সমাধান দুই রাষ্ট্রে মত-কেরির, তীব্র সমালোচনা নেতানিয়াহুর
আসাদুজ্জামান আকাশ ও বাঁধন : যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, অধিকৃত ফিলিস্তিন অঞ্চলে ইসরায়েলের অব্যাহত বসতি স্থাপনের নিন্দা করে গত শুক্রবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে যে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র তাতে বাধা দেয়নি। কারণ, দুই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা অর্জনে এ ছাড়া ভিন্ন কোনো বিকল্প ছিল না। গতকাল তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল গণতান্ত্রিক ও ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েল যাতে তার প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তি ও নিরাপদে টিকে থাকতে পারে, তা নিশ্চিত করা। এই ভোট ছিল ইসরায়েল ও আমাদের স্বার্থে।’ তবে, কেরির এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। কেরির ভাষণকে ইসরায়েলবিরোধী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন তিনি।
স্থানীয় সময় বুধবার এক ভাষণে জন কেরি বলেন, অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখ-ে ইসরায়েলের বসতি নির্মাণ চলমান থাকায় দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান ও মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া হুমকির মুখে রয়েছে। আর এজন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেন তিনি। ৭০ মিনিটের ওই ভাষণে কেরি অভিযোগ করেন, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বসতি স্থাপনকারীদের এজেন্ডার ভিত্তিতে ইসরায়েলের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে চাইছেন। কেরি জানান, যখন তারা দেখছেন শান্তির প্রত্যাশা ক্রমেই দূরে সরে যাচ্ছে, তখন তারা চুপ করে বসে থাকতে পারেন না।
কেরির ভাষণের কিছুসময় পর এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বিষয়টির নিন্দা জানিয়েছেন। বিবৃতিতে তিনি ওই বক্তব্যকে ভারসাম্যহীন এবং মাত্রাতিরিক্তভাবে ইসরায়েলি বসতি কেন্দ্রিক বলে উল্লেখ করেন। তিনি আরো বলেন, ভাষণটিতে কেরি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসী অভিযানের পক্ষে অবিরাম বলে গেছেন। তবে নেতারিয়াহু বলেন, সমস্যার মূলে রয়েছে ফিলিস্তিনিদের ইসরায়েলকে স্বীকৃতি না দেওয়া। আর এই বিষয়টিই কেরি দেখতে পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন নেতানিয়াহু।
গত শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বসতি নির্মাণকে অবৈধ ঘোষণা করে একটি প্রস্তাব পাশ করে। ১৫ সদস্যবিশিষ্ট জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাশ হওয়া ওই প্রস্তাবে বলা হয়, ১৯৬৭ সাল থেকে ফিলিস্তিনি ভূখ-ে ইসরায়েল যে বসতি স্থাপন করে যাচ্ছে, তার কোনও আইনি ভিত্তি নেই। নিরাপত্তা পরিষদের ১৪টি দেশ এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলেও ভোট দান থেকে বিরত থাকে যুক্তরাষ্ট্র। তবে অতীতে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলবিরোধী প্রস্তাবগুলোতে ভেটো দিত। কিন্তু এই প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র ভেটো না দেওয়ায় নেতানিয়াহু ওবামা প্রশাসনের বিরুদ্ধে ইসরায়েলবিরোধী অবস্থান নেওয়ার অভিযোগ করেন।
তবে কেরির ভাষণ ইসরায়েলের পক্ষে না গেলেও নির্বাচিত নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলের সমর্থনে টুইট করেছেন। ট্রাম্প বুধবার এক টুইট বার্তায় ইসরায়েলকে শক্ত থাকতে বলেন এবং জানান ইসরায়েল একসময় যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র হলেও এখন আর নেই। ইসরায়েলকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য ও অসম্মান করা হচ্ছে এবং তার প্রশাসনের সময় এ অবস্থার অবসান ঘটবে বলে জানান তিনি। বিবিসি ও রয়টার্স। সম্পাদনা: পরাগ মাঝি