রাশিদ রিয়াজ: সিন্ধু জলচুক্তি বাতিল না করেই কীভাবে পাকিস্তানে ভারত অভিন্ন নদীর জল কম পাঠাতে পারবে, সেই পরিকল্পনা আঁটছে দেশটি। গত শুক্রবার এ ধরনের পরিকল্পনা প্রণয়নে উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠক হয়। সিন্ধু, ঝিলম ও চেনাব নদীর জল ভারতের মাটিতেই সঞ্চয় করতে অবকাঠামো নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে নয়াদিল্লি। এ নিয়ে ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব নৃপেন্দ্র মিশ্র। কাশ্মীর ও পাঞ্জাবের মুখ্যসচিবরাও উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে। মুখ্য সচিবরা ছাড়াও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, বিদেশ সচিব এস জয়শঙ্কর, অর্থসচিব অশোক লাভাসা এবং জলসম্পদ সচিব শশি শেখর।
আগেই জম্মু-কাশ্মীরে একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, প্রস্তাবিত জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জল সঞ্চয়ের ক্ষমতা ও কতদিনের মধ্যে কাজ সম্পূর্ণ করা সম্ভব হবে, সে বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা প্রাধান্য পায়। এই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে পশ্চিম ভারতের তিন নদী সিন্ধু, ঝিলম ও চেনাব নদীর জলের একটা বড় অংশকে পাকিস্তানে প্রবাহিত হওয়া থেকে আটকে ফেলা যাবে। কিছুদিন আগেই পাঞ্জাবে দাঁড়িয়ে ভারতের নদীর এক ফোঁটা জলও পাকিস্তানে পাঠানো হবে না বলে হুমকি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
১৯৬০ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সই হওয়া সিন্ধু জলচুক্তি অনুযায়ী, দেশটির পশ্চিমদিকের নদীগুলোর জল পাকিস্তানে বইতে দিতে হবে। তবে ৩ দশমিক ৬ মিলিয়ন একর ফুট ক্ষমতাসম্পন্ন জলাধার নির্মাণের ছাড়পত্রও ভারতকে দেওয়া আছে চুক্তিতে। চুক্তির এই অংশটিকেই এখন কাজে লাগাতে চাইছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এতদিন এই জলাধার নির্মাণ না করলেও, এবার এই কাজে গতি আনতে চায় ভারত। এমনকি চুক্তি অনুযায়ী, যতটা জল এ দেশের পাওয়ার কথা, তার পুরোটাই ভারত ব্যবহার করে না। এবার নিজেদের ভাগের পুরো জলটাই ব্যবহার করতে চায় নয়াদিল্লি। এ বিষয়ে পরবর্তী বৈঠক জানুয়ারি মাসে হবে। তবে গত শুক্রবারের বৈঠক শেষে এ সম্পর্কে এক বড় কর্তা বলেন, বল গড়াতে শুরু করেছে। খুব শিগগিরই ফলও দেখতে পাওয়া যাবে। পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের অভিন্ন নদীতে অবকাঠামো নির্মাণ করে জল আটকানো শিগগিরই শুরু হবে। সিন্ধু, ঝিলম ও চেনাব নদীর পানি দিয়ে ১৪ লাখ একর কৃষিজমিতে সেচ দেওয়া সম্ভব হলেও দেওয়া হচ্ছে ৮ লাখ একর। এছাড়া ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে এসব নদী থেকে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ৩ হাজার মেগাওয়াট কিন্তু শুধু সিন্ধু নদী থেকেই ১৯ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া, ডন। সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী