জেলা পরিষদের নির্বাচনের বাকি একদিন ১৬টি জেলায় নির্বাচন না হওয়ার সম্ভাবনা নিরাপত্তায় বিজিবিও মাঠে থাকবে
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী: আর মাত্র একদিন। ২৮ ডিসেম্বর ৬১টি জেলায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জেলা পরিষদের নির্বাচন। সেই হিসাবে নির্বাচন কমিশন এখনো পর্যন্ত সিডিউল রেখেছে। তবে ১৬টি জেলায় এই নির্বাচন অনুষ্ঠান হওয়া নিয়ে আইনি জটিলতা তৈরি হয়েছে। ক্ষুব্ধ প্রার্থীরা আইনের আশ্রয় নেওয়ার কারণে ওই সব জেলাতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। তবে চেষ্টার কমতি নেই নির্বাচন কমিশনের। তারা চেষ্টা করবে যেসব জেলায় নির্বাচন স্থগিত হয়েছে সেই সব জেলায় নির্বাচন করার জন্য আজ ও কালকের মধ্যে আইনি প্রক্রিয়ায় এর সমাধান করার জন্য।
নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক বলেন, আমরা ৬১টি জেলায় নির্বাচন করার প্রস্তুতি রেখেছি। এখন পর্যন্ত ১৬টি জেলায় নির্বাচন করতে পারব কিনা জানি না। কারণ ক্ষুব্ধ প্রার্থীরা মামলা করেছে। এই অবস্থায় ওই সব জেলায় নির্বাচন করা সম্ভব হবে কিনা তা এখনো বলা যাচ্ছে না। তবে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আমরা সোমবার ও মঙ্গলবারের মধ্যে চেষ্টা করব যাতে করে আইনি যে জটিলতা আছে তা কাটিয়ে উঠা সম্ভব হয়। এই জন্য ওই সব জেলায় আমাদের যারা রয়েছে তাদেরকে বলে দেওয়া হয়েছে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। আদালত যদি অনুমতি দেয় কিংবা সিদ্ধান্ত দেয় তাহলে আমরা মামলা হওয়া ১৬টি জেলায় নির্বাচন করতে পারব। আর ওই ১৬টির মধ্যে করা সম্ভব না হলেও আমরা ৬১টি জেলার মধ্যে বাকি ৪৫টি জেলায় জেলা পরিষদের নির্বাচন করব। আমাদের প্রায় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। এখন আমরা নির্বাচন অনুষ্ঠান করার জন্য প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সেগুলো সম্পন্ন করব।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, জেলা পরিষদের নির্বাচনে সাধারণ ভোটাররা ভোটার নন। এখানে স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিরা ভোটার। তাদের ভোটেই প্রার্থীরা নির্বাচিত হবেন। তারপরও বেশ কয়েকটি জেলাকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবেও বিবেচনা করা হচ্ছে। নির্বাচনে ভোটাররা যাতে নির্বিঘেœ ভোট দিতে পারেন তা নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে। ভোট কেন্দ্র, প্রার্থী ও ভোটারদের নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করবে। সেই সঙ্গে বিজিবিও মাঠে থাকবে।
আবদুল মোবারক বলেন, জেলা নির্বাচন আমরা যাতে সুষ্ঠুভাবে করতে পারি সেই জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ৪৮ ঘণ্টার আগে থেকে সব প্রচার-প্রচারণা বন্ধ করে দেওয়া হবে। বহিরাগতরা সেখানে কোনো প্রচারণা করতে পারবে না। আমরা পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের রেখেছি। নির্বাচনের দিনে সংখ্যা আরও বাড়বে। এর পাশাপাশি কিছু কিছু জেলায় আমরা বিজিবিরও ব্যবস্থা রেখেছি। এছাড়াও ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৯ ধারা মোতাবেক প্রয়োজন হলে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পরিস্থিতি ও প্রয়োজন বিবেচনা করে সেনাবাহিনীর সদস্যদের চাইতে পারবেন। যদিও সব সময় বলা হয়, নির্বাচনে আমি দেওয়া হবে কিনা, আবার বিএনপি বলে নির্বাচনে সেনা মোতায়েন চায়। কিন্তু আসলে এটা বিএনপিকে কে বোঝাবে যে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট চাইলে যেকোনো সময়ে প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর সদস্য চাইতে পারে। এখানে সমস্যা নেই। কোনো জেলায় প্রয়োজন হলে সেনাবাহিনীর সদস্য চাইবে।
এদিকে জেলা পরিষদের নির্বাচন কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে এই জন্য আদালতে একটি রিট আবেদন করা হয়েছে। ওই রিটের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে। ওই নোটিসের জবাব দিতে হবে কমিশনকে। এই ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনার আব্দুল মোবারক বলেন, ওই নোটিসের জবাব আমরা দেব। আমাদের হাতে সময় রয়েছে। এখনই জবাব দেওয়া হচ্ছে না। এই জবাব দেওয়ার জন্য সময় থাকার কারণে নির্ধারিত দিনে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে জবাব দেওয়া হবে না। এরমধ্যে জবাব না দিলেও কোনো সমস্যা হবে না। কারণ আদালত নির্বাচন না করার কোনো আদেশ দেয়নি। এই কারণে আমাদের নির্বাচন করতে কোনো বাধা নেই। নির্বাচন করার পর আমরা কমিশন বৈঠকে বসব। কমিশনের বৈঠকে তিনজন যে মতামত দিবেন সেই মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আর রিটে যে সব পয়েন্টের অবতাড়না করা হয়েছে সেই সব পয়েন্ট ধরে ধরে উত্তর দেওয়া হবে। সম্পাদনা: দেলওয়ার হোসাইন