বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দিবে না সরকার
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী: বিএনপি গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালন উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার উদ্যোগ নিয়েছে। এই জন্য ৫ জানুয়ারিকে তারা গণতন্ত্র হত্যা দিবস বলে অভিহিত করলেও ওই দিন সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিএনপি কৌশল করে ৫ জনুয়ারির পরিবর্তে ৭ জানুয়ারি সমাবেশের দিন ঠিক করেছে। চলতি বছরে বিএনপি ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলক্ষে সমাবেশ কর্মসূচি দেয়।
এবারও বিএনপি কর্মসূচি ঠিক করেছে। একটি অংশ করবে ৫ জানুয়ারি আর একটি ৭ জানুয়ারি। তারা সমাবেশ ৫ জানুয়ারি না করে ৭ জানুয়ারি করতে চাইছে। ৫ জানুয়ারি তারা দেশের সব জেলায় কালো পতাকা উত্তোলন করে ও কালো ব্যাজ ধারণ করে গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী এই কর্মসূচিও ঘোষণা করেছেন।
বিএনপির সূত্র জানায়, তারা চলতি বছরের ৫ জানুয়ারির অভিজ্ঞতার আলোকে এবারও মনে করছে আগামী ৫ জানুয়ারি সমাবেশ করার জন্য অনুমতি চাইলে সরকার দিবে না। কারণ সরকার ওই দিন গণতন্ত্রের বিজয় দিবস পালন করে। ৫ জানুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসনকে ঘর থেকে বের হতে দেওয়া হয়নি। এবারও একই রকমের ঘটনার অবতাড়না করতে পারে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তা যাতে না হয়, সমাবেশ যাতে করা সম্ভব হয় এই জন্য তারা ৭ জানুয়ারি দিন ধার্য করে। আর ৫ জানুয়ারি সারা দেশে জেলা ও উপজেলায় তারা গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালন করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, বিএনপি গণতন্ত্র হত্যা দিবস অভিহিত করে সমাবেশ করার উদ্যোগ নিয়েছে। একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে তারা সভা-সমাবেশ করার উদ্যোগ নিতে পারে। তবে তারা খোলা কিংবা উন্মুক্ত কোনো স্থানে সমাবেশ করতে পারবে না। নিরাপত্তাজনিত কারণেই সেই ধরনের অনুমতি দেওয়া হবে না। তবে তারা চাইলে কোনো হলে কিংবা অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠান করতে পারে। তারপরও বলা যায়, সেই অনুষ্ঠান হতে হবে রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি কিংবা যেটি তাদের প্রয়োজন। যেদিন সরকার ও সরকারি দল গণতন্ত্রের বিজয় দিবস পালন করছে ওই দিন তারা গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালন করতে চাইছে। ওই দিনের অনুষ্ঠান তারা ৭ জানুয়ারি করতে চাইছে। কিন্তু এই ধরনের কোনো অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়ার সুযোগ নেই। এর আগে তারা চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি একই ধরনের অনুষ্ঠান করার জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ ডাকে। ওই সময়ে তাদেরকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। কারণ আওয়ামী লীগও অনুষ্ঠানের জন্য ওই স্থান চেয়েছিল। দুটি দল একই সময়ে একই স্থানে সমাবেশ করার অনুমতি চাওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তাজনিত কারণে কাউকেই অনুমতি দেয়নি।
সূত্র জানায়, বিএনপি যেসব কর্মসূচি দিচ্ছে এর কোনোটাই জনগণ সম্পৃক্ত কোনো বিষয় নয়। তারা সরকারের বিরুদ্ধে সমাবেশ করবে আর সরকারি দল যেটাকে গণতন্ত্রের বিজয় দিবস বলছে তারা সেখানে একই দিনের অনুষ্ঠান করছে গণতন্ত্র হত্যা দিবস হিসেবে। সেই জন্য এটা মেনে নেওয়া যায় না।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব জানিয়েছেন, ৭ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। এই ব্যাপারে অনুমতির জন্য সংশ্লিষ্টদের চিঠিও দেওয়া হয়েছে। তারা আশাবাদী যে ৭ জানুয়ারি তাদেরকে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হবে। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম