শিম চাষে ভাগ্য ফিরেছে নাটোরের কৃষকদের
তাপস কুমার, নাটোর : বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ যেন শিমের সমুদ্র। সবুজের উপর সাদা আর বেগুনি ফুলের সমোরাহ। শিমের রাজত্বে যেন অন্য ফসলের খোঁজ মেলা ভার। রাত গড়িয়ে বেলা বাড়লেই খেত থেকে শিম তুলে বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যান কৃষকরা। শিম বিক্রি করে বাড়ির জন্য সদাইপাতি নিয়ে ফিরে আসেন তারা। এটা এখানকার কৃষকদের নিত্যদিনের ঘটনা। অন্যান্য ফসলের তুলনায় অধিক সুফল এবং দাম ভালো পাওয়ায় শিম আবাদ করে ব্যাপক লাভবান হচ্ছেন এখানকার কৃষকরা। বিঘাপ্রতি খরচ বাদে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা লাভ তুলছনে একেকজন কৃষক। গত কয়েক বছরে শিম চাষে পাল্টে গেছে তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা।
কৃষি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবার জেলায় ৪০ হাজার মেক্ট্রিক টন শিম উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে প্রায় ৩০ হাজার মেক্ট্রিক টন শিম উৎপাদিত হয়েছে। এখানে উৎপাদিত শিম স্থানীয়ভাবে চাহিদা মিটিয়ে চলে যাচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলায় ১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে শিম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সেখানে আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৬৪৫ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৭ হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে বড়াইগ্রাম উপজেলায় সব্বোর্চ এক হাজার ২৪৮ হেক্টর, লালপুরে ১৪২ হেক্টর, সদরে ১২০ হেক্টর, নলডাঙ্গায় ৫৩ হেক্টর, গুরুদাসপুরে ৪০ হেক্টর, সিংড়ায় ২২ হেক্টর এবং বাগাতিপাড়ায় ২০ হেক্টর। শিম উৎপাদন ও বিপণেন বিখ্যাত বড়াইগ্রাম উপজেলার শিম চাষিরা জানান, বিঘা প্রতি শিম উৎপাদনে খরচ হয়েছে গড়ে ৩০ হাজার টাকা। আগাম অথবা ভাল ফলন হলে উৎপাদিত শিম লক্ষাধিক টাকায় বিক্রি করা সম্ভব।
এছাড়া ধানসহ অন্যান্য ফসলের তুলনায় শিম চাষ লাভজনক হওয়ায় এলাকায় শিম চাষের পরিধি অনেকাংশ বেড়েছে। বড়াইগ্রাম উপজলোর কয়েন গ্রামের কৃষক আমির হোসেন জানান, এক একর জমিতে বৈশাখ মাসে চারা রোপণ করে আষাঢ় মাস থেকে র্কাতিক মাস পর্যন্ত শিম উত্তোলন করে প্রায় দেড় লাখ টাকার শিম বিক্রি করেছেন। সম্পাদনা : তারেক