বিকালে রাজধানীর রাজপথে আওয়ামী লীগের বিজয় র্যালি অনুষ্ঠিত সোহাগপুরের বিধবা নারী মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দিয়েছে বিজয় দিবস উদযাপন কমিটি
আনিসুর রহমান তপন : বিজয় দিবসে সোহাগপুরের বিধবাপল্লীর নারী মুক্তিযোদ্ধাদের নাগরিক সংবর্ধনা দিয়েছে বিজয় দিবস উদযাপন জাতীয় কমিটি। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে শুরু হয়েছে দিনব্যাপী বিজয় দিবসের উৎসব। সকাল সাড়ে ৯টায় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত অনুষ্ঠানটির উদ্বোধন করেন। কমিটির সদস্য সচিব ডা. ইমরান এইচ সরকার, মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির, ভাস্কর রাসা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন এসময়।
উদ্বোধনের পরপরই শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এছাড়া দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানটি নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালন করেছে জাতীয় কমিটি। কর্মসূচির মধ্যে ছিল, সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর পর্যন্ত চলেছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দুপুর ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত জুমার নামাজের বিরতির পর বেলা ২টায় বিজয়মঞ্চে ব্যান্ডদল পরিবেশন করে কনসার্ট ফর ফ্রিডম। বিকেল সাড়ে ৩টায় বিজয় দিবস স্মরণিকা আমার মুক্তিযুদ্ধ’র মোড়ক উন্মোচনের পর বিকেল পৌনে ৪টায় সোহাগপুরের বিধবাপল্লীর বীর নারী মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ২৫ জুলাই শেরপুরের নালিতাবাড়ি উপজেলার সোহাগপুর গ্রামে যুদ্ধাপরাধী মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের নেতৃত্বে পাকবাহিনী নির্বিচারে হত্যাকা- চালায়। এ সময় নিহত হন ১৮৭ জন, বিধবা হন ৬৪ নারী। এরপর থেকে ওই গ্রাম বিধবা পল্লী হিসেবে পরিচিতি পায় সারাদেশে।
এছাড়া গত বছরের মত এবারও বিকেল ৪টা ৩১ মিনিটে বিশ্বব্যাপী লাখ-কোটি কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। এরপর বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে আগামির বাংলাদেশ গড়ার শপথ নেন বিজয় দিবস জাতীয় উদযাপন কমিটির সদস্যসহ অনুষ্ঠানে যোগ দেয়া দর্শনার্থীরা। এছাড়া সন্ধ্যায় কমিটির উদ্যোগে বর্ণিল আলোকোৎসব বিজয় আতশ সজ্জা এর আয়োজন করা হয় ‘বিজয় আতশ সজ্জা। এরপর রাতে আবার শুরু হয় কনসার্ট ফর ফ্রিডম।
এছাড়া রাজধানীতে বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর পূর্ব নির্ধারিত র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। র্যালিতে অংশ নিতে বেলা ১২টা থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের অনুসারীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনের গেটে সমবেত হতে থাকে। এসময় সরকার সমর্থক দলটির কর্মীদের হাতে ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তথ্য উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানার ছবি সম্বলিত ব্যানার-পোস্টার।
এছাড়াও ছিল জাতীয় পতাকা, দলীয় পতাকা, দলীয় প্রতীকসহ রং বেরংয়ের বেলুন। সঙ্গে ট্রাকে ছিল সত্যিকারের নৌকাও। তাদের অনেকের পরনে ছিল জাতীয় পতাকা খচিত নানা রকমের পোশাক। বিশেষ করে নারীদের পরনে ছিল লাল-সবুজ শাড়ি। র্যালিতে ঘোড়ার গাড়ি, হাতি, বাদক দল ও বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার ছিল বাড়তি আকর্ষণ। এছাড়াও র্যালিতে অংশ নেয়া পিক-আপ ভ্যান ও ট্রাকে সাউন্ড সিস্টেমের মাধ্যমে বাজানো হয় দেশাত্মবোধক গান, জয় বাংলা শ্লোগান, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ও বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করা বিভিন্ন গান। সম্পাদনা : উম্মুল ওয়ারা সুইটি