বুশরা হত্যা: আপিলে খালাস কাদের মারা গেলেন কারাগারে
ডেস্ক রিপোর্ট : চাঞ্চল্যকর বুশরা হত্যা মামলায় আপিল বিভাগে খালাস পাওয়া মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামি এমএ কাদের (৭০) মারা গেছেন। তবে রায়ের কপি কারা কর্তৃপক্ষের কাছে না পৌঁছায় বন্দি অবস্থায়ই তার মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জাহাঙ্গীর কবির বলেন, এমএ কাদের বার্ধক্যজনিত কারণসহ নানা জটিল রোগে ভুগছিলেন। সম্প্রতি তাকে মেডিকেল আনা-নেয়ার মধ্যেই রাখা হয়েছিল। এমএ কাদেরের লাশ স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর কবির বলেন, এমএ কাদের আপিলে খালাস পেলেও রায়ের কপি কারা কর্তৃপক্ষের কাছে না পৌঁছায় তিনি মুক্তি পাননি। উল্লেখ্য, ২০০০ সালরে ১ জুলাই রাতে রাজধানীর মালিবাগ চৌধুরী পাড়ার বাসায় খুন হন সিটি কলেজের ছাত্রী রুশদানিয়া বুশরা ফুল। ময়নাতদন্ত প্রতিদেনে বলা হয়, ধর্ষণের পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয় বুশরাকে। বুশরার বাবা সহকারী পুলিশ সুপার সিরাজুল ইসলাম ওই সময় অবসরকালীন ছুটিতে যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন। বুশরার মা লায়লা ইসলাম হত্যাকা-ের পরদিন রমনা থানায় এই মামলা দায়ের করেন। ওই বছরের ৫ অক্টোবর একটি সম্পূরক অভিযোগ দাখিল করেন বুশরার মা। সেখানে বুশরার খালুর সৎভাই এমএ কাদের, তার স্ত্রী রুনু, কাদেরের শ্যালক শওকত আহমেদ ও কবির আহমেদকে আসামি করা হয়।
তদন্তের সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, মালিবাগে বুশরাদের বাসা নিয়ে আত্মীয়দের দ্বন্দ্বের জেরে খুন করা হয় ওই কলেজছাত্রীকে। প্রথমে পুলিশ ও পরে সিআইডি এ মামলার তদন্ত করে ২০০০ সালের ১৯ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। সেখানে কাদেরের শ্যালিকা কানিজ ফাতেমা হেনা ও কাজের মেয়ে সুফিয়াকেও আসামি করা হয়। এরপর ২০০৩ সালের ৩০ জুন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল কাদের, শওকত ও কবিরকে মৃত্যুদণ্ড এবং রুনু কাদেরকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেন। হেনা ও সুফিয়া বেকসুর খালাস পান। এ রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা হাইকোর্টে আপিল করেন। এছাড়া ডেথ রেফারেন্স হিসেবেও মামলাটি হাইকোর্টে আসে। আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি করে হাইকোর্ট ২০০৭ সালের ২৯ জানুয়ারি রায় ঘোষণা করেন। ঘটনার রাতে এমএ কাদের ও তার স্ত্রী রুনু কাদের ওই বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন জানিয়ে রায়ে বলা হয়, অপরাধে তাদের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হওয়ায় দণ্ড বহাল থাকছে। শওকত ও কবিরের অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেয়া হচ্ছে। খালাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ও দন্ড বহালের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ আপিল বিভাগে আপিল করেন। গত ১৫ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ এবং আসামিপক্ষের আবেদন মঞ্জুর করে বাকি দুজনকেও খালাস দিয়ে রায় দেন। সূত্র: যুগান্তর। সম্পাদনা: এনামুল হক