সেমিনারে অভিমত খরচ ও একচেটিয়া ব্যাংকিংয়ে মোবাইল ফিন্যান্সিংয়ের অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে
জাফর আহমদ: মোবাইল ফোন ব্যাংকিং সুবিধা বঞ্চিত ও দরিদ্র মানুষের আর্থিক দেনদেন নাগালের মধ্যে এনে দিয়েছে। শহরাঞ্চল থেকে দুর্গম এলাকাতেও মিনিটেই টাকা পাঠানোর মত কাজ করছে মোবাইল ফিন্যান্সিং। এতে আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে এক বৈপ্লবিক পরির্তন হয়েছে। কিন্তু মোবাইলের মাধ্যমে টাকা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত খরচ ও একটি কোম্পানি ‘মোবাইল ফিন্যান্সিংয়ের’ প্রায় পুরোটা নিয়ন্ত্রণ করার কারণে মোবাইল ফিন্যান্সিংয়ের সব অর্জন ম্লান করছে।
গতকাল সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ইম্প্যাক্ট অব মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস ইন দ্যা সার্ক’ শীর্ষক সেমিনারের বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্ক ফাইন্যান্স বিভাগ আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মো. রাজি হাসানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বাকী খলিলি। সেমিনারে অর্থনীতিবিদ, বিভিন্নœ বাণিজ্যিক ব্যাংকের কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা ও দেশি-বিদেশি মোবাইল ব্যাংকিং এর বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত আছেন।
দিনব্যাপি এ সেমিনারে বাণিজ্যিক ব্যাংকের কর্মকর্তা ও অংশ গ্রহণকারীরা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের অতিরিক্ত খরচ ও বিকাশ-এর মত একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তিন-চতুর্থাংশ লেনদেন সম্পন্ন হওয়ার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। তারা আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্তৃত্ব কি সে ব্যাপারেও জানতে চান। তারা বলেন, ২৫টি বাণিজ্যিক ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক মোবাইল ফিন্যান্সিংয়ের লাইসেন্স নিলেও কাজ শুরু করেছে মাত্র ১৮টি। তার মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠান মোট লেনদেনের প্রায় তিন-চর্তুথাংশ সম্পন্ন করার বিষয়টি ‘লেবেল প্লেইং’ মাঠের অভাব বলে জানান।
জবাবে মোবাইল ফিন্যান্সিংয়ের ক্ষেত্রে সমান অধিকার বিদ্যমান বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক বাকী খলিলি। তিনি বলেন, বিকাশের ব্যবসায়িক কৌশল, ব্র্যান্ডিং, অবকাঠামো ও উন্নত নেটওয়ার্কের অন্যদের চেয়ে ভাল। তিনি বলেন, এক স্থান থেকে অন্য স্থানে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে হাতে হাতে পাঠানো বা নিজে বহন করার চেয়ে কম খরচ ও কম সময়ে লেনদেন হচ্ছে। মোবাইল ফিন্যান্সিংয়ের ক্ষেত্রে অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে খরচ কম হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। এ সব কারণেই মোবাইল ফিন্যান্সিংয়ের অধিকাংশ ব্যবসা একটি প্রতিষ্ঠান সম্পন্ন করছে।
বাকী খলিলি তার প্রবন্ধে উল্লেখ করেন, যে সব অঞ্চলের যাতায়াত সময় সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল সেখানে বেশি মোবাইল ফিন্যান্সিং হচ্ছে। বরিশালের ৪৩ শতাংশ মানুষ মোবাইল ফিন্যান্সিং করছে বলেও তিনি জানান। সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেস্টনি ও প্রণোদনা মোবাইল ফিন্যান্সিংয়ের মাধ্যমে সম্পন্ন করা উচিৎ। মোবাইল ফিন্যান্সিংয়ের মাধ্যমে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেস্টিনর সহযোগিতা দ্রুত ও প্রণোদনা অর্থবহ,কার্যকর ও অপচয়রোধ করা সম্ভব বলেও তিনি মত দেন। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম