সেনেগাল ও নিউজিল্যান্ড থেকে রাষ্ট্রদূত ফিরিয়ে নিচ্ছে ইসরায়েল
আমিন ইকবাল: ফিলিস্তিনি ভূখ-ে অবৈধ ইসরায়েলি বসতি স্থাপন বন্ধে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব উত্থাপনকারী সেনেগাল ও নিউজিল্যান্ড থেকে ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতদের দেশে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে তেল আবিব। নিরাপত্তা পরিষদে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব পাসের পর শনিবার এ সিদ্ধান্ত নেয় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দফতর। তাছাড়া জাতিসংঘের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা ভাবছে ইসরায়েল। ফক্স নিউজ সূত্রে দৈনিক পাকিস্তান উর্দু এ খবর জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, সেনেগাল ও নিউজিল্যান্ডে থাকা ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতরা দেশে ফিরলে তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করবেন নেতানিয়াহু।
এরই মধ্যে সেনেগালকে দেওয়া ইসরায়েল সরকারের সব ধরনের সাহায্য বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন ক্ষুব্ধ ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী। সেনেগালের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পূর্বনির্ধারিত ইসরায়েল সফর বাতিলেরও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এদিকে ফিলিস্তিনি ভূখ-ে ইসরায়েলি বসতি স্থাপন বন্ধের পক্ষে নিরাপত্তা পরিষদে পাস হওয়া প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরায়েল। এই প্রস্তাবের নিন্দা জানানোর পাশাপাশি তারা জানিয়েছে, প্রস্তাবের কোনো শর্ত মানতে বাধ্য নয় ইসরায়েল।
২৩ ডিসেম্বর ২০১৬ শুক্রবার ১৫ সদস্যবিশিষ্ট জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবটি তুলে ধরা হয়। ইসরায়েলি বসতি স্থাপনের বিরুদ্ধের ওই প্রস্তাবে বলা হয়, ‘১৯৬৭ সাল থেকে ফিলিস্তিনি ভূখ-ে ইসরায়েল যে বসতি স্থাপন করে যাচ্ছে, তার কোনো আইনি ভিত্তি নাই।’ ভোট দান থেকে বিরত থাকে যুক্তরাষ্ট্র। বাকি ১৪টি দেশ এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলে তা পাস হয়।
প্রস্তাবটিকে আন্তর্জাতিক আইনের বিজয় এবং ইসরায়েলি চরমপন্থার প্রত্যাখ্যান বলে উল্লেখ করেছে ফিলিস্তিন। আর ইসরায়েল বলছে, তারা এর তোয়াক্কা করে না। প্রস্তাবের কোনো শর্তই মানবেন না তারা।
এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘এমন এক অদ্ভুত প্রস্তাব যেন কোনো খারাপ প্রতিক্রিয়া না ফেলতে পারে, এ লক্ষ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত ইসরায়েল।’
জাতিসংঘে ইসরায়েলি দূত ড্যানি ড্যানন আল জাজিরাকে বলেন, তাদের সরকার আশা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র এই প্রস্তাবে ভেটো দেবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, নতুন মার্কিন প্রশাসন এবং জাতিসংঘের নতুন মহাসচিব এসে নতুন কিছু করবে।
এর আগে বুধবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মিসর একটি খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করে। তাতে দাবি জানানো হয়, পূর্ব জেরুজালেমসহ অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখ-ে ইসরায়েলি বসতি নির্মাণ জরুরি ভিত্তিতে ও পূর্ণাঙ্গভাবে বন্ধ করতে হবে। মিসরের ওই প্রস্তাবেও একইভাবে বলা হয়েছিল, ‘ইসরায়েলের ওইসব বসতির কোনো বৈধতা নেই। আর তা আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’
নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় জাতিসংঘে এ নিয়ে ভোটাভুটির কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের কয়েক ঘণ্টা আগে হঠাৎ মিসর প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করে নেওয়ায় ভোটাভুটি স্থগিত করা হয়। পরে নিউজিল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ভেনেজুয়েলা, সেনেগালের পক্ষ থেকে একই প্রস্তাব তুলে ধরা হলে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ঐতিহাসিক’ নীরবতায় তা পাস হয়।
সূত্র: ফক্স নিউজ, আল জাজিরা