জঙ্গি তৃষ্ণা মনির স্বীকারোক্তি, অজ্ঞাত এক ব্যক্তি বাসায় এসে গ্রেনেড বানিয়েছে
বিপ্লব বিশ্বাস : আটক দুই ‘নারী জঙ্গি’ জেবুন্নাহার ওরফে শীলা ও তৃষ্ণামনি ওরফে উম্মে আয়েশাকে সাতদিনের পুলিশ রিমান্ডে নেয়া হয়েছে৷এদের জিজ্ঞাসাবাদে ‘সুইসাইড মোটিভিশন’ ও নারী আত্মঘাতী জঙ্গি সারিকার ব্যাপারে তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশা৷
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান জানান, গত শনিবার ভোররাত থেকে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢাকার পূর্ব আশকোনার একটি বাড়িতে পুলিশি অভিযানে সারিকা আত্মসমর্পণের ভান করে এক পর্যায়ে আত্মঘাতী হয়৷ নিজের শরীরে বাঁধা ‘সুইসাইড ভেস্ট’-এর বিস্ফোরণ ঘটায় সে৷ ফলে সঙ্গে থাকা শিশু সন্তানটি আহত হয়৷আর অপর দু’জন নারী জঙ্গি শিলা ও তৃষামনি দুই শিশুকে নিয়ে আত্মসমর্পণ করে৷’এছাড়া অভিযানে আফিফ কাদেরি নামে আরও একজন নিহত হয়৷সোমবার লাশের ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ময়নাদন্তকারী চিকিৎসক সোহেল মাহমুদ জানান, ‘গুলিতেই আফিফ কাদেরি নিহত হয়েছিলেন’ এদিকে গতকাল মঙ্গলবার রিমান্ডের প্রথম দিনে দুই নারী জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, অজ্ঞাত এক ব্যক্তি তাদের বাসায় গিয়ে গ্রেনেড বানিয়েছে। প্রায় ১৫-২০ দিন আগে মাইনুল ওরফে মুসার সঙ্গে শেষবারের মতো ওই ব্যক্তি বাসায় এসেছিল। তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য মুসা বলতে পারবে। ওই ব্যক্তি মুসার সঙ্গে বাসায় থাকতো। মুসা তার কাছে গ্রেনেড তৈরির প্রশিক্ষণও নিচ্ছিল। কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের এক কর্মকর্তা এসব তথ্য জানান।
ওই কর্মকর্তা জানান, জিজ্ঞাসাবাদে মুসার স্ত্রী তৃষ্ণামনি জানিয়েছে, পুলিশ অভিযান শুরু করলে সে স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করে। তার কাছে একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল সেট ছিলো। থ্রিমা অ্যাপসের মাধ্যমে স্বামীর সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়। মুসা তাকে আত্মঘাতী হওয়ার নির্দেশ দেয়। দুই দফা বার্তা আদান-প্রদান শেষে মুসার নির্দেশেই সে মোবাইলটি নষ্ট করে ফেলে। গ্রেফতার হওয়া অপর নারী জঙ্গি জেবুন্নাহার ইসলাম শীলা জানিয়েছে, সে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতো না। তৃষার মাধ্যমে মুসার কাছ থেকে আত্মঘাতী হওয়ার নির্দেশ পেলেও শেষ পর্যন্ত তা না করে সে আত্মসমর্পণ করে।
গ্রেফতার হওয়া দুই নারী জঙ্গি জানায়, তাদের বাসায় থাকা তানভীর কাদেরীর ছেলে আফিফ কাদেরী ওরফে আদরের কাছেও একটি মোবাইল সেট ছিলো। ওই সেটের মাধ্যমে তার সঙ্গেও মুসার যোগাযোগ হয়। পুলিশি অভিযানের সময় তারা পৃথক রুমে অবস্থান করলেও পর্দার দু’পাশ থেকে তাদের মধ্যে কথা হয়।
সিটিটিসি প্রধান মনিরুল ইসলাম মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় বলেন, দুই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের কাছ থেকে আমরা অস্ত্রের উৎস, বিস্ফোরক গ্রেনেডের উৎস এবং পরিকল্পনা জানার চেষ্টা করছি। তিনি আরও বলেন, নারী জঙ্গিদের সাধারণত কম তথ্য জানানো হয়। একারণে আমরা মুসাকে গ্রেফতারে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। তাকে গ্রেফতার করতে পারলে অনেক তথ্য জানা যাবে।