রাষ্ট্রপতিকে আমরা সুনির্দিষ্ট নাম দেইনি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়েছি : মির্জা ফখরুল
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপ করেছি। এই সংলাপে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। এখন এই আলোচনা সফলতা পাবে যদি রাষ্ট্রপতি আমাদের প্রস্তাবটি গ্রহণ করেন এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে সেই আলোকে একটি বাছাই কমিটি করেন। আপাতত আমরা নির্বাচন কমিশনের বিষয়টি নিয়েই ফোকাস করেছি। সরকারের সঙ্গে সংলাপ আমরা চাই। তবে এই ব্যাপারে রাষ্ট্রপতি এখনই কোনো উদ্যোগ নিবেন না। কারণ আমরা আলোচনার জন্য সবচেয়ে গুরুত্ব আরোপ করেছি নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করার জন্য। আমরা আশা করছি তিনি এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন। আমাদের অর্থনীতির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে সোমবার বিকালে তিনি এ সব কথা বলেন। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকের পর আপনারা কি মনে করছেন, তিনি আপনাদের প্রস্তাবটির আলোকে বাছাই কমিটি করতে পারেন ও পদ্ধতি গ্রহণ করতে পারেন এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি আমাদেরকে বৈঠকে বলেছেন, আমাদের প্রস্তাব তিনি বিবেচনা করবেন। তার আলোচনার জন্য সুবিধা হবে, সেই সঙ্গে তিনি বলেছেন, এ পদ্ধতি নিয়েও তিনি আলোচনা করবেন। আর আমাদের প্রস্তাবটি তার সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক হবে।
আপনারা কি মনে করছেন রাষ্ট্রপতি সব দলের সঙ্গে আলোচনার পর কমিশন গঠনের আগে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আরও একবার বসা প্রয়োজন, তিনি বলেন, এ ব্যাপারে এখনো বলা যাচ্ছে না। কারণ তিনি বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা করবেন। সবার মতামত নিবেন এরপর প্রস্তাব বিবেচনা করবেন। পরে তিনি সিদ্ধান্ত নিবেন এবং বাছাই কমিটি গঠন করবেন। তিনি যদি মনে করেন, সব দলের মতামতের ভিত্তিতে বাছাই কমিটি করবেন, এই জন্য সব দলের সঙ্গে আরও এক দফা বসবেন, সেই ক্ষেত্রে বসতে পারেন। তিনি আমাদেরকে ডাকলে আমরা অবশ্যই বসব। তবে আমরা সুনির্দিষ্ট করে আমাদের প্রস্তাব দিয়েছি।
আপনারা কি নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের জন্য কাদেরকে নিয়ে বাছাই কমিটি করা যেতে পারে এমন কোনো নাম প্রস্তাব করেছেন রাষ্ট্রপতির কাছে, মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা রাষ্ট্রপতির কাছে কোনো নাম দেইনি। তিনি কোনো নামও চাননি। এ কারণে দেওয়া হয়নি। তিনি নাম চাইলে নাম দেওয়া হতো। তবে আমরা নাম না দিলেও অত্যন্ত সুস্পষ্ট এবং সুনির্দিষ্ট করে বলেছি কাদের নিয়ে বাছাই কমিটি করতে হবে।
বাছাই কমিটির ব্যাপারে আমরা বলেছি, একটি বাছাই কমিটি করতে হবে। ওই বাছাই কমিটি যাতে গ্রহণযোগ্য হয় তাও করতে হবে। তাকে অনুরোধ করা হয়েছে, আপনি সর্বজন শ্রদ্ধেয় সৎ, নিরপেক্ষ, অভিজ্ঞ, প্রাজ্ঞ এবং নৈতিকতা ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ব্যক্তিদের নিয়ে ৫ (পাঁচ) সদস্যবিশিষ্ট একটি বাছাই কমিটি গঠন করবেন। বাছাই কমিটির প্রধান হতে হবে বাংলাদেশের অবসরপ্রাপ্ত এবং কর্মক্ষম একজন সাবেক প্রধান বিচারপতি (জ্যেষ্ঠতার ক্রমানুসারে) যিনি বিতর্কিত নন এবং অবসর গ্রহণের পর সরকারের কোনো লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত নহেন, ছিলেন না। বাছাই কমিটির সদস্য করতে হবে আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারপতি যিনি বিতর্কিত নন এবং অবসর গ্রহণের পর সরকারের কোনো লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত নহেন বা ছিলেন না। সরকারের অবসরপ্রাপ্ত সৎ এবং দল নিরপেক্ষ একজন সচিব যিনি বিতর্কিত নন এবং অবসর গ্রহণের পর সরকারের কোনো লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত নহেন বা ছিলেন না। তবে অবসরপ্রাপ্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং বিভিন্ন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন এমন কোনো কর্মকর্তা বাছাই কমিটির সদস্য হতে পারবেন না। অবসরপ্রাপ্ত সৎ এবং দল নিরপেক্ষ একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, যিনি বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ হিসেবে সুখ্যাত এবং যিনি অবসর গ্রহণের পর সরকারের কোনো লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত নহেন বা ছিলেন না অথবা দল নিরপেক্ষ সর্বজন শ্রদ্ধেয় একজন বিশিষ্ট নাগরিক। সর্বজন শ্রদ্ধেয় দল নিরপেক্ষ একজন সৎ, দক্ষ ও যোগ্য জ্যেষ্ঠ নারী।
আমরা এটাও বলেছি, নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দল অথবা স্বাধীনতার পর প্রথম জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছে এমন প্রত্যেক রাজনৈতিক দল, অনুচ্ছেদ ২-এ বর্ণিত পদ্ধতিতে, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে অনুষ্ঠিত পৃথক পৃথক বৈঠকে বাছাই কমিটির সদস্য নিয়োগের জন্য প্রতি পদের বিপরীতে ২ (দুই) জনের নাম ও পরিচয়সহ সুস্পষ্ট প্রস্তাব লিখিতভাবে পেশ করবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশনারদের যোগ্যতা কি হবে এনিয়েও বলেছি। প্রস্তাব দিয়েছি, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের যোগ্যতা হবে, সর্বজন শ্রদ্ধেয় সৎ, মেধাবী, দক্ষ, সাহসী, প্রাজ্ঞ এবং নৈতিকতা, ব্যক্তিত্ব ও কর্ম অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এবং সব বিচারে দল-নিরপেক্ষ এবং বিতর্কিত নন এমন একজন ব্যক্তি প্রধান নির্বাচন কমিশনার হবেন। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে অধিষ্ঠিত ছিলেন এমন একজন ব্যক্তি, অথবা বাংলাদেশ সরকারের একজন সচিব যিনি অবসর গ্রহণের পর সরকারের কোনো লাভজনক পদে নিয়োজিত নহেন বা ছিলেন না, অথবা একজন বিশিষ্ট নাগরিক-প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হতে পারবেন। অবসরপ্রাপ্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং বিভিন্ন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন এমন কোনো কর্মকর্তা প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে পদায়নের যোগ্য হবেন না এবং বাংলাদেশ সরকারের সচিব যিনি অবসরগ্রহণের বা পদত্যাগের বা অপসারণের পর, কিংবা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ সমাপ্তি বা চুক্তি বাতিলের পর তিন বছর সময়কাল অতিবাহিত করেননি, তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে পদায়নের যোগ্য হবেন না। অন্যান্য কমিশনারদের যোগ্যতা হতে হবে কেমন তাও বলবেন। সেখানে একজন নারীসহ সর্বজন শ্রদ্ধেয়, সৎ, মেধাবী, দক্ষ, প্রাজ্ঞ, সাহসী, নৈতিকতা, ব্যক্তিত্ব ও কর্ম অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ও সকল বিচারে দলনিরপেক্ষ এবং বিতর্কিত নহেন এমন ব্যক্তিদের মধ্যে হতে চারজন নির্বাচন কমিশনার নিযুক্ত হতে পারবেন। ন্যূনপক্ষে জেলা জজের মর্যাদা সম্পন্ন অবসরপ্রাপ্ত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা, ন্যূনপক্ষে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদমর্যাদা সম্পন্ন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা, ন্যূনপক্ষে যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী, প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন শিক্ষাবিদ এবং সর্বজন শ্রদ্ধেয় বিশিষ্ট নাগরিকদের মধ্য হতে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন। তবে যিনি প্রজাতন্ত্রের বা সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষের, বা প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগের কোনো চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ বা পদত্যাগের বা অপসারণের পর কিংবা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ সমাপ্তি বা চুক্তি বাতিলের পর, তিন বছর সময়কাল অতিবাহিত করেননি তিনি নির্বাচন কমিশনার পদে পদায়নের যোগ্য হবেন না।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে অনুষ্ঠিত পৃথক পৃথক বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য প্রতি পদের বিপরীতে ২ (দুই) জনের নাম ও পরিচয়সহ সুস্পষ্ট প্রস্তাব লিখিতভাবে পেশ করা হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসমূহ হতে প্রাপ্ত ব্যক্তিদের নাম রাষ্ট্রপতি বাছাই কমিটির নিকট প্রেরণ করবেন। বাছাই কমিটি এই সকল নাম হতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের জন্য ২ (দুই) জন এবং নির্বাচন কমিশনারের জন্য ৮ (আট) জন এভাবে মোট ১০ (দশ) জনের নাম বাছাই করবে। এই প্রক্রিয়ায় বাছাই কমিটি প্রথম প্রস্তাবিত ব্যক্তিদের বিষয়ে বিচার বিশ্লেষণ করবে এবং তাদের মধ্যে যেসব ব্যক্তির নাম সব রাজনৈতিক দলের প্রস্তাবনায় অভিন্ন রয়েছে তাদের নাম রাষ্ট্রপতির নিকট প্রেরণের জন্য চূড়ান্ত করবে। এভাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের জন্য ২ (দুই) জন এবং নির্বাচন কমিশনারের জন্য ৮ (আট) জন অভিন্ন পাওয়া না গেলে বাছাই কমিটি নিবন্ধনকৃত সকল রাজনৈতিক দল এবং অথবা স্বাধীনতার পর প্রথম জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছে এমন সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রয়োজনে বারবার আলোচনা করবে। এই প্রক্রিয়ায় কোনো রাজনৈতিক দল নতুন নাম প্রস্তাব করতে চাইলে বাছাই কমিটি ঐক্যমতে পৌঁছার স্বার্থে প্রস্তাবিত নতুন নাম গ্রহণ করবে। বাছাই কমিটি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনাক্রমে ঐক্যমতের ভিত্তিতে বাকি নাম কিংবা নামসমূহ নির্ধারণ করবে এবং রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য প্রেরণ করবে। রাষ্ট্রপতি বাছাই কমিটি কর্তৃক প্রধান নির্বাচন কমিশনারের জন্য বাছাইকৃত ২ (দুই) জনের মধ্যে হতে ১ (এক) জনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং বাছাই কমিটি কর্তৃক নির্বাচন কমিশনারের জন্য বাছাইকৃত ৮ (আট) জনের মধ্য হতে ৪ (চার) জনকে নির্বাচন কমিশনার পদে চূড়ান্ত করবেন। রাষ্ট্রপতি চূড়ান্তকৃত এই সকল ব্যক্তিদের সম্মতি গ্রহণ এবং তাদের জীবন বৃত্তান্ত ও সম্পদের বিবরণী জনসমক্ষে প্রকাশ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এবং তাদের নিয়োগ প্রদান করবেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা আমাদের চেয়ারপারসন যে প্রস্তাব এর আগে দিয়েছেন ওই প্রস্তাবনা আমরা ব্যাখ্যাও করেছি। রাষ্ট্রপতি মনোযোগ সহকারে আমাদের কথা শুনেছেন। এখন আমরা দেখার অপেক্ষায় আছি কি করেন। নাম চাইলে আমরা নাম দেব।
আমরা এও বলেছি, যদি কেউ রাষ্ট্রপতির চূড়ান্ত করা ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ সম্মত না হলে, কিংবা অন্য কোনো অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হলে বাছাই কমিটির মনোনীত অবশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্য হতে রাষ্ট্রপতি একই প্রক্রিয়া ও পদ্ধতিতে চূড়ান্ত নিয়োগ প্রদান করবেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের জন্য বাছাইকৃত ২ (দুই) জনই অসম্মতি প্রকাশ করলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মনোনয়নের জন্য একই প্রক্রিয়া ও পদ্ধতিতে নতুন করে বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। একইভাবে কমিশনার পদে মনোনীত ব্যক্তিদের মধ্যে অসম্মত ব্যক্তির সংখ্যা যদি এমন হয় যে, কমিশনার পদে বিবেচনার জন্য বাছাই কমিটি কর্তৃক মনোনীত আর কোনো ব্যক্তি অবশিষ্ট নেই, তাহলে কমিশনার পদে মনোনয়নের জন্য একই প্রক্রিয়া ও পদ্ধতিতে নতুন করে বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করা ছাড়াও নির্বাচন কমিশনকে অধিকতর শক্তিশালী করার লক্ষ্যে করণীয় ও অন্যান্য যে সব বিধি বিধান সময় উপযোগী করতে হবে সেই ব্যাপারেও প্রস্তাব দিয়ে আলোচনা করবেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা অত্যন্ত সুনির্দিষ্টভাবে প্রস্তাব দিয়েছি। আশা করি রাষ্ট্রপতি আমাদের প্রস্তাবটির ইতিবাচক বিভিন্ন দিক বিবেচনা করেই বাছাই কমিটি করবেন এবং কমিশনার নিয়োগ করবেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকতো রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আপনাদের সংলাপ সফল হওয়ার বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন, এ ব্যাপারে কিছু বলবেন কি? তিনি বলেন, এটা আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক কারণে করেছে। কারণ তারা সরকারে আছে। তারা মনে করে তারা চাইলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে আর তারা না চাইলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। তাদের চাওয়া তারা চাইতে পারেন। কিন্তু রাষ্ট্রপতি যখন মাঝখানে রয়েছেন সেখানে আমরা নিরাশ হতে চাই না।
আপনারা কি সরকারের সঙ্গে আলোচনার জন্য সুনির্দিষ্ট করে কোনো প্রস্তাব দিয়েছেন, তাকে সংলাপের প্রয়োজন ও গুরুত্বের কথা বলা হয়েছে। এখনই সরকারের সঙ্গে আমরা আলোচনার জন্য তাকে উদ্যোগ নিতে বলিনি।
নির্বাচন কমিশন নিয়ে আপনারা প্রস্তাব দিয়েছেন এখন বিএনপির পরবর্তী কাজ কি হবে এবং কি করবেন আগামী দিনের জন্য, তিনি বলেন, এখন আমরা সাংগঠনিক কাজগুলো করব। সাংগঠনিকভাবে দলকে আরও শক্তিশালী করার জন্য যা যা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার সবই করা হবে।
নারায়ণগঞ্জের নির্বাচন নিয়ে আপনারা কেমন আশাবাদী তিনি বলেন, নারায়নগঞ্জের নির্বাচন সুষ্ঠু হলে আমরা জয়ী হবো। তবে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা এটা এখনো পর্যন্ত আমরা নিশ্চিত নই।
ওই নির্বাচনে এর আগের সিটি কর্পোরেশনের ঘটনার মতো নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা নির্বাচনে শেষ পর্যন্তই থাকতে চাই। আমরা নির্বাচন সুষ্ঠু হলে সরে দাঁড়াতে চাই না। কিন্তু যেসব নির্বাচন থেকে আমরা সরে দাঁড়িয়েছি সেখানে আমাদের সরে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। কারণ বসে বসে ভোট কারচুপি দেখে পরাজিত হওয়া যায় না।
আপনারা নারায়ণগঞ্জে সেনা মোতায়েন চেয়েছিলেন, তাতো হলো না, বিজিবি থাকছে এ ব্যাপারে তিনি বলেন, আমরা সেনাবাহিনী চেয়েছিলাম। তাদেরকে দেওয়া হলে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে এ ব্যাপারে নিশ্চয়তা থাকতো। এখন আমরা নিশ্চিত না। দেখা যাক কি হয়।
আমরা আসলে মনে করি, বর্তমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায়, সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য একটি স্থায়ী ব্যবস্থা প্রণয়ন বাঞ্ছনীয়। বর্তমান বিতর্কিত নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হবে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য একটি নিরপেক্ষ, সৎ, সাহসী, দক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করার কোনো বিকল্প নেই। জনগণের ন্যায্য ও সাংবিধানিক আকাক্সক্ষা পূরণের লক্ষ্যে বিএনপি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন, নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালীকরণ এবং নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে। আমরা রাষ্ট্রপতির কাছেও এই কথা বলেছি। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম