বলিভার নোট বাতিলের সিদ্ধান্তে ভেনেজুয়েলায় বিক্ষোভ-লুটতরাজ
পরাগ মাঝি: ভারতের নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত দেশটির অর্থনীতি এবং সমালোচকদের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেললেও এ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে ভেনেজুয়েলায়। ১২ ডিসেম্বর দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো ১০০ মানের বলিভার নোট বাতিল ঘোষণা করেন। এ ঘোষণার পর দেশটিতে ব্যাপক বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে এবং গরিব মানুষরা বিক্ষোভ শুরু করেছে। বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং দোকান-পাটে লুটতরাজেরও অভিযোগ উঠেছে।
ভেনেজুয়েলার অন্তত ৬টি অঙ্গরাজ্যে বিক্ষোভের মাত্রা সবচেয়ে বেশি। এসব রাজ্যে সড়ক অবরোধসহ যানবাহনে হামলা এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু করেছে বিক্ষোভকারীরা। দেশটির পুলিশ অন্তত ৩০ জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে একাধিক মানুষ আহত হয়েছে। বিশৃঙ্খলার জন্য বিরোধী রাজনৈতিকদের দায়ী করে প্রেসিডেন্ট মাদুরো বলেন, ‘ভাঙচুর এবং সহিংসতার যেসব ছবি ও ভিডিও চিত্র গোয়েন্দারা সংগ্রহ করেছে তাতে বিরোধীদের সংশ্লিষ্টতা স্পষ্ট।’ নোট পরিবর্তনের জন্য ব্যাংকগুলোর সামনে দীর্ঘ লাইন দেখা যাচ্ছে। বুথগুলোয় পর্যাপ্ত অর্থ পাওয়া যাচ্ছে না। কোথাও কোথাও পুরানো নোটই সরবরাহ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। তবে সরকারি সূত্র জানিয়েছে ব্যাংকগুলোতে নতুন নোট বিতরণ করা হয়েছে এবং জানুয়ারির মধ্যে নোট বাতিলের পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। চোরাকারবারি ঠেকাতে ও খাদ্যসংকট সামাল দিতে ১০০ বলিভার মানের নোট বাতিলের ঘোষণা অনুযায়ী, তিন দিনের মধ্যে নোট পাল্টে সমমানের ধাতব মুদ্রা বা ছোট নোট সংগ্রহ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। ঘোষণার পর বন্ধ করে দেওয়া হয় ব্রাজিল ও কলাম্বিয়া সীমান্ত। তবে, সীমিত সময়ের মধ্যে নোট বদল করতে পারেনি দেশটির বেশির ভাগ মানুষ।
ভেনেজুয়েলার মোট অর্থ সরবরাহের অর্ধেকই হচ্ছে ১০০ বলিভার নোটে। কয়েক বছর ধরেই দাম পড়ে যাচ্ছিলো ১০০ বলিভার নোটের। বর্তমানে এই নোট মাত্র দুই মার্কিন সেন্টে বিনিময় হচ্ছে। অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটে থাকা ভেনেজুয়েলার অন্যতম প্রধান সমস্যা ব্যাপক মূল্যস্ফীতি। ২০১৫ সালে মূল্যস্ফীতির সর্বশেষ পরিসংখ্যান প্রকাশ করে দেশটির সরকার। এতে দেখা যায়, মূল্যস্ফীতির হার ১৮০ শতাংশ। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল মনে করছে, ২০১৭ সালে দেশটির মূল্যস্ফীতি ২০০০ শতাংশ হবে। মূলত, দুই বছর ধরে বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমে যাওয়ায় অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে ভেনেজুয়েলা। দেশটির রপ্তানি আয়ের শতকরা ৯৫ ভাগই আসে জ্বালানি তেল সরবরাহ করে। বিবিসি