বঙ্গোপসাগরে ‘ডেড জোন’র সন্ধান পাওয়া গেছে
পরাগ মাঝি: প্রায় সব সাগরেই কম বেশি বিপদসংকুল এলাকা রয়েছে। এদের মধ্যে বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের নামই সর্বাধিক পরিচিত। কারণ একটি বিশাল এলাকাজুড়ে রহস্যময় কারণে সেখানে নিখোঁজ হয়ে যেতো জাহাজ থেকে শুরু করে বিমানও। এ তালিকায় এবার যোগ হয়েছে বঙ্গোপসাগরের নাম। কারণ এই সাগরে প্রায় ৬০ হাজার বর্গ কিলোমিটারের এক বিশাল এলাকাকে ‘মৃত্যুপুরি’ হিসেবে ঘোষণা করেছে একটি বহুজাতিক গবেষণা।
গবেষণায় দেখা গেছে, ওই বিশাল এলাকাটিতে অক্সিজেনের পরিমাণ এত কম যে এটাকে নাই বললেও চলে।
ভারতের গোয়ায় অবস্থিত জাতীয় সমুদ্রবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত তিনটি প্রধান চিহ্নিত ডেড জোন পাওয়া গেছে। এর মধ্যে দুটি প্রশান্ত মহাসাগরে আর অন্যটি আরব সাগরে। এ তালিকায় এবার যুক্ত হয়েছে বঙ্গোপসাগরটিও। গবেষণাটিতে ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ডেনমার্ক এবং জার্মানির বিমানে অবস্থিত সামুদ্রিক জীবাণুুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটও অংশগ্রহণ করে।
গবেষণা দলটির প্রধান ওয়াজিহ নাকভি ‘ন্যাচার ইনডিয়া’কে জানান, ‘এলাকাটিতে অক্সিজেন সংকটের প্রধান কারণ প্রাকৃতিক এবং মনুষ্যসৃষ্ট দুইই। অক্সিজেন স্বল্পতা ওই এলাকায় প্রাণের অস্তিত্ব একেবারেই নিঃশেষ করে দিয়েছে।’
গবেষকরা এও দেখেছেন যে, ওই এলাকায় এমন একটি জীবচক্র গড়ে উঠেছে যা ধীরে ধীরে ওই এলাকাটিকে নাইট্রোজেন শূন্য করে দিচ্ছে। যদিও এটা ধীরগতিতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা।
ওয়াজিহ বলেন, বাকী অক্সিজেন নিঃশেষ হয়ে ওই এলাকাটি খুব দ্রুতই সমুদ্রে নাইট্রোজেন নিঃশেষ করার প্রক্রিয়ার নেতৃত্ব দেবে। আর এভাবে সমুদ্রের নাইট্রোজেন শূন্যতা তৈরি হবে। যার ফলে গুরুত্বপূর্ণ নাইট্রোজেন ভারসাম্যে প্রভাব পড়তে পারে।
ধারণা করা হচ্ছে, বৈশ্বিক উষ্ণায়নই সমুদ্রে এই ধরনের মারাত্মক ‘মৃত্যুপুরি’র সৃষ্টি করেছে। তবে, কেউ কেউ মনে করছেন সার প্রয়োগের মাধ্যমে ওই বিশাল এলাকার উৎপাদনশীলতা আবার ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এভাবে অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন নিঃশেষ হওয়াও রোধ করা সম্ভব।
দ্য স্টেটসম্যান