মৌসুমের শুরুতেই আলুর দাম কম, বিঘাপ্রতি লোকসান ১০ হাজার টাকা
সফিউল আলম সফি, আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) : জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের হাট ও বাজারগুলোতে মৌসুমের শুরুতেই আলুর দাম কম। এক মণ আলুর দামে ১ কেজি মাংস। কথিত বীজ ব্যবসায়ী ও দাদন ব্যবসায়ীদের চাপের বোঝা আলুচাষীদের মাথায়।
গত বছরের লোকশানের বোঝা মাথায় নিয়ে লাভের আশায় এবার জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার আলু চাষিরা আগাম জাতের আলুর চাষ করেছিলেন প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে। আগাম জাতের আলু উত্তোলন পুরো দমে শুরু করেছন কৃষক। কথিত ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কেনা বীজ ছিল অত্যন্ত নি¤œমানের। নি¤œমানের বীজের জন্য এক দিকে উৎপাদন কম। অপর দিকে বাজারে আলুর বাজার নি¤œমুখী। উভয় সঙ্কটে বিপাাকে পড়েছেন আলু চাষীরা।
কৃষকরা জানান, প্রতিবিঘায় আলু চাষ করতে তাদের খরচ পড়েছে ২২ হাজার টাকা থেকে ২৫ হাজার টাকা। প্রতিবিঘায় আলু উৎপাদন হচ্ছে ২৮ থেকে ৩৫ মণ পর্যন্ত। পাইকারী বাজারে প্রতিমণ আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ টাকা থেকে ৪শ টাকায়। উৎপাদিত আলুর বিক্রি মূল্য পাচ্ছেন প্রায় ১৪ হাজার টাকা।প্রতিবিঘায় লোকশান গুনতে হচ্ছে ৮ হাজার থেকে /১১ হাজার টাকা পর্যন্ত।
উপজেলার হাট ও বাজারগুলোাতে গিয়ে আলু চাষীদের সাথে আলাপ করলে তারা আক্ষেপ করে বলেন, এক কেজি মাংসের দাম ৫শ টাকা। এক কেজি মাংস কিনতে গেলে আলু বিক্রি করতে হবে ১ মণ। ১ মণ আলু উৎপাদন ব্যয় হয়েছে সোয়া ৬শ টাকা থেকে সাড়ে ৬শ টাকা। আউয়ালগাড়ি গ্রামের আলু চাষি জয়নাল আবেদ্বীন, আলম শেখ, সাত্তার, দুলাল হোসেন, রাজকান্দা গ্রামের আমজাদ হোসেন, শান্তা গ্রামের আবুল হোনেস, বেলাল সরদার,মুক্তার হোসেন সরদার, আতাউর রহমানসহ অগণিত আলুচাষি। তারা আরো আক্ষেপ করে উপরোক্ত কথাগুলো জানালেন। এ ছাড়া তারা আরো জানান, অনেক আলু চাষি বাকিতে বেশি দামে মৌসুমী আলু বীজ ব্যবসায়ীদের সুন্দর সুন্দর কথার ফাঁদে পড়ে দাদনের ভিত্তিতে অর্থাৎ বাজার দরের চেয়ে প্রতি বস্তায় অতিরিক্ত ৪শ টাকা থেকে ৫শ টাকা বেশিতে আলু বিক্রীর পর পরিশোধের অঙ্গীকারে গ্রহণ যোগ্য ব্যক্তির জিম্মায় বীজ কিনেছেন। সম্পাদনা : তারেক
কথিত বীজ ব্যবসায়ীরা চাষীদের নি¤œ মানের বীজ সরবরাহ করে প্রতারিত করেছেন। এ জন্য আলু রোপনের পুর্বে বীজে পচন, আলুর গাছ কম গজানো, গজানো গাছ রোগাক্রান্ত ও অপরিপুষ্ট হওয়াই সব দিক দিয়ে আলু চাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে দাবী করেছেন আগাম আলুচাষীরা ।
চাষীরা কথিত বীজ ব্যবসায়ীদের দাদনের পাওনা টাকা (বাঁকির) পরিশোধে ব্যর্থ হচ্ছেন। বহু কষ্টে আলু চাষ করে উৎপাদন খরচ ওঠাতে না পেরে এক দিকে লোকশানের বোঝা অপর দিকে দাদন ব্যবসায়ীদের দাপটে অনেক চাষীরা পড়েছেন বিপাকে। এবার আলুচাষ করে দাদনের(বাঁকি) টাকা পরিশোধ করতে বাড়ির অন্যান্য সামগ্রি বিক্রী করা ছাড়া অন্যকোন পথ আলুচাষিদের নাই।
কৃষকদের এ সমস্যা সমাধানে সরকারের পরিচালিত উপজেলার সকল কৃষক সমবায় সমিতি গুলোকে প্রকৃতপক্ষে কৃষকদের কল্যাণে কাজ করে কৃষকদের উৎপাদিত সকল পুর্ণ বিভিন্ন দেশে রফতানি সেই সাথে সংরক্ষনাগারের ব্যবস্থা গ্রহন করা হলে কৃষকরা উৎপাদিত ফসলের সঠিক বাজার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবেন না। এমনটাই মনে করেন কৃষি পরামর্শকরা। তারা আরো বলেন এ বিষয়ে সরকার আশু কৃষকদের ক্ষতিপুরণে সঠিক পদক্ষেপ নেবেন এমনটায় আশা কৃষি সংশ্লিষ্টদের।