অংশ নিচ্ছেনা ও জাতীয় পার্টি
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী: জেলা পরিষদ নির্বাচন কাল। এই নির্বাচনে বিএনপি ও জাতীয় পার্টি অংশ নিচ্ছে না। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিবে কি নিবে না এমন আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়নি। আবার তারা কোথাও প্রার্থীর সমর্থনও দেয়নি। আর জাতীয় পার্টি ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার। সেই হিসাবে বড় দুটি দলের কোনো প্রতিনিধি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। জেলা পরিষদের নির্বাচনে কয়েকটি জেলায় স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে। এছাড়া কিছুসংখ্যক প্রার্থী রয়েছে অন্য দলের। বাকি সব প্রার্থী সরকারি দলের। সরকারি দলের স্থানীয় সরকার নির্বাচনি পরিচালনা বোর্ড প্রার্থীদের নামের তালিকা করে তাদেরকে সমর্থন দিয়েছে। আর সরকারি দলের প্রার্থীদের যারা প্রার্থী হতে চেয়েছিল কিন্তু কেন্দ্র থেকে সমর্থন দেয়নি। ওই সব প্রার্থীদের অনেকেই বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।
বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, এ নির্বাচনে যারা আওয়ামী লীগের সমর্থনের বাইরে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে তাদের কারও কারও বিরুদ্ধে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলা পরিষদ নির্বাচনে অন্য বড় দলের প্রার্থী না থাকলেও বিদ্রোহী প্রার্থীদের কারণে সরকারি দলের নেতা ও কর্মীদের মধ্যে গ্রুপিং তৈরি হয়েছে। তারা একে অপরের বিপক্ষে বিবাদেও জড়িয়ে পড়েছে।
কমিশন সূত্র জানায়, নির্বাচন কমিশনে কিছু কিছু অভিযোগ এসেছে। কমিশন ওই সব অভিযোগের মধ্যে কিছু অভিযোগ কমিশনের বৈঠকে তুলবে। তারা এমনও অনেক জেলা থেকে অভিযোগ পেয়েছে সরকারি দলের ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে গ্রুপিং তৈরি হওয়ায় তারা মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। যেকোনো সময়ে বিবাদ ও সংঘাতেও জড়িয়ে পড়তে পারে। সংঘর্ষও বেঁধে যেতে পারে। বেশ কয়েকটি জেলায় স্থানীয় সরকারের নির্বাচন হলেও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদস্য পদে স্থানীয় সংসদ সদস্যরা তাদের পছন্দমতো ব্যক্তিকে নির্বাচিত করিয়ে আনতে চাইছেন। এক একটি জেলায় একাধিক সংসদ এলাকা হওয়ার কারণে একাধিক সংসদ সদস্য রয়েছেন। তারাও ভেতরে ভেতরে তাদের প্রার্থীদের সমর্থন দিচ্ছেন। কোনো কোনো জেলায় মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা ভিন্ন ভিন্ন প্রার্থীকেও জিতিয়ে আনার চেষ্টা করায় ও তাদেরকে ইন্ধন দেওয়ায় এক প্রার্থী অন্য প্রার্থীর উপর ক্ষুব্ধ হচ্ছেন।
নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক বলেন, যে জায়গা থেকে গুরুতর অভিযোগ আসছে সেসব জায়গায় দ্-ুএকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে কালো টাকার ছড়াছড়ি কিংবা পেশি শক্তির ব্যবহার এমন অভিযোগ তেমন পাওয়া যায়নি। কয়েকটি অভিযোগ এসেছে বলে শুনেছি। ওইসব অভিযোগগুলো পর্যালোচনা করা হবে। পর্যালোচনা করে যেগুলো কমিশনের বৈঠকে তোলা প্রয়োজন সেগুলো কমিশনের সচিব কমিশনের সভায় তুলবেন। এরপর আলোচনা হবে। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির তেমন কোনো আশঙ্কা দেখি না। তারপরও আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করেছি। কোন কোন স্থানে ও জেলায় সমস্যা হতে পারে সেটা বিবেচনা করেছি। ওই বিবেচনা করে আমরা সব ব্যবস্থা নিয়েছি। ভোটার, ভোট কেন্দ্র ও প্রার্থীদের ও ভোট সংশ্লিষ্ট সবার নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা আশা করি শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর কোথাও কোনো সমস্যা হলে স্ট্রাইকিং ফোর্সতো থাকবেই। সেই সঙ্গে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটরা চাইলে তাদের এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট হলে সেনাবাহিনীর সদস্যদেরও তলব করতে পারবে।
এদিকে রাজশাহী, মানিকগঞ্জ, শেরপুর, শরিয়তপুর, চাঁদপুর, কিশোরগঞ্জ, মেহেরপুরসহ বেশ কয়েকটি জেলায় সরকারদলীয় প্রার্থীদের সঙ্গে সরকারদলীয় বিদ্রোহী প্রার্থীদের ও তাদের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরোধ চলছে। একাধিক জেলায় ভোটারদের নানা রকম উপহার দিয়ে ভোট কেনা হচ্ছে ও কোনো কোনো জেলায় টাকার বিনিময়েও ভোট কেনা-বেচা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও প্রতিপক্ষকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম