সৈয়দপুরে ঝুট কাপড়ের তৈরি পোশাক যাচ্ছে ভারত, নেপাল ও ভুটানে
মো. জাকির হোসেন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) : নীলফামারীর বাণিজ্যিক শহর সৈয়দপুরে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে বিপ্লব ঘটেছে। এরমধ্যে সবচেয়ে সাফল্য অর্জন করেছে ঝুট কাপড়ের ক্ষুদ্র গার্মেন্ট শিল্প। উদ্যোক্তাদের মেধা, শ্রম ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় এসব গার্মেন্টের তৈরি পোশাক এখন ভারত, নেপাল ও ভুটানে যাচ্ছে।
সূত্র জানায়, স্বল্প সুদের ঋণ সুবিধা ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে নীলফামারীর সৈয়দপুরে গড়ে তোলেন ক্ষুদ্র গার্মেন্টস শিল্প। এখানে ৩৫টি রফতানিমুখী গার্মেন্ট শিল্পে বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। বেড়েছে উৎপাদনও। এতে করে রফতানি বেড়েছে প্রায় দ্বিগুন। ঋণ সুবিধা গ্রহণের আগে গেল বছর সৈয়দপুর থেকে প্রতিবেশী দেশ ভারত, নেপাল ও ভুটানে প্রতিমাসে যেখানে দেড় লাখ মার্কিন ডলারের পোশাক রফতানি হতো। বর্তমানে তা বেড়ে সাড়ে ৩ লাখ ডলার ছাড়িয়ে গেছে।
উদ্যোক্তারা জানান, ঋণের অর্থ বাড়ানোর পাশাপাশি গার্মেন্ট শিল্পের জন্য সরকারিভাবে স্থায়ী জমি বরাদ্দ দেওয়া হলে বিকাশমান এই শিল্পের আরও দ্রুত প্রসার ঘটবে। উৎপাদিত পণ্যের নতুন বাজার সৃষ্টিতে সরকারি- বেসরকারি সহযোগিতা কামনা করেছেন।
রাজধানী ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের বড় বড় গার্মেন্ট এর পরিত্যক্ত কাপড় (ঝুট) সংগ্রহের পর তা থেকে বিভিন্ন ডিজাইনের জ্যাকেট, মোবাইল প্যান্ট, থ্রি-কোয়ার্টার প্যান্ট ও ট্রাউজার তৈরি করা হয় সৈয়দপুরের কারখানাগুলোতে। প্রায় ১৭ বছর আগে আব্দুল মালেক নামে এক কাপড় ব্যবসায়ী প্রথম এই কারখানা গড়ে তোলেন। পরে তার দেখাদেখি অন্যরাও এ ধরনের কারখানা গড়ে তোলেন। ফলে বাণিজ্যিক শহর সৈয়দপুরে প্রায় ২ হাজারের মতো এসব কারখানা গড়ে উঠেছে।
ক্ষুদ্র গার্মেন্ট কারখানা মালিক মতিয়ার রহমান জানান, ঝুট কাপড়ে তৈরি পোশাকের কারখানাগুলো বেশির ভাগ বাসা ও ভাড়া বাড়িতে চলছে। এসব কারখানায় প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক দিনরাত কাজ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তিনি বলেন, ক্ষুদ্র গার্মেন্ট মালিক সমিতির আওতাধীন কারখানার সংখ্যা ৪২টি। এর মধ্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ৩৫টি প্রতিষ্ঠান ঋণ সুবিধা পেয়েছে।
সূত্র মতে, প্রতিমণ ঝুট প্রকারভেদে ৩ হাজার ৫শ’ থেকে ৭ হাজার টাকায় কেনার পর তা থেকে ২০ হাজার টাকার নানা ধরণের পোশাক তৈরি হয়। দেশের বাইরে ভারতের আসাম রাজ্যে এসব পোশাকের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এরপর ভুটান ও নেপালেও এর কদর রয়েছে। ফলে এসব পোশাক রফতানি করে এখানকার ঝুট কাপড়ের ব্যবসায়ীরা প্রচুর মুনাফা করছেন। অপরদিকে সরকারি রাজস্বও আদায় হচ্ছে।
সৈয়দপুরের বাণিজ্যিক শহরে প্রায় ২৪টি ব্যাংকের শাখা রয়েছে। এসব ব্যাংক সহজ শর্তে ঋন প্রদানের পাশাপাশি প্রশিক্ষণ প্রদান করলে ক্ষুদ্র গার্মেন্ট মালিকরা উপকৃত হবে এবং এর সম্প্রসারণ আরও ঘটবে বলে আশা করেন সংশ্লিষ্টরা।সম্পাদনা : তারেক