আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আমাদের হৃদয়ে লুকিয়ে থাকা ‘গুপ্তধন’-এর সন্ধান দিয়ে বাজিমাত করে দিলেন এক অনাবাসী ভারতীয়। সান ফ্রান্সিসকোর ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজিস্ট বসন্ত বেদান্তম। তবে কি বসন্ত এল, হৃদয়ে? আনন্দবাজার
বাড়িতেই যদি লুকনো থাকে গুপ্তধন, তা হলে আর ‘গুপ্তধনে’র তল্লাশে কেনই-বা ছুটতে হবে এ তল্লাট থেকে ও তল্লাটে? ঘাম-ঝরানো ছুটোছুটির দরকার হবে না! রুদ্ধশ্বাস উৎকণ্ঠায় হন্ন্যে হয়ে ধর্না দিতে হবে না এদোরে ওদোরে! পকেট থেকে খসাতে হবে না অত রেস্তও! বুকে অত কাটাছেঁড়াও করতে হবে না। বাইরে থেকে বসানো কোনো যন্ত্র বুকে বয়ে বেড়াতে হবে না আজীবন। আমাদের হৃদয়েই লুকিয়ে রয়েছে ‘একান্ত আপন’ একটি ‘পেসমেকার কোষ’। সেই ‘ঘড়ি’টাকে বেশ ভাল করে ‘দম’ দিয়ে দেওয়া গেলে আমাদের হার্টে লুকিয়ে থাকা পেসমেকারটি দিয়ে দম ফুরনো হৃদযন্ত্রটিকে ঠিকঠাকভাবে চালিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে বাকি জীবন। বাইরে থেকে বসানো পেসমেকার যন্ত্রটির মতো সাত-আট বছরেই তা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলা শুরু করবে না। আমাদের হার্টে লুকিয়ে থাকা ওই পেসমেকারটির ‘গ্যারান্টি পিরিয়ড’ আক্ষরিক অর্থেই, হবে-‘লাইফটাইম’।
গত বছর সান ফ্রান্সিসকোর ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারতীয় বায়োটেকনোলজিস্ট বসন্ত বেদান্তম তার গবেষণায় দেখিয়েছিলেন, বায়োলজিক্যাল পেসমেকারই এক দিন হয়ে উঠবে অনিবার্য ভবিষ্যৎ। সেদিন আর বেশি দূরে নেই, যেদিন আমাদের হার্ট খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলতে শুরু করলে তাকে চাঙ্গা করে তুলতে আর বাইরে থেকে পেসমেকার যন্ত্র বসিয়ে হার্টকে ‘দম’ দেওয়ার দরকার হবে না। আমাদের হার্টে লুকিয়ে থাকা কয়েকটি কোষকে একটু বেশি সক্রিয় করে তুলতে পারলেই আর বুকে কাটাছেঁড়া করে বাইরে থেকে পেসমেকার যন্ত্র বসাতে হবে না বুকে। হার্টে লুকিয়ে থাকা ওই ‘পেসমেকার কোষ’গুলোই ‘বুড়োটে’ হয়ে পড়া হার্টকে ছুটিয়ে নিয়ে চলবে, আজীবন। একটুও বিকল না হয়ে। বিগড়ে না গিয়ে। বাইরে থেকে বসানো পেসমেকার যন্ত্রটিকে যেমন ফি-বছর ‘পরীক্ষা’য় বসতে হয় তার কার্যকারিতা প্রমাণের জন্য, আমাদের হার্টে লুকিয়ে থাকা ‘পেসমেকার কোষ’গুলোর ক্ষেত্রে সেই ‘বার্ষিক পরীক্ষায় বসার কোনো প্রয়োজনই হবে না। ওই ‘পেসমেকার কোষ’গুলোর ‘ঘড়ি’টা অনেকটাই ‘অ্যাটমিক ক্লক’-এর মতো। কয়েক কোটি বছরে যার সময়ের হেরফের হয়! গত বছর আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘ট্রেন্ডস ইন মলিকিউলার মেডিসিন’-এ প্রকাশিত তাঁর গবেষণাপত্রে এই ‘বোমা’টি ফাটিয়েছিলেন ভারতীয় বায়োটেকনোলজিস্ট বসন্ত। তার গবেষণাপত্রটির শিরোনাম ছিল- ‘নিউ অ্যাপ্রোচেস টু বায়োলজিক্যাল পেসমেকারস: লিঙ্কস্ টু সাইনোঅ্যাট্রিয়াল নোড ডেভেলপমেন্ট’। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ