জঙ্গি দমনে ঝরেছে সাহসী প্রাণ
আরিফুর রহমান: জঙ্গি উত্থান আর জঙ্গি দমনে আস্তানায় আস্তানায় অভিযানের জন্য আলোচিত ছিল ২০১৬ সাল। জঙ্গি দমনে তৈরি হয় পুলিশের বিশেষায়িত সন্ত্রাস বিরোধী কাউন্টার টিরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম নামের নতুন একটি ইউনিট। তার সাফল্যও চোখে পড়ার মত। তবে এজন্য বেশ কয়েকজন সাহসী পুলিশ সদস্যের প্রাণও দিতে হয়েছে। ২০১৬ সালে রাজধানী ঢাকা ছাড়াও দেশের বেশ কয়েকটি এলাকায় ঘটেছে জঙ্গি হামলার ঘটনা। টার্গেট ছিলো বাংলাদেশে বসবাসরত বিদেশি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য আর গুরুত্বপুর্ণ স্থাপনা। জঙ্গিবাদ রোধে নতুন করে ভাবতে শুরু করে সরকার। গঠন করা হয় পুলিশের সন্ত্রাস বিরোধী ইউনিট-কাউন্টার টেরোরিজম। তারপরেও ঘটতে থাকে একের পর এক হামলা। হর্লি আর্টিজান আর শোলাকিয়ার হামলার ঘটনা শুধু দেশ নয়, গোটা বিশ্বের নজরে চলে আসে। এতো দিন ধরে গরীব পরিবারের আর মাদ্রাসা পড়ুয়ারা জঙ্গিদের খাতায় নাম লেখালেও হলি আর্টিজানের ঘটনা প্রচলিত ধারণা পাল্টে দেয়। ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল-কলেজে পড়া ছাত্র আর অভিজাত পরিবারের সন্তানদের জঙ্গি তৎপরতায় জড়িত হওয়ার প্রমাণ মেলে। বিদেশি জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গে এদের যোগাযোগের ঘটনাও আলোচনায় আসে।
ঢাকা, গাজীপুর, টাঙ্গাইল ও নারায়ণগঞ্জে জঙ্গিদের ঘাঁটির সন্ধান মেলে। চলে পুলিশের অভিযান। নিহত হয় নব্য জেএমবির বেশ কয়েকজন মাস্টার মাইন্ড ও গুরুত্বপুর্ণ সদস্য। জঙ্গি বিরোধী অভিযানে প্রাণ হারায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৬ সদস্য, আহত হয় অর্ধশতাধিক।
আইজিপির মতে, ২০১৬ সালটি ছিল জঙ্গি মোকাবেলার ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য এক ধরনের চ্যালেঞ্জ। আর এ চ্যালেঞ্জে অনেকটাই সফল হয়েছে পুলিশ। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থান আর বেশ কয়েকটি সফল অভিযানের কারণে নব্য জেএমবি এখন অনেকটাই কোনঠাসা।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের গবেষণা বলছে, জঙ্গিবাদ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়, এটি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদেরই অংশ। কাজেই আন্তর্জাতিক উগ্র জঙ্গি গোষ্টীগুলোর প্রভাব-পৃষ্ঠপোষকতা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যাবস্থা নেয়াই আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। সূত্র : ইনডিপেনডেন্ট টিভি