে ৫ উইকেট। মোসাদ্দেক ফেরেন ১৩ রান করে। মুমিনুল হক নামেন। কিন্তু তিনিও থাকতে পারলেন না। বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানরা প্রথমে পেস বোলিংয়ে খেলতে পারছিলেন না। পরে স্পিনেও দারুণ ঝামেলায় পড়েছেন। ৪৯ রানে নেই ৬ উইকেট। নিদারুণ ব্যাটিং বিপর্যয়। ওখান থেকে নুরুল হাসান ও শুভাগত হোমের সপ্তম উইকেট জুটির শুরু। ১৫তম ওভারে ভাঙে তা। ২৭ রান এনে দেয় ওই জুটি। দলের ৭৬ রানে শুভাগত ব্যক্তিগত ২৫ রান করে ফেরেন। তার ইনিংসে একটি চার। তবে নুরুল ও তানবির এরপর দলের রান ১০০ পার করেন। টাইগার সমর্থকরা ততক্ষণে মাঝে মাঝে উল্লাসে মাতার সুযোগ পেয়েছেন। নুরুল-তানবিরের অষ্টম উইকেট জুটি ভাঙে ১১৭ রানে। ইনিংস সর্বোচ্চ ৪১ রানের জুটি তাদের। তানবির অপরাজিত থাকেন ১০ রানে। নুরুল ৩টি চার ও ১টি ছক্কা মেরেছেন। প্যাট কামিন্স ও অর্জুনা নায়ার ২টি করে উইকেট নিয়েছেন। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম