আশুলিয়ায় পোশাক কারখানাগুলোতে শ্রমিক ছাঁটাই অব্যাহত
আমিনুল ইসলাম, আশুলিয়া: শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় শ্রমিক অসন্তোষের জেরে পোশাক কারখানাগুলোতে প্রতিদিনই শ্রমিক ছাঁটাই অব্যাহত রয়েছে এবং এর পাশাপাশি সাধারণ শ্রমিক, শ্রমিক নেতা ও সাংবাদিকসহ অনেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এর মধ্যে আটকদের ৩০ জনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর নির্দেশে বন্ধ রয়েছে প্রায় ৫৯ কারখানা।
পোশাক কারখানা কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে প্রায় ৫ শতাধিক শ্রমিককে ২৩(৪) ধারায় সাময়িক বরখাস্তের নোটিস কারখানাগুলোর প্রধান ফটকে সাঁটিয়ে দিয়েছে। ফলে কর্মচঞ্চল শিল্পাঞ্চল আশুলিয়া নিস্তব্ধ হয়ে পড়েছে। গতকাল রোববার সকালে বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি এ কে আজাদের মালিকানাধীন হামীম গ্রুপের দ্য স্পোর্টস ওয়্যার লি., প্রিন্টিং এমব্রয়ডারি অ্যাপারেলস লি., রিফাত গার্মেন্টস লি., এক্সপ্রেস ওয়াশিং অ্যান্ড ডায়িং লিমিটেড নামক পোশাক কারখানার ৯৬ শ্রমিককে সাময়িক বরখাস্তের নোটিস প্রধান ফটকে সাঁটিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া বেরন এলাকার সেড ফ্যাশন ও দি রোজ ড্রেসেস লি. কারখানায় সাময়িক বরখাস্তের নোটিস সাঁটিয়েছে বলেও শ্রমিকরা জানায়।
এদিকে শ্রমিক অসন্তোষের জেরে বিজিএমইএর নির্দেশে আশুলিয়ার ৫৯ পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে। এ মাসের ১২ ডিসেম্বর থেকে আশুলিয়ার বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বেতন বৃদ্ধিসহ কয়েক দফা দাবিতে কারখানার উৎপাদন বন্ধ রেখে কর্মবিরতি, অভ্যন্তরে বিক্ষোভ, ভাঙচুর, সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিল দাবি আদায়ের লক্ষ্যে একটানা কর্মসূচি অব্যাহতভাবে পালন করতে থাকলে মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ২১ ডিসেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানাগুলো বন্ধের ঘোষণা দেয়। এ ঘোষণা বাস্তবায়নে পুলিশের ব্যাপক তৎপরতা রয়েছে। কারখানাগুলোর গেটে কড়া নিরাপত্তা বলয়সহ অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে র্যাব, পুলিশ, গোয়েন্দা বিভাগ ও বিজিবি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
গতকাল রোববার সকালে বেরন এলাকার ডিজাইনার জিন্স নামে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে এলে কর্তৃপক্ষ তাদের কারখানা অভ্যন্তরে প্রবেশের অনুমতি দেয়। শ্রমিকরা কারখানার উৎপাদনে মনোনিবেশ করে। অন্যান্য বন্ধ কারখানার সামনে কিছু শ্রমিক কাজে যোগদান করতে এলে কারখানা কর্তৃপক্ষ ও শিল্প পুলিশ তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়। তবে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এছাড়া আশুলিয়ার জেনারেশন নেক্সট, সিগমা অ্যাপারেলসে কাজ করেছে শ্রমিকরা।
জানতে চাইলে আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মহসিনুল কাদির বলেন, আশুলিয়ার শিল্পকারখানাগুলোতে শ্রমিক অসন্তোষ ক্রমান্বয়ে স্বাভাবিক হয়ে আসছে। অল্প সময়ের ব্যবধানে শ্রমিকরা কাজে যোগদান করবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম