মুসলিমরা বড়দিনের উৎসব পালন করলে ৫ বছরের সাজা : ব্রুনাইয়ের সুলতান
কামরুল আহসান: ব্রুনাইয়ের সুলতান হাসানাল বলকিয়া ঘোষাণা দিয়েছেন, ব্রুনাইয়ের কোনো মুসলিম যদি আসন্ন বড়দিনের উৎসবে অংশ নেয় তাদের ৫ বছরের কারা ভোগ করতে হবে। এমনকি, তারা যদি বড়দিনের কোনো গান গায় বা বড়দিনের কোনো ছবি ফেসবুকে আপলোড করে তাও এই শাস্তি বলবৎ থাকবে।
ব্রুনাইয়ের খ্রিস্টানদেরও তিনি হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন তারা যেন গোপনে নিজেদের মধ্যেই উৎসব পালন করে। কোনো মুসলিমকে যেন তাদের অনুষ্ঠানে প্রবেশ করতে না দেয়। তাহলে তাদেরও সমপরিমাণ শাস্তি হতে পারে। এটা তিনি করছেন মুসলিমদের ধর্ম যেন দুর্বল না হয়ে পড়ে সেই জন্য। সম্প্রতি ব্রুনাই বুলেটিন পত্রিকায় তিনি এই শরিয়া আইনের ঘোষণা দিয়েছেন।
এর আগে থেকেই ব্রুনাইয়ের মুসলিম অধিবাসীদের জন্য শরিয়া আইন খুব কঠোর। সে দেশের কোনো মুসলমান যদি সমকামী হয় বা পায়ুকামী হয় তাহলে তাদের জন্য ফাঁসি নির্ধারিত। ধর্ষণ ও মদ্যপানেরও একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ- এমনকি ব্রুনাইয়ে প্রকাশ্যে সিগারেট খাওয়াও নিষিদ্ধ।
ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়ার মাঝখানে দক্ষিণ চীন সাগরের ছোট্ট এক দ্বীপরাষ্ট্র ব্রুনাই। ৪২ লাখ অধিবাসীর এক তৃতীয়াংশই অমুসলিম। যারা বিভিন্ন দেশ থেকে আগত তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ, খনিজ কারখানাসহ বিভিন্ন অফিস আদালতে কর্মরত। এদের মধ্যে আছে ৩০ হাজার আদিবাসী চীনা- ব্রুনাই এবং রোমান ক্যাথলিক খ্রিস্টানসহ অনেক উপমহাদেশিয় বৌদ্ধ অধিবাসী। কঠোর শরিয়া আইন প্রয়োগের প্রতি নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংগঠন সে দেশের বসবাসরত অমুলিমদের সতর্ক করে দিয়ে সাবধানে থাকতে বলেছে।
ব্রুনাইয়ের সুলতান দেশটির একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী। তার কথাই দেশটির আইন হিসেবে বিবেচিত হয়। তিনি দেশে কোনো মুসলমান তো বটেই, কোনো অমুসলিমদের জন্যও কুরআন ও ইসলাম ধর্ম নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ- রেখেছেন।
সুলতান হাসানাল ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে কঠোর হলেও নিজে যাপন করেন খুব বিলাসবহুল জীবন। তাকে ও তার ভাই প্রিন্স জেফরিকে বলা হয় ‘প্লে বয়’। সুন্দরী নারীদের নিভৃতে ভোগ করার জন্য তাদের আছে মনোরম হেরেমখানা ও একটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল ইয়েট।
সুলতান বলকিয়া যে রাজপ্রাসাদে বাস করেন সেখানে ১ হাজার ৭৮৮টি রুম, ১১০টি গাড়ির গ্যারেজ, ২০০টি রাজকীয় ঘোড়া, পাঁচটি সুইমিং পুল আর ৩৫০টি বাথরুম। বাথরুমসহ পুরো বাড়িটিই প্রায় সোনা দিয়ে মোড়া।
সূত্র: ডেইলি মেইল