আতঙ্কের স্মৃতি আর ফিরে আসবে না বহু দিন পর! পথ দেখালেন বাঙালি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জগৎসভায় আবার বাংলার জয়জয়কার! আবার বাজিমাত করলেন এক বাঙালি বিজ্ঞানী! নিউরো-সায়েন্স বা স্নায়ুবিজ্ঞানের কঠিনতম গবেষণায়। যা দেখিয়ে দিল অতীতের আতঙ্ককে পুরোপুরি মুছে ফেলার পথ।
অতীতে যে ঘটনায় আপনি দারুণ ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন, সেই আতঙ্কের স্মৃতি আর আপনাকে বয়ে বেড়াতে হবে না আজীবন! রোজ রাতে কারণে-অকারণে সেই স্মৃতি আর ফিরে ফিরে এসে আমার-আপনার রাতের ঘুম কেড়ে নিতে পারবে না! অতীতের সেই গায়ের লোম খাড়া করে দেওয়া আতঙ্ককে এ বার বাকি জীবনে আর বয়ে বেড়াতে হবে না। গা ছমছমে ভয়ের স্মৃতিকে এ বার ‘গুড বাই’ জানানো যাবে, চিরতরেই।
ভিজে ন্যাকরা দিয়ে ছোটবেলায় শ্লেটে আমরা যেমন মুছে ফেলতাম চকখড়ির দাগ, সেই শ্লেটকে চকখড়ির আঁচড় লাগার আগেকার মতো করে তুলতাম ঝকঝকে, ঠিক তেমন ভাবেই আমাদের মস্তিষ্ক থেকে সরিয়ে ফেলা যাবে আতঙ্কের স্মৃতি।
অতীতের আতঙ্ককে একেবারে ‘মুছে ফেলা’র একটি অত্যাশ্চর্য পথ খুঁজে বের করে চমকে দিলেন এক বাঙালি নিউরো-সায়েন্টিস্ট। সুমন্ত্র চট্টোপাধ্যায়। কলকাতার সন্তান সুমন্ত্র বেঙ্গালুরুর ‘দ্য ইনস্টিটিউট ফর স্টেম সেল বায়োলজি অ্যান্ড রিজেনারেটিভ মেডিসিনে’র ‘সেন্টার ফর ব্রেন ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিপেয়ার’-এর অধিকর্তা। ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস’ (এনসিবিএস)-এরও বিশিষ্ট অধ্যাপক। তার গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘ফিজিওলজিক্যাল রিপোর্টস’-এ। গবেষণাপত্রটির শিরোনাম- ‘দ্য ডিলেইড স্ট্রেংদেনিং অফ সিন্যাপটিক কানেক্টিভিটি ইন দ্য অ্যামিগডালা ডিপেন্ডস অন এনএমডিএ রিসেপ্টর অ্যাক্টিভেশন ডিওরিং অ্যাকিউট স্ট্রেস’।
বায়োটেকনোলজি মন্ত্রক ও পরমাণু শক্তি মন্ত্রকের তত্ত্বাবধানে ওই সাড়াজাগানো গবেষণায় সুমন্ত্র দেখিয়ে দিতে পেরেছেন, কোনও একটি ঘটনায় আতঙ্কে গায়ের লোম খাড়া হয়ে যাওয়ার বেশ কিছু দিন পর কেন হঠাৎ করেই সেই স্মৃতি আমাদের মগজে ফিরে আসে। আর সেই স্মৃতি কেনই-বা আজীবন আমাদের তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায়, কেনই-বা রাতের ঘুম কেড়ে নেয় আমাদের। সুমন্ত্রের কৃতিত্ব এটাই যে, সেখানেই থেমে থাকেননি তিনি। সেই আতঙ্কের স্মৃতিকে যাতে আর আজীবন বয়ে বেড়াতে না হয় আমাদের, তারও পথ খুঁজে বের করেছেন তিনি। যে পথ ধরে এক দিন এমন ওষুধ বা চিকিৎসা পদ্ধতি আমাদের হাতে এসে যাবে, যাতে ভিজে ন্যাকরা দিয়ে শ্লেটে চকখড়ির দাগ মুছে ফেলার মতো অতীতের ফিরে ফিরে আসা আতঙ্কের স্মৃতিকে ‘মুছে ফেলা’ যাবে পুরোপুরি। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ