আজ মার্কিন ইলেক্টোরাল কলেজের বৈঠকে কী হতে পারে
মুজতাহিদ ফারুকী: মার্কিন ইলেক্টোরাল কলেজের ৫৩৮ জন সদস্য আজ সোমবার বৈঠকে মিলিত হবেন। তারাই ঠিক করবেন কে আমেরিকার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হবেন। ইলেক্টোরাল কলেজের এই বৈঠক বসতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গরাজ্যে এবং ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়ায়। তবে এই বৈঠক অনেকটাই আনুষ্ঠানিকতামাত্র। কিন্তু জনগণের ভোটে হেরেও ইলেক্টোরাল কলেজের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেয়ে ডোনাল্ড জে ট্রাম্পের বিজয়ের ফলে ইলেক্টোরাল কলেজের এই বৈঠক এখন আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছে। হিলারি ক্লিনটনের প্রচারণার ক্ষতি করার লক্ষ্যে রাশিয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছে বলে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার বক্তব্যের বিষয়টি সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি করেছে। সেজন্যই এই ইলেক্টোরাল কলেজের বৈঠকে কী ঘটতে পারে তা নিয়ে আলোচনা তুলে ধরেছে নিউইয়র্ক টাইমস।
নির্বাচক কারা? : সংক্ষেপে ইলেক্টর বা নির্বাচক হলেন সেসব ব্যক্তি যাদেরকে তাদের রাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচিত করেছে প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে ভোট দেওয়ার জন্য। তারা হতে পারেন সংশ্লিষ্ট রাজ্যের রাজনৈতিক দলের প্রধান, অথবা নির্বাচিত কর্মকর্তা। অনেক সময় প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে এমন কোনো ব্যক্তিবিশেষও নির্বাচক হতে পারেন। যেমন বিল ক্লিনটন চলতি বছর নিউইয়র্ক রাজ্যের ইলেক্টর। প্রতিটি রাজ্যে ঠিক ততজনই ইলেক্টর থাকতে পারেন মার্কিন কংগ্রেস ও সিনেটে ওই রাজ্যের যতজন প্রতিনিধি রয়েছেন। তাদের মোট সংখ্যা হলো ৫৩৮ জন। এদের মধ্যে ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়া থেকে আসা তিনজন নির্বাচকও রয়েছেন।
কী ঘটতে পারে? নির্বাচকরা তাদের নিজ নিজ রাজ্যে বৈঠকে বসবেন এবং তারা দুটি করে ভোট দেবেন। একটি প্রেসিডেন্ট পদে, অন্যটি ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে। এরপর তারা ভোটের ফলাফলের ভিত্তিতে ‘সার্টিফিকেট অব ভোট’ তৈরি করবেন। এই সার্টিফিকেট অব ভোট ডাকযোগে বা কুরিয়ারযোগে ন্যাশনাল আর্কাইভে পাঠানো হবে। সেখানে এটি দেশের আনুষ্ঠানিক রেকর্ড হিসাবে সংরক্ষিত থাকবে। এটি কংগ্রেসের জন্যও দাফতরিক দলিল হিসেবে বিবেচিত হবে। নির্বাচকদেরকে কি নিজ নিজ রাজ্যে জনগণের ভোটের ফলাফলের অনুকূলে ভোট দিতেই হবে?
সেটি সব সময় অপরিহার্য নয়। অন্তত একজন নির্বাচক বলেছেন, তিনি তার দলের বিপক্ষে যাবেন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দেবেন না। সংবিধান বা কেন্দ্রীয় সরকারের এমন কোনো আইন বা বিধি নেই যা নির্বাচকদেরকে জনগণের ভোটের ফলাফলের অনুকূলে ভোট দিতে বাধ্য করতে পারে। কোনো কোনো রাজ্যে জনগণের ভোটের ফলাফলের অনুকূলে ভোট দিতে বাধ্য করার মতো আইন রয়েছে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নির্বাচকরা তাদের পার্টির প্রতি অনানুষ্ঠানিকভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকেন।
কোনো কোনো রাজ্যে এমন আইন রয়েছে যেখানে তথাকথিত ‘আস্থাহীন ভোটার’কে জরিমানা করা এমনকি অযোগ্য ঘোষণা করে তার পরিবর্তে অন্য কাউকে নির্বাচক হিসেবে নিয়োগ করা হতে পারে। পার্টির পক্ষে ভোট না দেওয়ার কারণে এখন পর্যন্ত কোনো নির্বাচককে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়নি। তবে অতীতে প্রায় সব নির্বাচকই তাদের পার্টির ফলাফলের ভিত্তিতেই ভোট দিয়েছেন। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টও কখনও কিছু বলেনি। সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস