জঙ্গি মা-ই এতিম করলো শিশুকন্যাকে একে নিয়ে আমি কোথায় যাব? নানার আর্তি
মাসুদ আলম: দক্ষিণখান আশকোনায় জঙ্গি আস্তানায় আহত শিশুটির নানা শাহে আলম চৌকিদার সংবাদ পেয়ে বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছিলেন নাতনিকে দেখতে । এ সময় তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, শিশুটির বাবা ইকবাল আগেই মারা গেছেন। ভোলার লালমোহনে শিশুটির চাচারা থাকেন। তাদের আর্থিক অবস্থা খারাপ। ইকবালের মৃত্যুর পর সাকিরা সুমনকে বিয়ে করেন। এছাড়া শাহে আলমের আর্থিক অবস্থাও ভালো নয়। মেয়ের কৃতকর্মের জন্য তিনি নিজেই একঘরে হয়ে আছেন। সমাজে কিভাবে মুখ দেখাবে। শিশুটি নানার কাছে গিয়ে ভালোভাবে বড় হয়ে উঠতে পারবে কি না, তাও শঙ্কা আছে। কী করবেন ভেবে পাচ্ছেন না তিনি। সাবিনার মা-ই ওরে এতিম করল। আল্লাহ ছাড়া আর কে থাকল ওর? নাতনিরে দেইখা আর মন মানাইতে পারতেছি না। সাকিরার প্রতি ঘিন্না ছাড়া আর কিচ্ছু নাই। ছোট বাচ্চারে কলঙ্ক দিয়া গেল। সাবিনা যেইখানে যাবে মানুষ মনে করাইয়া দিব যে ওর মা কী ছিল। স্কুল-কলেজ-বিয়া সবই এই কলঙ্ক থাকলো। শুধু মা মা বলে ডাকে শুধু। এদিন তিনি লাশ শনাক্ত করেন।
দক্ষিণখান আশকোনায় আত্মঘাতী বিস্ফোরণে নিহত জঙ্গি সাকিরার মেয়ে সাবিনা গুরুতর আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পোস্ট অপারেটিভ ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তবে তার শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতি হলেও এখনো শঙ্কা কাটেনি। পুরোপুরি সুস্থ হতে আরও সময় লাগবে। শিশুটি মা মা বলে কান্না করতে থাকে। পুলিশ তাকে নতুন জামাও কিনে দিয়েছে। শিশুটির আপনজন বলতে পুলিশ, ডাক্তার, নার্স আর আয়া। মা-বাবা-ভাই-বোন-আত্মীয়-স্বজন কেউ কাছে নেই। যন্ত্রণায় মলিন মুখ।
ঢামেক হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. মোসা: জেসমিন নাহার বলেন, শিশু সাবিনার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে ভাল। তবে আশঙ্কামুক্ত বলা যাবে না। তার শারীরিক অবস্থা বুঝতে আরও ৫-৬ দিন লাগবে। মেয়েটি স্বাভাবিকভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছে। আমাদের সঙ্গে কথাও বলছে। তাকে দেখে আগের থেকে অনেক স্বাভাবিক মনে হয়েছে। শিশুটির পেটে অস্ত্রোপচারের কারণে মুখে এখন কোনো খাবার দেয়া হচ্ছে না। শুধুমাত্র তরল খাবার স্যালাইন ও ওষুধ দেয়া হচ্ছে। জরুরি বিভাগের চতুর্থ তলার পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছে সাবিনা। শিশুটির বুকের চামড়ার ওপর আঘাত আছে। তার বাম হাত ভাঙা। তবে পেটের আঘাত গুরুতর। তিনি আরও বলেন, পেটে স্পিøন্টার ঢুকে খাদ্যনালীর কয়েক জায়গায় ফুটো হয়ে গেছে। অনেকগুলো গুরুতর অপারেশন করে সেগুলো বের করা হয়েছে। সম্পাদনা: আজাদ হোসেন সুমন