মুনওয়ার আলম নির্ঝর: আব্দুল আজিজ (ছদ্ম নাম) কামরাঙ্গির চরের হাসান নগরের বাসিন্দা। গ্যাস সংকটের তীব্রতার কারণে নিয়মিত খাওয়া-দাওয়া অনেকটা ভেস্তে গেছে বলেই চলে। তবে তিনি অভিযোগ করেন কামরাঙ্গির চরে গ্যাসের সংকটটা মানব সৃষ্ট। গ্যাস সংকটের কারণ নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি আমাদের অর্থনীতিকে বলেন, কামরাঙ্গির চরে বেশ কয়েকটি এলাকায় রয়েছে বেশকিছু অবৈধ কারখানা, যারা আবাসিক অনুমতি নিলেও অতিরিক্ত গ্যাস চুরি করে ব্যবহার করছে। ফলে বিপাকে পড়ছি আমরা সাধারণ মানুষ।
সরেজমিনে কামরাঙ্গির চর ঘুরে দেখা গেছে, মুন্সিহাটি, মোহম্মদনগর, ঝাউচর, চৌরাস্তা, রসুলপুর, হাসাননগর, হুজুর পাড়া, বড়গ্রাম এলাকাসহ বেশকিছু এলাকায় প্রচুর অবৈধ কারখানা গড়ে উঠেছে। মূলত এসব এলাকার বিভিন্ন অলি-গলিতে আবাসিক বাসাগুলোতে বিনা অনুমতিতে গড়ে উঠেছে এসব কল-কারখানা। যাদের নেই কোনো অনুমতি কিংবা সঠিক কাগজ-পত্রও, এমনকি নেই কোনো নামও। এসব এলাকার যেসকল কারখানা গ্যাস চুরি করছে সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য স্টিলের চামচ, লোকাল গার্মেন্টস, স্টিলের র্যাকের কারখানা। এছাড়াও বড় বড় ভবনগুলো অনুমোদনের চেয়ে অনেক বেশি গ্যাস চুরি করে ব্যবহার করছে। এরা চুরি করে অতিরিক্ত গ্যাস ব্যবহারের জন্য নিজেরাই রাইজার বসাচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কামরাঙ্গির চরের ৫৬ নং ওয়ার্ডের কমিশনার মোহম্মদ হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে আমাদের অর্থনীতিকে বলেন, আমার এলাকায় এ ঘটনা অনেকদিন ধরে হচ্ছে। এদের অনুমতি রয়েছে চুলার কিন্তু তারা চেম্বার করে বসে আছে। আমি একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে অনেক কিছু বলতেও পারি না।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমি বেশ কয়েকবার তিতাস কর্তৃপক্ষকে জানালেও তারা কোনো ব্যাবস্থা নেননি। তাই এখন আমি চেষ্টা করছি সকলকে সচেতন করার।
এ বিষয়ে পেট্রোবাংলার সাথে কথা বললে তারা এর দায়-দায়িত্ব নিবে না জানায়. এ বিষয়ে তিতাসের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।
অভিযোগ পাওয়ার পরও কেন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি- এ বিষয়ে জানতে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির লারমাটিয়া জোনের ডিজিএম রানা আকবর হায়দাররি মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। এসময় তার অফিসের ফোনে কয়েকবার ফোন দিলে , রিং হলেও তা কেউ রিসিভ করেনি।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির এক কর্মকর্তা আমাদের আর্থনীতিকে বলেন, আমরা অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে ব্যবস্থা নিতে পারি না এটা সত্য। তবে এর বড় কারণ অভিযান পরিচালনার জন্য সবসময় ম্যাজিস্ট্রট কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পাওয়া যায় না। নিরাপত্তা ছাড়া এধরনের অভিযান চালানো বেশ ঝুঁকিপূর্ণ।
তবে কামরাঙ্গির চরের বাসিন্দারা মনে করেন, এসকল অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণ কারখানাগুলো উচ্ছেদের মাধ্যমে যথাযধ কর্তৃপক্ষ তাদের গ্যাস সংকট দূর করবে। পাশাপাশি বড় ধরনের ঝুঁকি থেকেও তারা মুক্তি চায়।