বিদেশে পলাতক বঙ্গবন্ধুর খুনীদের ফিরিয়ে আনতে টাস্কফোর্সের বৈঠক অনুষ্ঠিত
আনিসুর রহমান তপন: বিদেশে লুকিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর খুনীদের ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে গঠিত টাস্কফোর্স কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
এ বৈঠকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আবুল হাসান মাহমুদ আলী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, মহা পুলিশ পরিদর্শক একেএম শহীদুল হক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক)সহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, বিদেশে পলাতক বঙ্গবন্ধুর ছয় খুনিকে দেশে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। খুনিদের সর্বশেষ অবস্থান জানতে এবং তাদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বিদেশে পলাতক অবস্থায় এসব খুনিরা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশে কারো সঙ্গে নাশকতার পরিকল্পনা করছে কিনা বা যোগাযোগ করছে কিনা এ বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা হয় বৈঠকে।
সূত্র জানায়, ছয় খুনিকে ফিরিয়ে আনতে আইনমন্ত্রীর নেতৃত্ব এই টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। তাছাড়া পুলিশের বিশেষ শাখার একজন ডিআইজির নেতৃত্ব ১০ সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়েছে তাদের সম্পর্কে সর্বশেষ অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার লক্ষ্যে। এই টিম বিদেশে পলাতক বঙ্গবন্ধুর ৬ খুনি ও তাদের স্বজনদের কার্যক্রমের ওপর সার্বক্ষনিক নজরদারি অব্যাহত রাখবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধুর খুনি লে. কর্নেল (অব.) খন্দকার আবদুর রশিদ, মেজর (অব.) শরিফুল হক ডালিম, মেজর (অব.) আবু মোহাম্মদ রাশেদ চৌধুরী, মেজর (অব.) এসএইচএমবি নূর চৌধুরী, ক্যাপ্টেন (অব.) আব্দুল মাজেদ এবং রিসালদার (অব.) মোসলেহ উদ্দিন পলাতক রয়েছেন।
সূত্র জানায়, খুনি খন্দকার আব্দুর রশিদের বর্তমান অবস্থান পাকিস্তান বা লিবিয়া। কুমিল্লায় তার নামে রেকর্ডভূক্ত ১৭ একর জমি রাষ্ট্রের অনুকূলে জব্দ ককরা হয়। অপর খুনি ডালিমের অবস্থান পাকিস্তান, লিবিয়া ও জিম্বাবুয়েতে। সোনালী ব্যাংকের ঋণে করা তার বাড়িটিও আদালতের নিলামের মাধ্যমে বেসরকারি একটি প্রপার্টি কোম্পানি কিনে নিয়েছে। বাড়ি বিক্রির টাকা দিয়ে ব্যাংক ঋণ সমম্ময় করা হয়। অবশিষ্ট ৬৭ লাখ টাকা ব্যাংকের একই শাখায় জমা করা হয়েছে। পলাতক রাশেদ চৌধুরীর অবস্থান আমেরিকায় বলে ধারনা করছে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। এই খুনির নামে থাকা ১ দশমিক ১৫ একর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে সরকারের দখলে নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া আসামি নূব চৌধুরী কানাডার নাগরিকত্ব নিয়ে সেখানেই বসবাস করছে। মৃত্যুদ-প্রাপ্ত হওয়ায় সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা দেখিয়ে কানাডা সরকার বঙ্গবন্ধুর এই খুনিকে হস্তান্তরে অপারগতা জানিয়ে আসছে। গ্রামে কোনো সম্পত্তি পাওয়া না গেলেও তার নামে থাকা ঢাকার গুলশানে ২৩/বি নম্বর সড়কের ৪ নম্বর প্লটটি বাতিল করেছে সরকার। মৃত্যুদ- প্রাপ্ত আব্দুল মাজেদ সেনেগালে অবস্থান করছে বলে সরকারের কাছে তথ্য রয়েছে। গ্রামে তার নামে থাকা তার প্রায় চার একর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। খুনি রিসালদার মোসলেহ উদ্দিনের অবস্থান ভারতে বলে সংশ্লিষ্টদের কাছে তথ্য রয়েছে। তার নামে গ্রামের বাড়িতে থাকা ২৮ শতাংশ সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম