দেহজুড়ে অস্বাভাবিক লোমশ শিশুবিথী আবারও বিএসএমএমইউতে
রিকু আমির: চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে থাকা সারাদেহে অস্বাভাবিক লোম গজানো শিশু বিথী (১২) বাবা-মায়ের সঙ্গে আবার এসেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে। কাগজপত্রে এখনো বিথীর রোগ সম্পর্কে চিকিৎসকরা পরিষ্কার ভাষায় কিছু না বললেও ধারণা করছেন, এটা জিনঘটিত ‘ওয়ের উলফ সিনড্রোম’ বা ‘হির্সুটিজম’। পৃথিবীর বিরল রোগগুলোর মধ্যে এটিও একটি।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার দুপুরে বিথীকে পাওয়া যায় বিএসএমএমইউর মেডিসিন বিভাগের ওয়ার্ডে। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ীই বিথীকে গত মঙ্গলবার এখানে ভর্তি করা হয়। বিথীর গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের নাগরপুরে। বিথীর বাবা আবদুর রাজ্জাক দৈনিক আমাদের অর্থনীতিকে বলেন, ডাক্তাররা বলছে চিকিৎসা শুরু করব। বড় রোগ তো, কইছে সময় লাগব।
বিএসএমএমইউর মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ দৈনিক আমাদের অর্থনীতিকে বলেন, রোগটা খুব জটিল। দেখা যাক, আমরা চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। সর্বোচ্চ চেষ্টাই করে যাব। বিথীর দেহের সর্বত্র অস্বাভাবিক বড় লোমই নয়, তার স্তনের আকৃতিও অস্বাভাবিক বড়, চোয়াল-ঠোঁটও বিকৃত। গত ২০ জুন প্রথম দফা অপারেশন করে বাম স্তন থেকে নয় কেজি ৪০০ গ্রাম বাড়তি মাংস ও গত ৩১ জুলাই ডান স্তন থেকে নয় কেজি ৪০০ গ্রাম বাড়তি মাংস কেটে ফেলে দেওয়া হয় বিএসএমএমইউর সার্জারি বিভাগে। এছাড়াও লেজার থেরাপি দিয়ে মুখম-ল ও দেহের লোম ফেলে দেওয়া হয়েছিল। স্তন থেকে মাংস কেটে ফেলে দেওয়ার পর তার দৈহিক ওজন দাঁড়িয়েছিল- ২০ কেজিতে। এ তথ্য জানিয়েছিলেন বিথীর অস্ত্রোপচারকারী বিএসএমএমইউর সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. ইকবাল মাহমুদ চৌধুরী। বর্তমানে স্তনের সমস্যা বৃদ্ধির দিকে এবং লোমও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান আবদুর রাজ্জাক।
বিথীর যে অবস্থা তাতে দরকার দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা। আবার দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার জন্য প্রচুর অর্থ। যা আবদুর রাজ্জাকের পক্ষে বহন করা অসম্ভব। গত ২৭ এপ্রিল বিথীকে নিয়ে যখন দৈনিক আমাদের অর্থনীতিতে প্রথম সচিত্র প্রতিবেদন এবং দফায় দফায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, তখন দেশ-বিদেশের অনেক মানুষ বিথীর অবলম্বন হয়ে দাঁড়ায়। সেই অর্থ দিয়েই প্রথম দফায় প্রায় দেড়শ দিন বিএসএমএমইউতে থেকে বিথীর চিকিৎসা করা হয়।
রাজ্জাক বলেন, আমি ভাড়া করা মোটরসাইকেল দিয়া যাত্রী টানি। ওর চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা দরকার। আমার ব্যর্থতা একটাই, টাকা নাই। ওয়াল্টন গ্রুপ ছাড়াও দেশ-বিদেশের অনেক মানুষ সাংবাদিক গো লেখার মাধ্যমে জাইন্না আমার মেয়ের চিকিৎসায় সাহায্য করছে। আমার মেয়েরে জানি কেউ না ভুলে। সবার সাহায্য না পাইলে পারুম না মেয়ের চিকিৎসা করাইতে। বিথীকে কেউ সহযোগিতা করতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারেন ০১৭১০৫২১৪৭৯ নম্বরে। এটি বিকাশ নম্বর ও বিথীর বাবার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন নম্বর। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম