মান্নাকে দেখতে গেলেন ওবায়দুল কাদের ‘রাজনীতির বাইরেও একটা সম্পর্ক থাকে’
রিকু আমির: সদ্য কারামুক্ত নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাকে দেখতে গেলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের ৩০২ নম্বর কেবিনে অবস্থানরত মান্নাকে দেখতে যান তিনি। একজন সিনিয়র সাংবাদিকের কাছ থেকে জানা গেছে, মাহমুদুর রহমান মান্না যে এবার সত্যি সত্যিই বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে জামিন পেতে যাচ্ছেন, তা প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে সর্বপ্রথম ও সরাসরি জানতে পারেন ওবায়দুল কাদেরই। শুক্রবার মান্নাকে যখন ওবায়দুল কাদের দেখতে যান, তখন নাগরিক ঐক্যের উপস্থিত একজন নেতা নাম না প্রকাশের শর্তে দৈনিক আমাদের অর্থনীতিকে জানান, এসময় হাস্যোজ্জ্বল মুখে ওবায়দুল কাদেরকে দেখে সবাই হচকিত হয়ে দাঁড়িয়ে যান। ওবায়দুল কাদের মান্নাকে বলতে থাকেন, আমি তো ফুলটুল আনিনি।
মান্নার কেবিনে থাকা একটি ফুলের তোড়া তিনি হাতে নেন এবং তা মান্নার হাতে দেন। এসময় বেশ আনন্দঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয় সেখানে। ওবায়দুল কাদেরকে নাগরিক ঐক্যের নেতাকর্মীরা মান্নার জন্য রাখা চিনিমুক্ত রং চা থেকে এক কাপ রং চা ও আপেল দিয়ে আপ্যায়ন করেন।
সূত্র আরও জানায়, চা ও আপেল খেতে খেতে ওবায়দুল কাদের ও মান্না অতীতের বহু ঘটনা নিয়ে খোশগল্পে মেতে উঠেন। ওবায়দুল কাদের মান্নার সার্বিক খোঁজ খবরও নেন। বিএসএমএমইউর উপাচার্য কামরুল হাসানকে ফোন করে মান্নার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানান কাদের।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দীর্ঘদিন আমরা একসঙ্গে রাজনীতি করেছি। রাজনীতির বাইরেও একটা সম্পর্ক থাকে। গতকালই আসতে চেয়েছি, নির্বাচনের কারণে পারিনি। আজকে প্রোগ্রাম ছিল, শেষ করে চলে এসেছি।
বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকা ও একজন অজ্ঞাত ব্যক্তির সঙ্গে ফোনালাপের জেরে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে গ্রেফতার করা হয় মান্নাকে। এরপর তাকে রাষ্ট্রদ্রোহী ও সেনাউস্কানির মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। দীর্ঘ কারাবাসের পর গত ১৮ ডিসেম্বর পাসপোর্ট জমা রাখার শর্তে জামিনে মুক্তি লাভ করেন মান্না। গত বুধবার বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। সম্পাদনা: সুমন ইসলামআশুলিয়ায় তৃতীয় দিনেও ৫৯ পোশাক কারখানা বন্ধ, বিপাকে মালিক ও শ্রমিক
আমিনুল ইসলাম, আশুলিয়া: আশুলিয়ায় টানা তৃতীয় দিনের মত ৫৯ টি তৈরি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকায় সময়মত বায়ারদের কাজের শিপমেন্ট না দেওয়ায় বিপাকে পড়েছে কারখানার মালিকরা। এর আগে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হওয়ার আগে ওই পোশাক কারখানাগুলোতে টানা দশ দিন উৎপাদন বন্ধ রেখে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ পালন করেন প্রায় এক লাখ শ্রমিক।
আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার ডীকে নীটওয়্যার লিমিটেড কারখানার পরিচালক সৈয়দ এটিএম তারেক সাংবাদিকদের বলেন, আশুলিয়ায় বিভিন্ন ইস্যুতে অব্যাহত শ্রমিক আন্দোলনের মুখে গত বুধবার হঠাৎ করে তাদের কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হওয়ায় উৎপাদন না থাকায় তারা বিদেশী বায়ারদের শিফমেন্টের তৈরি করা পোশাক দিতে পারছে না। এমন অবস্থায় কারখানা বন্ধ থাকায় বায়াররা তাদের অর্ডার দিতেও চাইছে না। কারখানা বন্ধ থাকায় তারা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এমন অবস্থায় শিল্পাঞ্চলে ছোট ও মাঝারি কারখানার মালিকরা ব্যবসা বন্ধ করে দিয়ে গুটিয়ে নেওয়ার কথা ভাবছেন। এতে চাকরি হারাবে অনেক শ্রমিক।
তিনি আরও বলেন বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় বিদেশি ক্রেতারা বাংলাদেশের পোশাক কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়লেও এই আন্দোলনের কারণে এবার এই চিত্র পাল্টে যেতে পারে।
উল্লেখ্য, বেতন ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে গত কয়েক দিনের শ্রমিক আন্দোলনের মুখে সাভারের আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকার ৫৯ টি তৈরি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয় বিজিএমইএ। পরে শ্রমিক আন্দোলন ঠেকাতে বন্ধ কারখানাগুলোর সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে সরকার। আশুলিয়ায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখবে ১৫ প্লাটুন বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি মোতায়েন করা হয়। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম