মিয়ানমার থেকে পালিয়ে ১৮০০০ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে চীনে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : এক মাসে মিয়ানমার থেকে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে চীনে। তিন হাজার রোহিঙ্গাসহ এই আশ্রয় নেওয়া লোকের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৮ হাজার। দেশটির উত্তরাঞ্চলে কাচিন ও শান রাজ্যে সশস্ত্র গ্রুপের সঙ্গে সেনাবাহিনীর লড়াইয়ের ভয়াবহতায় এসব মানুষ দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয় বিষয়ক অফিসের (ওসিএইচএ) মুখপাত্র পিয়েরে পারোন এসব কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, কাচিন ও শান রাজ্যে লড়াইরত এলাকায় ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানো খারাপ থেকে খারাপের দিকে যাচ্ছে। তিনি ইমেইলে মিয়ানমার থেকে এসব কথা বলেছেন বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে।
সোমবার আপডেট তথ্যে ওসিএইচএ বলেছে, ২০ নভেম্বর থেকে শান রাজ্যের উত্তরাঞ্চল থেকে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ শরণার্থী হয়েছে। এর বাইরে আভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে ২৪০০ মানুষ। ২০ নভেম্বর সেনাবাহিনী ও পুলিশি পোস্টের ওপর হামলা চালায় চারটি সশস্ত্র বিদ্রোহী গ্রুপের জোট। তারপর থেকেই ওই এলাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে চীনের সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্ত বাণিজ্য বিঘিœত হচ্ছে। নিজেদের ভূখন্ডের ভিতর গোলা ও বুলেট পড়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে চীন। এছাড়া রয়েছে রোহিঙ্গা সংকট। রাখাইন প্রদেশে সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার প্রায় তিন হাজার শরণার্থী ইতোমধ্যে চীন সীমান্তে আশ্রয় নিয়েছে। চীনের সঙ্গে মিয়ানমারের উত্তরের সীমান্ত পাহাড়ময়। সেখানে দীর্ঘদিন ধরে চলা এই লড়াই এখন নতুন করে তীব্র আকার ধারণ করেছে। এর ফলে যে পরিমাণ মানুষ বাস্তুচ্যুত হচ্ছে তাতে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচির শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা মারাত্মকভাবে তিগ্রস্ত হচ্ছে। সুচি তার প্রশাসন শুরু করার সময় শান্তি প্রতিষ্ঠাকে প্রধান অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন। পর্যবেকদের আশঙ্কা অং সান সুচির বেসামরিক প্রশাসন সেনাবাহিনীকে টপকে কিছু করতে সম হচ্ছে না। কারণ, সেনাবাহিনী কৌশলে রাজনৈতিক মতা আঁকড়ে রেখেছে।
বেসামরিক সরকার কি করছে তাতে তাদের পাখির চোখের মতো দৃষ্টি রয়েছে। পিয়েরে পারোন বলেছেন, কাচিন ও শান রাজ্যে লড়াইরত এলাকায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানো এখন গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন পর্যায়ে রয়েছে। ফলে হাজার হাজার মানুষের কাভে জীবন রাকারী সহায়তা পৌঁছাতে পারছে না মানবিক সংগঠনগুলো। দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে (রাখাইন রাজ্যে) দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলোর কাজে বিধিনিষেধ দেয়া হয়েছে।
সেখানে সরকারি বাহিনী শুরু করেছে ‘কিয়ারেন্স অপারেশন’। ওদিকে সেনাবাহিনী বলেছে, তারা ২০শে নভেম্বরের হামলার পর শান রাজ্যে অভিযান জোরালো করবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মিয়ানমারের এক পুলিশ কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, গত এক মাসে শান রাজ্যে কমপে ১৭০ বার সশস্ত্র গ্রুপগুলোর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে সরকারি বাহিনী। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ