১১ মাসে সারাদেশে ২৬৮ নারী খুন নারী সহিংসতা ও নির্যাতনের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে
আজাদ হোসেন সুমন: দেশে নারী নির্যাতন ও পারিবারিক সহিংসতার ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। সামাজিক অসচেতনা এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাবে এসব ঘটনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
সূত্র জানায়, গত এগারো মাসে (জানুয়ারি থেকে নভেম্বর) বিভিন্ন কারণে পারিবারিক সহিংসতায় ২৬৮ জন নারী নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে ২১১ জন। এদের মধ্যে স্বামীর হাতে নিহত হয়েছে ১৫৮ জন। ক্রমবর্ধমান নারী হত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দেশের অন্যতম ও শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা। অধিকাংশ নারী নির্যাতনের ঘটনা অপেক্ষাকৃত গ্রামে ঘটে থাকে। যেসব স্থানে শিক্ষার হার কম ও দারিদ্র্যতা তুলনামূলক বেশি। কিন্তু হালে শহর বা শহরতলীতেও নারী নির্যাতন ও সহিংসতার ঘটনা ঘটছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ মানবাধিকার সংস্থার চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সিগমা হুদা বলেন, পরিবারে নারী নির্যাতনের বিষয়টি খুবই উদ্বেগের বিষয়। কঠোর আইন থাকার পরও নারী নির্যাতন, হত্যা বন্ধ হচ্ছে না বরং পরিবারের মতো নিরাপদ স্থানেও নারীরা আর নিরাপদ অনুভব করছে না। মানুষের নৈতিক অবক্ষয় ও সঠিক পারিবারিক মূল্যবোধের অভাবে পরিবারেও দেখা দিচ্ছে অরাজকতা। যার বেশির ভাগ ভুক্তভোগী হচ্ছে নারী ও শিশুরা। যে নারীরা স্বামীর হাতে খুন হয়েছে তার অধিকাংশের কারণই যৌতুক। যৌতুকের বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন করতে হবে। আইনের সঠিক প্রয়োগ ও অপরাধীদের দ্রুত শাস্তির বিধান নিশ্চিত করা গেলে পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হতে পারে।
সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মোস্তফা সোহেল বলেন, দিনে দিনে নারীদের প্রতি নির্যাতনের মাত্রা বেড়েই চলেছে। এর প্রধান কারণ অপরাধীদের বিচার না হওয়া ও বিচার কার্য বিলম্বিত হওয়া। নারী নির্যাতনকারীদের উপযুক্ত শাস্তি না হওয়া, সামাজিক ও পারিবারিক অনাচার বৃদ্ধি, প্রযুক্তির অপব্যবহার, ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে দিন দিন এধরনের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, এ অবস্থা উন্নয়নের জন্য সরকারি পদক্ষেপের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। পারিবারিক কাউনসিলিং-এর মাধ্যমে পারিবারের বন্ধন ও পরিবারে নারীর মর্যাদা সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম