সাত মাসেও জট খোলেনি মিতু হত্যা রহস্যের
আমিনুর রহমান তাজ: গত সাত মাসেও সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা রহস্যের জট খোলেনি। উদ্ধার করা যায়নি হত্যার মোটিভ। যদিও তদন্তকারী সংস্থা গোয়েন্দা পুলিশের তরফে দাবি করা হচ্ছে, তদন্ত অনেকটাই এগিয়েছে। এই অবস্থার প্রেক্ষিতে গত শুক্রবার মিতুর পুলিশ কর্মকর্তা স্বামী বাবুল আক্তারকে গত বৃহস্পতিবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান। বাবুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছেন ওই তদন্ত কর্মকর্তা। এই তথ্য তদন্ত কাজে সহায়ক হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
স্ত্রী হত্যার ঘটনায় সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম গোয়েন্দা দফতরে তিন ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার কাছে সন্দেহভাজন ঘাতক কামরুল শিকদার মুসার সঙ্গে তার সম্পর্ক জানতে চাওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদে বাবুল আক্তার জানান, মুসার সঙ্গে তার পূর্ব থেকেই ঘনিষ্ঠতা ছিল। সে তার সোর্স হিসেবে কাজ করতো। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে বাবুল আক্তার অনেকটাই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন বলে জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাবুল আক্তার গাড়িতে করে গোয়েন্দা কার্যালয় ত্যাগ করেন।
মামলা তদন্ত কর্মকর্তা অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘তাকে টেলিফোনেই ডেকে আনা হয়েছে। হত্যা মামলার বিষয়ে টেলিফোনে কথা বলা সমীচীন হবে বলেই তাকে আসতে বলেছি আমরা’। তিনি আরও বলেন, ‘মামলার অনেকদূর এগিয়েছে। বলতে গেলে তদন্তের অর্ধেকটাই আমরা পার করে এসেছি’। তিনি বলেন, ‘বাবুল আক্তারকে ভবিষ্যতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হতে পারে। এ ব্যাপারে তিনি বাবুলের শ্বশুর সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে ঢাকায় টেলিফোনে কথাও বলেছেন।
অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান আরও বলেছেন, ‘এই ঘটনায় ৭ জন আসামি এখন জেলহাজতে রয়েছে। প্রধান আসামি মুসাসহ বেশ কয়েকজন পলাতক রয়েছে। তাদের হদিস বের করতে কাজ করছে আমাদের গোয়েন্দা শাখা’। তিনি বলেন, ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তদন্ত শেষ করে চার্জশিট দেওয়া হবে’।
উল্লেখ্য, গত ৫ জুন চট্টগ্রামের জিইসি মোড়ে বাচ্চাকে স্কুলবাসে উঠিয়ে দেওয়ার সময় মোটরসাইকেল আরোহীদের গুলিতে নিহত হন গৃহবধূ মাহমুদা খানম মিতু। মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ব্যাপারে গত ২৪ জুন সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে গোয়েন্দা দফতরে ডেকে নিয়ে রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে জোরপূর্বক অব্যাহতিপত্রে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। গত ৬ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাবুল আক্তারকে চাকুরি থেকে বরখাস্ত করে।