২০১৬ সাল ছিল ঘটনাবহুল হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলা, মিতু-তনু হত্যা ও খাদিজা হত্যাচেষ্টা টপ অব দ্য কান্ট্রি
আজাদ হোসেন সুমন ও সুজন কৈরি: ২০১৬ সাল ছিল ঘটনাবহুল একটি বছর। শত ঘটনার মাঝে চারটি অপরাধের ঘটনা গোটা দেশ কাঁপিয়েছে। এগুলো হচ্ছে ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলা, চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার বাবুলের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা, কুমিল্লায় ভিক্টোরিয়া কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যা ও সিলেটে কলেজছাত্রী খাদিজা হত্যাচেষ্টা। অন্যান্য ঘটনাবলী ছাপিয়ে অফিস-আদালত থেকে শুরু করে ফুটপাতের চায়ের কাপেও ছিল উল্লেখিত ঘটনাগুলো নিয়েই আলোচনা।
গুলশানে হলি আর্টিজানে হামলা:
গুলশানের ৭৯ নং সড়কে লেকপাড়ে অবস্থিত হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় ওই দিন (১ জুলাই) ইফতারের পর জঙ্গিরা প্রবেশ করে এবং ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি দিয়ে গুলি ছুঁড়তে থাকে। এছাড়া ১০ থেকে ১২টি বোমার বিস্ফোরণও ঘটায় জঙ্গিরা। জিম্মি করা হয় ৫০ জনের মতো দেশি-বিদেশি নাগরিককে। হামলার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে হাজির হয় র্যাব-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। জঙ্গিদের ছোড়া গ্রেনেড ও গুলিতে নিহত হন পুলিশের দুই সাহসী কর্মকর্তা বনানী থানার ওসি সালাহউদ্দিন মিয়া ও গোয়েন্দা বিভাগের সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলাম। পাশাপাশি অর্ধশত পুলিশ ও র্যাব সদস্য আহত হন। যাদের অনেকেই এখনও সুস্থ হননি। এরপর থেকেই থেমে থেমে চলতে থাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে জঙ্গিদের গোলাগুলি। যার সমাপ্তি ঘটে পরদিন সকালে চালানো কমান্ডো অভিযানের মাধ্যমে। অভিযানে নিহত হয় হামলাকারী পাঁচ জঙ্গি ও হলি আর্টিজানের এক বাবুর্চি। তবে এর আগেই জঙ্গিরা নৃশংসভাবে হত্যা করে ইতালির ৯, জাপানি ৭, ভারতীয় ১ ও বাংলাদেশের ৩ জন নাগরিককে। নিহত ইতালির নাগরিকরা হলেন- বারিধারাভিত্তিক ইতালীয় বায়িং হাউজ স্টুডিও টেক্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাদিয়া বেনেদিত্তো, গুলশান ২ নম্বরের আরেক ইতালীয় বায়িং হাউজ ডেকাওয়ার্ল্ডের প্রাইভেট লিমিটেডের এমডি ভিনসেনজো দ আলেস্ত্রো, ক্লদিও মারিয়া দান্তোনা, সিমোনা মন্টি, মারিয়া রিবোলি, আডেলে পুগলিসি, ক্লদিও চাপেলি, ক্রিস্টিয়ান রোসিস ও মারকো তোনডাট। অপরদিকে নিহত সাত জাপানি হলেন, তানাকা হিরোশি, ওগাসাওয়ারা, শাকাই ইউকু, কুরুসাকি নুবুহিরি, ওকামুরা মাকাতো, শিমুধুইরা রুই ও হাশিমাতো হিদেইকো। তাদের মধ্যে ৬জন ঢাকার মেট্রোরেল প্রকল্পের সমীক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। নিহত ভারতীয় নাগরিক হলেন- তারিশা জেইন। এছাড়া নিহত তিনজন বাংলাদেশী হলেন- এলিগেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যানের মেয়ে অবিন্তা কবীর, ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের নাতি ফারাজ হোসেন ও ডেএক্সওয়াই ইন্টারন্যাশনালের মানব সম্পদ বিভাগের পরিচালক ইশরাত আখন্দ। এ হামলায় গোটা দেশ কেঁপে উঠে। সারাবিশ্বেও বিষয়টি আলোচিত হয়। স্মরণকালের ভয়াবহ এই জঙ্গি হামলার রেশ ধরে পুলিশ একযোগে মাঠে নামেমাত্র, তিন মাসের মাথায় পুলিশ কমপক্ষে ১০ সফল অভিযান পরিচালনা করে। এতে কমপক্ষে ৪৩ জন কুখ্যাত জঙ্গি নিহত হয়।
তনু হত্যা: গত ২০ মার্চ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর লাশ উদ্ধার করা হয় কুমিল্লা সেনানিবাসের বাঁশঝাড় থেকে। পরদিন তনুর বাবা বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পরই তনু হত্যার প্রতিবাদে সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ হচ্ছে। সেনানিবাস এলাকার মতো স্পর্শকাতর স্থানে এই হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটায় মানুষের মধ্যে নানা প্রশ্নের জন্ম দেয়। এই হত্যাকা-ের প্রতিবাদে রাজধানীতেও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সে আশ্বাস দেয়া হয়। সিআইডি পুলিশ ডিএনএ পরীক্ষায় তনু ছাড়াও ৩ জনের আলামত পায়। ধারণা করা হয় ৩ ব্যক্তি তনুকে ধর্ষণের পর লাশ সেখানে ফেলে রাখে। মামলার তদন্ত করছে সিআইডি। কিন্তু কোনো অগ্রগতি নেই প্রকৃত ধর্ষণ বা হত্যকারীদের তারা চিহ্নিত করতে না পারায় এ চাঞ্চল্যকর মামলাটি ঘিরে দেশবাসীর মনে সন্দেহ ও সংশয় রয়ে গেছে। এ ব্যাপারে তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন, বিচার যে আমি পাবনা সেটা বুঝতে এখন বাকী নেই। এ মামলার কোনো অগ্রগতি দেখছি না। এখন পর্যন্ত একজন আসামিও গ্রেফতার হয়নি। আসামি শনাক্তও হয়নি। মামলার চার্জশিট ও (অভিযোগপত্র) দেওয়া হয়নি। মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি ৩ ডিসেম্বর আমাদের ঢাকায় ডেকে নেয়। সেখানে নানা বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। মামলা নিয়ে সিআইডি কয়, ধৈর্য ধরতাম, আশা রাখতাম। আমারে কয়, আপনি বেশি কথা বলেন। মেয়ে মারা গেছে আমার, কথা তো আমারেই কইতে অইব। মামলা নিয়ে সিআইডির ৩ তারিখের পর আর কোনো তৎপরতা দেখিনি।
সিআইডি পুলিশ শুধু সময়ক্ষেপন করে আর আমাকে সান্ত¡না দেয়। এই বিচার আমি আল্লার কাছে দিয়ে রাখলাম মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, মেয়ের বিচারের জন্য যারা মাঠে আন্দোলন করেছেন, পত্রিকা ও টিভি চ্যানেল ভূমিকা রেখেছেন, তা কোনো দিন ভুলব না। দেশবাসী আমার মেয়ের জন্য অনেক কিছু করেছে।
খাদিজা হত্যার চেষ্টা: গত ৩ অক্টোবর সিলেটে কলেজছাত্রী খাদিজাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করে বদরুল নামের এক বখাটে। তাৎক্ষণিকভাবে একমাত্র আসামিকে কলেজের অন্য ছাত্ররা বদরুলকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। খাদিজাকে প্রথমে সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর তাকে ঢাকার স্কয়ায় হাসপতালে প্রায় ১ মাস চিকিৎসার পর সাভারের সিআরপিতে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে। খাদিজা বেঁচে আছে। সে শঙ্কামুক্ত হলেও সে এখন জীবন্ত লাশ। একপাশ এখনো অবশ। এই ঘটনায় সিলেট উত্তাল হয়ে উঠে। বিষয়টি সারা দেশে টক অব দ্য কান্ট্রিতে পরিণত হয়। সাধারণ মানুষ ঘৃণা জানায় বদরুলকে। পক্ষান্তরে খাদিজার জন্য মসজিদে-মন্দিরে দোয়া প্রার্থনা করা হয়। অবশেষে বদরুল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। আদালতে বিচারটি বিচারাধীন রয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে খাদিজার বাবা মাসুক মিয়া বলেন, প্রায়ই এখন বাড়িতে যাওয়ার জন্য আবদার করে। সে তার বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনদের দেখতে চায়। কিন্তু চিকিৎসা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তো তাকে বাড়িতে নিয়ে যেতে চিকিৎসকদের বারণ রয়েছে। চিকিৎসকরা যখনই তাকে ছাড়পত্র দেবেন, তখনই তাকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে। তবে মেয়েটা পুনরায় নতুনভাবে তার জীবন শুরু করার স্বপ্ন দেখছে। আবার স্বাভাবিকভাবে সে জীবন শুরু করতে চাইছে। সে আবার কলেজে যেতে চায়, আবার ভালো করে পড়াশোনা করতে চায়। আগামী ৮ জানুয়ারি খাদিজাকে সিলেটের আদালতে নিয়ে যাওয়া হতে পারে বদরুলের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় সাক্ষী দেওয়ার জন্য। তবে খাদিজার শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে খাদিজাকে বিমানযোগে সিলেটে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন আইনজীবী, পিপিসহ আদালত-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এ সময় চিকিৎসকরা যদি তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে অনুমতি দেন, তাহলে সামান্য সময়ের জন্য তাকে বাড়িতেও নিয়ে যেতে পারি। তবে সেটা নির্ভর করছে খাদিজার শারীরিক অবস্থার ওপর।
মিতু হত্যা: চাঞ্চল্যকর পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে গত ৫ জুন চট্টগ্রামে কুপিয়ে হত্যা করে দুবৃর্ত্তরা। এই ঘটনায় পুলিশ ৯ জনকে গ্রেফতার করে। এর মধ্যে শাহ আলম ও মুরাদ নামে ২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়। চট্টগ্রাম পুলিশের একটি টিম এবং ঢাকার ২ ডিআইজি পদ মর্যাদার কর্মকর্তা ২৩ জুন বাবুল আক্তারকে ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এরপর বাবুল আক্তার রহস্যজনভাবে চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। গ্রেফতারকৃত আসামিদের দেওয়া জবানবন্দী মতে বাবুল আক্তারের সোর্স মুসার নেতৃত্বে মিতুকে হত্যা করা হয়। এ সংক্রান্ত অপ্রকাশিত তথ্য চট্টগ্রাম গোয়েন্দা পুলিশের কাছে আছে। এসপি বাবুল ও তার সোর্স মুসার কললিস্ট ও কথোপকথনের রেকর্ড রয়েছে পুলিশের কাছে। কিন্তু মিতুর বাবা বাবুলের অন্ধভক্ত। তিনি বিশ্বাস করেন না বাবুল আক্তার তার মেয়েকে হত্যা করেছে। অবশ্য হত্যার নেপথ্য ঘটনাও জানতে বা প্রকৃত হত্যাকারীর বিচারেও তাকে এ পর্যন্ত আগ্রহী হতে দেখা যায়নি। গতকাল এ প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের জবাবে মিতুর বাবা বলেন, বাবুল আক্তার আগের মতই আছেন খাচ্ছেন, ঘুমাচ্ছেন, নামাজ পড়ছেন আর বাচ্চাদের নিয়ে সময় কাটাচ্ছেন।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানাগেছে, বাবুল আক্তার নিজেই তার স্ত্রী মিতুকে খুনের সিদ্ধান্ত নেন। এই খুনের দায়িত্ব দেন তার দীর্ঘদিনের সোর্স মুসাকে। মুসা বাবুল আক্তারের স্ত্রীকে চিনতেন না। বাবুল এ সুযোগটি কৌশলে কাজে লাগায়। তিনি মুসাকে বলেন, একজন মহিলা জঙ্গি তৎপরতায় লিপ্ত। সে প্রতিদিন ছেলেকে নিয়ে স্কুলে যায়। ওইসময় তাকে খুন করতে হবে। তা না হলে চট্টগ্রামে জঙ্গি তৎপরতা বেড়ে যাবে। এই খুনের জন্য সরকারের তরফে ৭ লাখ টাকা পুরস্কার দেয়ারও প্রলোভন দেখানো হয় সোর্স মুসাকে।
সে মোতাবেক ঘটনার ১৫ দিন মুসা নিজ বাসায় তার পরিচিত ভাড়াটে কিলার ওয়াসিম, নবী, আনোয়ার, এহতেশাম ভোলা, শাহজাহান, কালু ও মনিরকে নিয়ে মিতুকে হত্যার পরিকল্পনা করে। কিলিং মিশনে কার অবস্থান কোথায় হবে এবং কে প্রথম হিট করবে সে সম্পর্কেও মুসা দিক-নির্দেশনা দেয় কিলার গ্রুপটিকে। বৈঠক শেষে হাত খরচ হিসেবে প্রত্যেক কিলারকে নগদ ২ থেকে ৩ হাজার টাকা দেয় মুসা। অপারেশনের পর মোটা অঙ্কের টাকা দেওয়া হবে বলে জানায় মুসা। ভোলা নামের একজন আর্মস স্মাগলারের কাছ থেকে মুসা আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহ করে কিলার গ্রুপটিকে দেয়। খুনের আগের দিন সকালে মুসা ঘটনাস্থল রেকি করে। এরপর ৫ জুন রোববার খুনের দিনক্ষণ ঠিক করে কিলাররা। পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার পর মুসা ৪ জুন শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটায় ঢাকায় এসপি বাবুল আক্তারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে। ওইসময় বাবুল আক্তার অন্য সেল ফোন ব্যবহার করে, এসময় মুসা কিভাবে মিতুকে হত্যার একটি ছকও বাবুল আক্তারকে জানায়। বাবুল আক্তার ‘ঠিক আছে’ বলে লাইন কেটে দেন। এরপর পরিকল্পনা অনুযায়ী ৫ জুন মিতুকে হত্যা করার পর মুসা বাবুল আক্তারকে মোবাইল ফোনে অপারেশন সাকসেস হওয়ার কথা জানিয়ে দেয়। বাবুল আক্তার এসময় ‘ওকে’ বলে ফোনের লাইন কেটে দেন।
ঘটনার সময় চট্টগ্রাম মহানগর বন্দর থানার ওসি মহিউদ্দিন সেলিম ব্যক্তিগত কাজে সিঙ্গাপুরে ছিলেন। তিনি দেশে ফেরার পর পুলিশের ঊর্র্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাকে ডেকে পাঠান। মহিউদ্দিন সেলিম দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম বেল্টে ওসি’র দায়িত্ব পালন করেছেন। অপরাধ জগতের অনেক হোতাকেই তিনি চিনতেন। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ওসি মহিউদ্দিন সেলিমকে খুনিদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করার দায়িত্ব দেন। এরপরই মহিউদ্দিন সেলিম মাঠে নামেন। ২১ জুন বন্দরনগরী থেকে প্রথম আটক করা হয় মূল হোতা মুসাকে। তার আটকের ঘটনাটি এসপি বাবুল আক্তার জানতে পারেন। তিনি মুসাকে ছেড়ে দেয়ার জন্য ওসি মহিউদ্দিন সেলিমকে বলেন। এসময় মহিউদ্দিন সেলিম বাবুল আক্তারকে জানান, ‘স্যার, আমি একটি অভিযানে ব্যস্ত আছি, আপনাকে পরে ফোন দিচ্ছি। পরে মুসাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মিতুর কিলার গ্রুপের সদস্য নবী, আনোয়ার, ওয়াসিম, মনির, এহতেশামুল ভোলাসহ অন্যদের ধরা হয়। গ্রেফতারকৃতরা চট্টগ্রাম গোয়েন্দা পুলিশকে জানায়, তারা এসপি বাবুল আক্তারের নির্দেশে মিতুকে খুন করেছে। এসব জানার পরই পুলিশের শীর্ষ পর্যায়ের কর্তাব্যক্তিরা বৈঠকে বসেন। সরকারের নীতি নির্ধারক মহলকেও ঘটনাটি জানানো হয়। পুলিশের ওই বৈঠকে পর্যালোচনা করা হয় এসপি বাবুল আক্তারের ঘটনাটি জনসমক্ষে প্রকাশিত হলে পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মুসাকে আজ পর্যন্ত পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি বলে দাবি পুলিশের। কিন্তু গুঞ্জন আছে পুলিশ মুসাকে গ্রেফতার করে ক্রসফায়ারে দিয়েছে-কারণ মুসা এই ঘটনা আদ্যোপান্ত জানে। এতে থলের বেড়াল বেরিয়ে পড়ার আশঙ্কায় পুলিশ সবকিছু প্রকাশ করছে না। মিতু হত্যায় সন্দেহের তীর তার স্বামী বাবুল আক্তারের দিকে থাকলেও বাবুল মিতুর বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। হত্যা মামলাটি রহস্যের বেড়াজালেই রয়ে যায়। বাবুল আক্তার পুলিশ বাহিনী থেকে চাকরি হারিয়ে এখন সম্প্রতি আদদ্বীন হাসপাতালে যোগদান করে।