শিগগিরই ধরা পড়বে মুসা : ডিএমপি কমিশনার
সুজন কৈরী: রাজধানীর আশকোনার জঙ্গি আস্তানা থেকে পালিয়ে যাওয়া জঙ্গি মুসা বাংলাদেশেই অবস্থান করছে। শিগগিরই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়বে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। গতকাল রোববার সকালে রাজধানীর কাকরাইলে রমনা ক্যাথেড্রাল চার্চ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমরা ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি সফল অভিযানের মধ্যদিয়ে জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি। জঙ্গিদের অর্থদাতা, উৎসাহদাতা ও সমর্থনদাতা সবাইকে নজরদারিতে রেখেছি। তিনি আরও বলেন, জঙ্গিবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এটা কারও একার সমস্যা নয়। গুলশানের হলি আর্টিজানে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা সবাইকে থমকে দিয়েছিল। এ সময় জঙ্গি দমনে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট অত্যন্ত সফল কার্যক্রম শুরু করে এবং বেশ কয়েকটি অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মাটিতে অতীতে কখনও জঙ্গিবাদ টিকতে পারেনি। এখনও পারবে না। আমরা ইতোমধ্যে জঙ্গিদের দুর্বল করে ফেলেছি। তারা আর সংগঠিত হতে পারবে না। তিনি আরও বলেন, মুসা জঙ্গিদের মধ্যে একজন। সে আমাদের তালিকাভুক্ত জঙ্গি। তাকে ধরার চেষ্টা করছি। সে বর্তমানে বাংলাদেশেই অবস্থান করছে। খুব তাড়াতাড়ি আমরা তাকে ধরতে পারবো বলে আশা করছি। আসাদুজ্জামান মিয়া বলেন, জঙ্গিরা প্রকাশ্যে কোনো রাজনৈতিক দল করে না। এমনকি তাদের সাংগঠনিক কাঠামোও নেই। তবে তাদের কে ইন্ধন দিচ্ছে তা সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না।
বড়দিনের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, সারা বিশ্বের মতো রাজধানীতেও কঠোর নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে ৬২টি চার্চে বড়দিনের উৎসব পালিত হচ্ছে। এ জন্য প্রতিটি চার্চে বড়দিন উপলক্ষে তিন স্তরের নিরবচ্ছিন্ন নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি চার্চে বহির্গমন ও প্রবেশপথে নিরাপত্তামূলক আর্চওয়ে বসানো হয়েছে। আগে থেকে খ্রিস্টধর্মীয় নেতা ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে নিরাপত্তা বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা সভা অনুষ্ঠিত হয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশ হচ্ছে অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ। এখানে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সব ধর্মাবলম্বীকে নিয়ে সার্বজনীন উৎসব পালন করা হয়।
জঙ্গিদের কাছ থেকে নতুন বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছ। এসব বিস্ফোরক নিয়ে তাদের নতুন কোনো পরিকল্পনা ছিলো কিনা? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, এটা নতুন কোনো পরিকল্পনা নয়। এগুলো সব গুলশান হামলারই অংশ হতে পারে। জঙ্গিরা এসব বিস্ফোরক দ্রব্য কোথায় পাচ্ছে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোথা থেকে আসছে তা বলা যাচ্ছে না। এগুলো বাইরের দেশ থেকে আমদানিও হতে পারে। আবার দেশের ভেতর থেকেও কেউ সরবরাহ করতে পারে। তবে বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। তদন্ত একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে আছে।
এর আগে ডিএমপি কমিশনার চার্চে পৌঁছানোর পর চার্চের ফাদার, কর্মকর্তা ও খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। সম্পাদনা : শাহানুজ্জামান টিটু