বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান নিয়ে কনফেডারেশন হলে এ অঞ্চলের দারিদ্র্য দূর হবে : কুলকার্নি
ইমরুল শাহেদ: বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, কলাম লেখক ও অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন প্রধান সুধীন্দ্র কুলকার্নি আগস্ট ভয়েসেস নামে একটি বই লিখেছেন। বইটির আখ্যান ভাগে বলা হয়েছে, ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সীমানা ঠিক রেখে যদি তিনটি দেশের কনফেডারেশন করা যায় তাহলে এ অঞ্চলের দারিদ্র্য বিমোচন ও কাশ্মীর সমস্যার সমাধান সহজে হয়ে যাবে। গত বুধবার মুম্বাইতে বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন ভারতের ভাইস প্রেসিডেন্ট হামিদ আনসারি। তিনি বইটির মূল বিষবস্তুর সঙ্গে সহমত পোষণ করে বলেন, ‘মানুষের নিরাপত্তা সমস্যা, তাদের চলাফেরা এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের উপর অহেতুক আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে আঞ্চলিক সহযোগিতাই এখন সময়ের দাবি।’ ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সরকার ও সুশীল সমাজের কাছে আবেদন রেখে আনসারি বলেছেন, ‘সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলো নিষিদ্ধ না রেখে সচেতনভাবে তরুণ সমাজের মধ্যে তার সঞ্চারণ হওয়া প্রয়োজন। চলচ্চিত্রসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকা- বিনিময় হওয়া প্রয়োজন।’
আনসারি বলেছেন, ‘সংস্কৃতির সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলোর সহায়তায় বিচ্যুতির চাইতে এককেন্দ্রিক হওয়া অনেক সহজ।’ ঐক্যের প্রয়োজনে মানুষের নিরাপত্তা ও মানবভুলের ক্ষেত্রে প্রচলিত নিয়ম থেকে বেরিয়ে আসার উদ্যোগ নিতে হবে। এসব বিষয়গুলোই এই অঞ্চলের বিভিন্ন সরকার ও সুশীল সমাজ এরিয়ে যাচ্ছে। এগুলোর স্বীকৃতি ও কার্যকর করার জন্য সকলের সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন। তাহলেই আমরা আমাদের উপলব্ধিকে উন্নত করতে পারব এবং সঠিক পথে চলার ক্ষমতা অর্জন করতে পারব।
লেখক কুলকার্নি বলেছেন, তিনি ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদকে একীভূত করতে চেয়েছেন। ‘আমাদের এই তিনটি দেশের সরকারের উচিত অতীতের বন্দিত্বকে পরিহার করা। আমাদের উচিত আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা- যে ভবিষ্যৎ হবে শান্তির, অগ্রগতিকে ভাগাভাগি করে নেওয়া যাবে, দারিদ্র্য বিমোচিত হবে, ন্যায়বিচারসহ এই উপমহাদেশের প্রত্যেকটি মানুষ মর্যাদাবান হবে। এজন্য মানবতার প্রতি আমাদের নৈতিক দায়িত্ব থাকতে হবে। কারণ ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে বিশ্বের সর্বাধিক লোক দরিদ্র, বঞ্চিত এবং বিভিন্ন শ্রেণি গোত্রে বিভক্ত, যাদের রয়েছে ধারাবাহিক বংশানুক্রমিতা। এছাড়া ভারত, পাকিস্তান বা বাংলাদেশ- কোনো দেশই মতানৈক্য থেকে মতৈক্যে, শত্রুতা ছেড়ে সহযোগিতার পথে না এলে পুরো সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারবেন না।
কুলকার্নি বলেছেন, তার মাথায় কনফেডারেশনের ধারণাটি এসেছে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে। ‘এটা সম্ভব হয়েছিল গান্ধী ও জিন্নাহ কিছু বিষয়ে একমত হতে পেরেছিলেন বলে।’ তার বইটিতে মেনে নেওয়া হয়েছে যে, ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ- তিনটি আলাদা, স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ। এই বাস্তবতা পরিবর্তনশীল নয়। তিনটি দেশের সীমানাও তুলে দেওয়া যাবে না। সূত্র : ডন