যাওয়া হলো না খালেদা জিয়ার ভোট কারচুপি হলে যেকোন সময়ে সরে দাঁড়াতে পারে বিএনপি!
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী: নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খানের পে খালেদা জিয়ার নারায়ণগঞ্জে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিলো। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছিল। পরিকল্পনাও করা হয়েছিলো তিনি সমাবেশ করবেন ও প্রচারণা চালাবেন। এই জন্য নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতারা কাজও করেছিলেন। সিদ্ধান্ত ছিলো প্রচারণার শেষ দিনে তিনি নারায়ণগঞ্জে যাবেন। কিন্তু এর আগেই সেখানে নির্বাচন কমিশন থেকে বহিরাগতদের প্রচার প্রচারণার ব্যাপারে ৭২ ঘণ্টার বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।
বিএনপির সিনিয়র একজন নেতা বলেন, বিষয়টির উদ্দেশ্যে প্রণোদিত। আসলে বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে ম্যাডামের প্রচার ও প্রচারণা এবং গণসংযোগ ঠেকানোর জন্য ৭২ ঘণ্টার বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর অভিযোগ, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাসিক এলাকায় যাওয়াকে কেন্দ্র্র কওে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় বিএনপি নেতারা সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন। কোথায় থেকে শুরু কওে কোন কোন এলাকায় গণসংযোগ চালাবেন সেই ম্যাপও প্রস্তুত ছিল। হঠাৎ করে বহিরাগতদের প্রচারণার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন ৭২ ঘণ্টার সময়সীমা বেধে দেয়। আর তা দেওয়ার কারণে সেখানে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পে নির্বাচনি প্রচারে অংশ নেয়া সম্ভব হলো না।
মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, যতই সরকার ও কমিশন বিএনপির জয় ঠেকানোর চেষ্টা করুক না কেন, নারায়ণগঞ্জের নির্বাচন সুষ্ঠু হলে আমরা জয়ী হবো। তবে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা এটা এখনও পর্যন্ত আমরা নিশ্চিত নই। নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ওই নির্বাচনে এর আগের সিটি করপোরেশনের ঘটনার মতো নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা নির্বাচনে শেষ পর্যন্তই থাকতে চাই। যেসব নির্বাচন থেকে আমরা সরে দাঁড়িয়েছি সেখানে আমাদের সরে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। কারণ বসে বসে ভোট কারচুপি দেখে পরাজিত হওয়া যায় না।
বিএনপির সূত্র জানায়, এখনও পর্যন্ত যা যা হচ্ছে তাতে ভোট কারচুপির আশঙ্কা রয়েছে। সেই সঙ্গে সরকার ও তাদের দলের নেতাকর্মীরা জয় পেতে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটানোর চেষ্টা করবে। কমিশন এই ব্যাপারে সহায়তা না করলে তারা সফল হবে না। নারায়ণগঞ্জে যদি ঢাকা ও চট্টগ্রামের সিটি করপোরেশনের পুনরাবৃত্তি ঘটে তাহলে শেষ পর্যন্ত সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত আসতে পারে দলের শীর্ষ মহল থেকে। এই ব্যাপারে আগাম কোনো কিছুই বলা যাবে না।
মহাসচিব বলেন, আমরা সেনাবাহিনী চেয়েছিলাম। তাদেরকে দেওয়া হলে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে এই ব্যাপারে নিশ্চয়তা থাকতো। এখন আমরা নিশ্চিত না। দেখা যাক কি হয়।
রিজভী আহমেদ বলেন, নির্বাচনি প্রচারণায় খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণের কথা জেনেই ৭২ ঘণ্টার বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এর আগের নির্বাচনে ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে বাইরে থেকে যাওয়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নির্বাচনি এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হতো।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন অবাধ ও নিরপে হলে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবে।
নির্বাচন কমিশনের কমিশনার আব্দুল মোবারক বলেছেন, আমরা এর আগের সব নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করেছি। এবারও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করবো। বিএনপি তাদের মতো করে সব সময় বলে এসেছে। এখনও বলছে। নতুন কিছুতো নয়। যে দল যে অভিযোগ করুক না কেন আমরা নির্বাচন সুষ্ঠু করবো। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম