২৬ হাজার কোটি টাকায় একনেক বৈঠকে ১৫ প্রকল্প অনুমোদন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬৫ হাজার নতুন শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ
সাইদ রিপন: চাহিদা ভিত্তিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬৫ হাজার নতুন শ্রেণিক নির্মাণসহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি ও স্যানিটেশন প্রদানের পাশাপাশি অবকাঠামোগত উন্নয়নে দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। চলতি অর্থবছরের এটি ছিল ১৪তম একনেক বৈঠক। ২০১৬ সালের সর্বশেষ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) এই বৈঠকে ২৬ হাজার ৪১০ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৫টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ২২ হাজার ৭৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৩৮৪ কোটি ৬৪ লাখ এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৩ হাজার ৯৪৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা। গতকাল রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক বৈঠকে প্রকল্পগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা।
সভাশেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা সচিব তারিক-উল-ইসলাম এবং সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. শামসুল আলম। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সরকার সম্প্রতি ২৬ হাজার ২০০টি রেজিস্ট্রার্ড ও কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেছে। এ নিয়ে দেশে বর্তমানে মোট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৩ হাজার ৮৭২। এতে যে পরিমাণ শ্রেণিক রয়েছে, তাতে বিপুল পরিমাণ শিার্থীর চাপ সামলাতে পারছে না। শ্রেণিকরে এই সংকট মেটাতে দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, এসডিজির ৪ নং লক্ষ্য মানসম্মত শিক্ষার পূরণে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। কেননা ভিত্তি মজবুত হলে ভবিষ্যৎ ভাল হবে। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছেলে মেয়েদের জন্য আলাদা টয়লেট হবে। এসব টয়লেট পুরুষ এবং নারী শিক্ষকরাও ব্যবহার করবেন। দেশের যে সব জায়গায় বেইলি সেতু রয়েছে, সেগুলো স্থায়ী কংক্রিটের সেতু দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হবে।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে, চাহিদা ভিত্তিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ হাজার ১২৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। চাহিদাভিত্তিক নতুন জাতীয়করণকৃত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৭৪০ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। সদর দফতর ও জেলা কার্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর শক্তিশালীকরণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৮৩ কোটি ১২ লাখ টাকা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, এর প্রাক্কলিত ব্যয়ের পরিমাণ ৩৬৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর নির্মাণ প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭৬ কোটি টাকা। রাজশাহী হাইটেক পার্ক স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ২৩৮ কোটি ২৫ লাখ টাকা। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য হোস্টেল নির্মাণ ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের জন্য ব্যয় হবে ৬০ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। চিটাগং সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্প, এর ব্যয় হচ্ছে ২ হাজার ৪২৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা। ৩৭ জেলা শহরে পানি সরবরাহ প্রকল্প (২য় সংশোধিত), এর ব্যয় ৮৯৯ কোটি টাকা। এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান এর বহি:সীমানা দিয়ে লোপরোড নির্মাণসহ ঢাকা ট্রাঙ্ক রোড হতে বায়েজীদ বোস্তামি পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২০ কোটি ৪ লাখ টাকা। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত প্রধান প্রধান ১১টি ছড়ার পার্শ্বে আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ প্রকল্প, এর ব্যয় হচ্ছে ২৩৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা। মুন্সীগঞ্জ সড়ক বিভাগের অধীন ঝুঁকিপূর্ণ সেতুসমূহ স্থায়ী কংক্রিট সেতু দ্বারা প্রতিস্থাপন প্রকল্প, এর ব্যয় হচ্ছে ১৪৭ কোটি ৮২ লাখ টাকা। গুচ্ছগ্রাম ২য় পর্যায় প্রকল্পে ব্যয় হবে ৯৪১ কোটি ৮১ লাখ টাকা। জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অবকাঠামো উন্নয়ন (৩য় পর্যায়) প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৯৯৯ কোটি ৪৯ লাখ টাকা এবং খুলনা ৩৩০ মেগাওয়াট ডুয়েল ফুয়েল কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, এর জন্য ব্যয় হবে ৩ হাজার ২৫৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।