ডেস্ক রিপোর্ট : হিন্দু ধর্মে যেকোনো পূজা-অর্চনায় দুটি ফলের দেখা পাওয়া যাবেই। একটি কলা, অন্যটি নারকেল। ঠিক কেন এই দুটি ফলই বিশেষ গুরুত্ব পায় হিন্দু সমাজে? পূর্ণঘটের উপরে নারকেল বা কলা স্থাপন হিন্দু আধ্যাত্মিকতার একটি নিয়মিত চিহ্ন। প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে এই ব্যবহার।
কেন এরা ব্যবহৃত হয় উপাসনায়? প্রশ্নের উত্তরে প্রাচীন প্রাজ্ঞরা জানিয়েছেনÑ নারকেল পূর্ণতার প্রতীক। তার শক্ত খোলস, ভিতরে নরম শাঁস আসলে মানুষের কঠিন অহং এবং কোমল হৃদয়কে প্রতীকায়িত করে। অহংয়ের খোলা ভেঙে যদি আমূল দর্শনে যাওয়া যায়, তখনই দেখা মেলে সুস্বাদু শাঁস ও জলের। এই তিন বস্তুকে আবার তম, রজঃ ও সত্ত্ব গুণের প্রতীকও ভাবা হয়। কঠিন খোলসটি তামসিক, তাকে পেরলে স্বাদু শাঁসটি রাজসিক এবং তা অন্দরে থাকা জলটি সাত্ত্বিক। অনেকে আবার একে অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যতের সঙ্গেও তুলনা করেন।
নারকেলের উপরে তিনটি চোখকে ত্রিনেত্র হিসেবেও জ্ঞান করেন অনেকে। অন্যদিকে কলা এমনই এক ফল, যার পুরো গাছটাই হিন্দু উপাসনায় ব্যবহৃত হয়। কার্যত কলাগাছের কোনো অংশকেই ফেলে দেওয়া যায় না। প্রাচীন আর্য সমাজে কদলিবৃক্ষের ফল খাওয়া হতো, কদলিপত্রে আহার করা হতো, অপরিণত কদলি বা মোচা দিয়ে তরকারি রান্না করা হতো, থোড় কাজে লাগত আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরিতে। কলাগাছের বাকল গবাদিপশুর আহার ছিল। কলাপাতা পুড়িয়ে ক্ষার তৈরি করে তাতে কাপড়কাচা, গাত্রমার্জনাÑ সবই চলত। এমন এক উপযোগী বৃক্ষকে পবিত্রতার প্রতিক মনেকরা হয়। পবিত্রতার প্রতিক হিসেবে পূজা-অর্চনায় কলা ও কলাগাছ ব্যবহৃত হয়।