ইমরুল শাহেদ : অসুস্থতার কারণে রাজ্যসভার গত দুই অধিবেশনে উপস্থিত থাকতে পারেননি বলে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সভা থেকে পদত্যাগ করেছেন বলিউড ও টলিউডের সফল তারকা মিঠুন চক্রবর্তী (৬৬)। ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস তাকে উচ্চ কক্ষের মনোনয়ন দিয়েছিল। রাজ্যসভায় তার মেয়াদকাল শেষ হতে এখনও দুই বছর বাকি আছে। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেছেন, ‘স্বাস্থ্যগত কারণে তিনি পদত্যাগ করেছেন। তার এবং তার পরিবারের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক আছে এবং থাকবে।’
অভিনয়ের পাশাপাশি সমাজসেবার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন মিঠুন। বলিউডের সফল বাঙালিকে রাজনীতিতে টেনেছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি ২০১১ সালের নির্বাচনে দলের বিজয়ের পর মিঠুনকে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদানের আমন্ত্রণ জানানো হয়। উল্লেখ করার বিষয় হলো, সিপিএম নেতা ও সাবেক ক্রীড়ামন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তীর সঙ্গে মিঠুন খুবই ঘনিষ্ঠ ছিলেন। কিন্তু রাজনীতির বিষয়ে কখনোই তাকে আগ্রহী মনে হয়নি।
রাজ্যসভায় নির্বাচিত হওয়ার পর হাতে গোনা কয়েকদিন সংসদে গিয়েছিলেন ‘ফাটাকেষ্ট’। পরে অর্থলগ্নি সংস্থার অনিয়ম নিয়ে তদন্তের সূত্রে সিবিআই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে আর সংসদমুখো হননি তিনি। দফায় দফায় চিঠি পাঠিয়ে ছুটি নিয়েছেন সংসদ থেকে। এবার পাকাপাকিভাবে রাজ্যসভার সংসদ সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দিলেন।
নানা কারণে দীর্ঘদিন থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল মিঠুনের। দলের সঙ্গে বিভিন্ন চিটফান্ড সংস্থার নাম জড়ানোর পর থেকেই বাড়তে থাকে দূরত্ব। তাতে তার নামও জড়িয়ে যায়। এর পরেই রাজনীতির সঙ্গে সংসর্গ রাখা বন্ধ করে দেন মিঠুন। অভিনয় জীবনে তার বিরুদ্ধে কখনও কোনও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেনি। বরং সৎ ও পরোপকারি হিসেবে সুখ্যাতি ছিল বরাবর। সেই ইমেজে আঘাত লাগার পর থেকেই নিজেকে গুটিয়ে নিতে শুরু করেন মিঠুন। তার নামে অভিযোগ ওঠার পরে একটি চিটফান্ড সংস্থার অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য নেওয়া পারিশ্রমিকের টাকাও ফিরিয়ে দেন তিনি।
তৃণমূল কংগ্রেসের সূত্র উল্লেখ করে ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, গত তিন বছরে তিনি এক সপ্তাহ সংসদ অধিবেশনে আসেননি। তবে তার পদত্যাগটা সমঝোতার ভিত্তিতেই হয়েছে। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম