শিশু পাচারে শীর্ষে ভারত দত্তক নিতে হাজারো অভিভাবকের অপেক্ষা
রাশিদ রিয়াজ: ভারতে শিশু দত্তক নিতে যেমন হাজার হাজার নি:সন্তান দম্পতি অপেক্ষা করছে তেমনি দত্তক নেবার সুবিধা থাকায় এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অবৈধ শিশু পাচার। দেশটির সরকারের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ১৭শ শিশু দত্তক দেওয়ার জন্যে অপেক্ষায় আছে। এর পাশাপাশি ১২ হাজার ৪শ পরিবার শিশু দত্তক নেয়ার জন্যে প্রস্তুতি নিয়ে প্রতীক্ষা করছে। সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, দত্তকের কারণে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অবৈধ শিশু পাচার।
বিশ্বের দ্বিতীয় ঘনবসতির দেশ ভারতের জনসংখ্যা সোয়া বিলিয়ন। ২০১৫-১৬ অর্থাৎ গত দুই বছরে ভারতে ৩ হাজার ১০টি শিশু দত্তক নিয়েছে বিভিন্ন পরিবার। দেশটির কেন্দ্রীয় দত্তক কর্তৃপক্ষ প্রধান দীপক কুমার বলেছেন, দত্তকের জন্যে শিশুর অভাব নেই কিন্তু এ দত্তক নিয়ে দালাল ও কিছু প্রতিষ্ঠানের কারসাজির কারণে অবৈধ শিশু পাচার সাংঘাতিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত দুই মাসে অন্তত দুইটি শিশু পাচারকারী চক্রের সন্ধান পাওয়ার কথাও জানান তিনি।ডেইলি মেইল এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
ডেইলী মেইলে উল্লেখ করা হয়, ভারতের আইন অনুসারে, যে সব শিশুকে তাদের পিতামাতা লালন পালনে অক্ষমতা প্রকাশ করেন, পুলিশের উদ্ধারকৃত শিশু, বৈধভাবে দত্তকের জন্যে ঘোষিত শিশুসহ এই তিন শ্রেণির শিশুদের দত্তক নিতে কোনো অসুবিধা নেই। তবে পিতামাতা প্রয়োজনে ষাট দিনের মধ্যে তাদের শিশুদের দত্তক দেওয়ার ব্যাপারে মত পাল্টাতে পারবেন। স্বচ্ছতার জন্যে দত্তক ব্যবস্থা অনলাইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু দীপক কুমার বলছেন, শিশু পাচারকারীরা প্রায়শ: এসব শিশুদের তাদের নাগালে নিয়ে নেন। অবিবাহিত কোনো নারীর সন্তানদের দিকেও পাচারকারীদের নজর বেশি।
ভারতের পশ্চিমবাংলায় পুলিশ এক শিশু পাচারকারীর কাছ থেকে একটি শিশুকে উদ্ধার করে, এ শিশুটিকে চুরি করা হয়েছিল ক্লিনিক থেকে এবং ওই ক্লিনিকের কর্মীরা মা’কে বলেছিল তার সন্তান মৃত অবস্থায় প্রসব হয়েছে। এমনকি মৃত শিশুরও ব্যবস্থা রাখা হয় যা পরিবর্তন করে সুস্থ শিশুটিকে পাচার করে দেয়া হয়।
কর্মকর্তারা বলছেন, পাচাররোধে দত্তক তালিকার দিকে নজর ও তদারকি থাকলেও পাচারকারীরা বিভিন্ন কৌশলের আশ্রয় নেয়। দত্তকের ব্যবস্থা করে দেয় এমন একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান তার পরিচয় না দিয়ে জানান, তিনি প্রায়ই ফোন পেয়ে থাকেন যে একজন অবিবাহিত মা তার সন্তানকে তার হাতে তুলে দিতে চান। এজন্যে নির্দিষ্ট মূল্যও দাবি করা হয়।