রোহিঙ্গা ইস্যুতে ইন্দোনেশিয়া মিয়ানমারকে কত চাপে রাখতে পারবে?
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বাংলাদেশে একদিনের সফর শেষে দেশে ফিরে গেছেন ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেটনো এলপি মারসুদি। মঙ্গলবার রাতেই তিনি ঢাকা ছেড়েছেন। মঙ্গলবার তিনি কক্সবাজারের উখিয়ায় গিয়ে সদ্য পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। মারসুদি হচ্ছেন প্রথম কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রী যিনি মিয়ানমারের সাম্প্রতিক সহিংসতার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছেন এবং পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তার সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী। দি রিপোর্ট
বিবিসির খবরে বলা হয়, রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আসিয়ান জোটভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে বৈঠকের পর ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে এলেন। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ ইন্দোনেশিয়া যে ভূমিকা রাখতে চাইছে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর সেটিই নির্দেশ করে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, ইন্দোনেশিয়ার সে চেষ্টা কতটা ফল দেবে? ইন্দোনেশিয়ায় বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত নাসিম ফেরদৌস মনে করেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের প্রভাবশালী দেশ ইন্দোনেশিয়া। সেজন্য তাদের এ উদ্যোগ ইতিবাচক। কিন্তু রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার এ ভূমিকা রাখার চেষ্টা খানিকটা ‘আশ্চর্যজনক’ মনে হচ্ছে সাবেক এ কূটনীতিকের কাছে।
নাসিম ফেরদৌস বলেন, ‘ইন্দোনেশিয়া প্রধান উদ্যোগী হয়ে মিয়ানমারকে আসিয়ানের মেম্বার (সদস্য) করেছিল ২০০৫ সালে। তখন থাইল্যান্ড আপত্তি জানিয়েছিল এবং রোহিঙ্গা বিষয়ের উপর তারা জোর দিয়েছিল। কিন্তু সে সময় ইন্দোনেশিয়া মিয়ানমারের পক্ষে ভোট দিয়েছে।’ কিন্তু এতো বছর পরে এসে ইন্দোনেশিয়া রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে ভিন্নভাবে চিন্তা করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
নাসিম ফেরদৌস মনে করেন, আসিয়ান জোটভুক্ত দেশ হিসেবে ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়া রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। কারণ আসিয়ানের মধ্যে ইন্দোনেশিয়া হচ্ছে সবচেয়ে ‘শক্তিমান’ দেশ। সাবেক এ কূটনীতিক বলছেন, আসিয়ান দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে সিঙ্গাপুর এগিয়ে থাকলেও রাজনৈতিকভাবে সব সদস্য দেশ ইন্দোনেশিয়াকে সমীহ করে চলে।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের জন্য ইন্দোনেশিয়া তাদের এ উদ্যোগকে যদি শেষ পর্যন্ত চালিয়ে নেয় তাহলে সেটি হয়তো ‘ভালো ফলাফল’ দিতে পারে বলে নাসিম ফেরদৌস উল্লেখ করেন। রোহিঙ্গা ইস্যু বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করছে। বার্মার রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর কোন দমন-পীড়ন হলে হাজার-হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ