দুর্নীতি প্রতিরোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও তরুণদের সম্পৃক্ত করা হচ্ছে : দুদক সচিব
এস. ইসলাম জয়: দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল বলেছেন, দেশের তরুণ সমাজকে মানবিক গুণাবলী ধারণ এবং দেশপ্রেমকে উদ্বুদ্ধ করতে দুর্নীতি প্রতিরোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও তরুণদের সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। এ পদক্ষেপকে মাঠপর্যায়ে কার্যকর করতে প্রায় প্রতিবছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে দুর্নীতিবিরোধী রচনা, বক্তৃতা, চিত্রাঙ্কনসহ নানা আয়োজন করে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা ও পুরস্কার বিতরণ করে দুদক। তরুণ সমাজ দেশের দুর্নীতি মোকাবিলা করার ক্ষমতা রাখে। তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং সচেতনতা সমাজে থাকে দুর্নীতি নির্মূলে উল্লেখযোগ্যভাবে সহায়তা করতে পারে বলে তিনি মনে করেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে তরুণদের কণ্ঠকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে কমিশন মাধ্যমিক স্কুল এবং মাদ্রাসাগুলোতে ষষ্ঠ-একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘ইন্টিগ্রিটি ইউনিট’ (বাংলায় সততা সংঘ) গঠন করেছে। দুদক সততা সংঘের সদস্যদের মধ্যে ‘সততা সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা’ এবং ‘আমরা দুর্নীতি করবো না, সইবো না, মানবো না’, লেখা হাজার-হাজার পোস্টার বিতরণ করেছে।
প্রতিটি সততা সংঘে ১১ সদস্যবিশিষ্ট একটি নির্বাহী কমিটি রয়েছে। নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষার্থী এই সংঘের সাধারণ সদস্যপদের জন্য অনুমোদিত। সংঘের কর্মকা-ে নির্দেশনা প্রদানের লক্ষ্যে সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদেরকে নিয়ে ৩ থেকে ৫ জন সদস্যের একটি উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করা হয়েছে। এসব সংঘ দুর্নীতির বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টি এবং তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সততা চর্চা প্রসারের লক্ষ্যে দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটিসমূহের সহযোগী সংগঠন হিসেবে কাজ করে।
তিনি আরও বলেন, যখন আমরা মাঠপর্যায়ে যাই তখন দেখি ছাত্রছাত্রীরা দুর্নীতি প্রতিরোধে আমাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে। আমাদের কাছে দুর্নীতি প্রতিরোধে তারা শপথ করে। তিনি বলেন ইতোমধ্যে একাদশ শ্রেণির বাংলা পাঠ্য বইয়ে দুর্নীতিবিষয়ক রচনা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করেছি এবং তাদের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। খুব শিগগিরই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে দুর্নীতি প্রতিরোধসংক্রান্ত লেখ অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) দুর্নীতি প্রতিরোধে কাজ করায় তাদের সুবিধা-অসুবিধার দিক জানতে চাইলে দুদক সচিব বলেন, আমাদের কোনো সমস্যা হয় না। বরং দুদকের যে দিকগুলো তারা দুর্বল মনে করেন আমরা সে দিকগুলোকে স্বচ্ছ করতে সচেষ্ট হই। টিআইবি বলেছে দুদক কর্মকর্তাদের মধ্যে কিছু সমস্যা আছে। তাদের সঙ্গে আমরা একমত পোষণ করে বলেছি ওইসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব এবং যে যে জায়গায় আমাদের সমস্যা রয়েছে সেগুলো উত্তরণের জন্য তাদের পরামর্শ চেয়েছি। কিছু বিষয় আমাদেরকে পরামর্শ দিয়েছে তারা। এদিকে ৮-১৫ ডিসেম্বর দৃক গ্যালারিতে দুর্নীতিবিরোধী আলোকচিত্র ও কার্টুন প্রদর্শনী করেছে টিআইবি। পাশাপাশি ৮-১১ ডিসেম্বর ৮টি বিভাগীয় শহরে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর সাথে যৌথভাবে হিলিয়াম বেলুনের মাধ্যমে দুর্নীতিবিরোধী বার্তা প্রচার করাসহ ১১ ডিসেম্বর থেকে ৩ মাসের জন্য ঢাকার বিভিন্ন সড়কে ৬টি বাসের মাধ্যমে দুর্নীতিবিরোধী বার্তা প্রচার করা হচ্ছে।