নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে এলডিপির প্রার্থিতা প্রত্যাহার
হাসান আরিফ ও মনজুর আহমেদ অনিক: নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (এনসিসি) নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের পক্ষে এলডিপির মেয়র প্রার্থী হাজি কামাল প্রধান তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন।
গতকাল দুপুরে বিএনপি প্রার্থীর মিডিয়া সেলে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কামাল প্রধান তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। এ সময় কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন, বিএনপির চেয়ারপাসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড. তৈমূর আলম খন্দকার, এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাৎ হোসেন সেলিমসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে কামাল প্রধান বলেন, তিনি দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে নির্বাচন থেকে সরে ধানের শীষের প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেনকে সমর্থন দিয়েছেন।
বিএনপি ও নিজ দলের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে কামাল বলেন, তিনি ও তার দলের নেতাকর্মীরা ধানের শীষের প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেনকে বিজয়ী করার জন্য একযোগে কাজ করবেন। এ সময় কামাল প্রধানের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে তাকে স্বপদে বহালের ঘোষণা দেন এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাৎ হোসেন সেলিম।
উল্লেখ্য, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্ধারিত সময়ে সরে না দাঁড়ানোয় ভোটের ব্যালটে কামাল প্রধানের নাম ও তার প্রতীক (ছাতা) থাকবে। ভোটাররা তাকে ভোটও দিতে পারবেন।
কামাল প্রধান সরে দাঁড়ানোয় এই নির্বাচনে এখন মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী রইলেন ছয়জন। এরা হলেন- আওয়ামী লীগের সেলিনা হায়াৎ আইভী (নৌকা), বিএনপির সাখাওয়াত হোসেন খান (ধানের শীষ), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মাহবুবুর রহমান ইসমাইল (কোদাল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাসুম বিল্লাহ (হাতপাখা), কল্যাণ পার্টির রাশেদ ফেরদৌস (হাতঘড়ি) এবং ইসলামী ঐক্যজোটের মুফতি এজহারুল হক (মিনার)।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন এলডিপির মেয়র প্রার্থীকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র রক্ষা, ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে এই সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এনসিসি নির্বাচনে ধানের শীষের পক্ষে যে গণজোয়ার সৃষ্টি হচ্ছে কামাল প্রধানের প্রার্থিতা প্রত্যাহার সেই জোয়ারকে বিজয়ের পথে নিয়ে যাবে।
হাফিজ উদ্দিন বলেন, দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন নেই। বিগত দিনে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। মানুষের সকল অধিকার খর্ব করা হয়েছে। ঢাকার দুটি ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কেন্দ্রে সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারেনি। সেখানে পুলিশ ভোট দিয়েছে। আমরা দেখেছি গাইবান্ধায় সাঁওতাল পল্লীতেও পুলিশ আগুন দিয়ে নিরীহ মানুষের ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে। দেশ এখন পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। এ অবস্থায় আগামী ২২ ডিসেম্বর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোট মানুষ দিতে পারবে কী না সেটা নিয়েও সন্দিহান।
তিনি বলেন, সরকারি আনুকূল্য ব্যক্তি পরিবেশকে বিঘœ করার চেষ্টা করছেন। তবে মানুষ ভোট কেন্দ্রে যেতে পারলে ও ভোট দিতে পারলে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত। তাই সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সেনা মোতায়েন জরুরি। গত নির্বাচনে বর্তমান আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেনা মোতায়েন চেয়েছিল। তখন নির্বাচন কমিশনও সেনা চেয়ে সরকারকে চিঠি দিয়েছিল। কিন্তু সেনা মোতায়েন হয়নি। এবার আবার ওই প্রার্থী সেনা মোতায়েন চাচ্ছেন না। তবে আমরা আশা করি বিজয়ের মাসে জনতার বিজয় ঘটবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক এমপি ফজলুল হক মিলন, কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতা সেলিমুজ্জামান সেলিম, হাসান মাহমুদ, কেন্দ্রীয় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-কোষাধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপু, কেন্দ্রীয় লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাৎ হোসেন সেলিম ও রূপগঞ্জ থানা যুবদলের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক খোকন। সম্পাদনা: উম্মুল ওয়ারা সুইটি