এল আর বাদল: দুই বছর চার মাস, এই সময়টা লাল-সবুজের দেশটা ছিল ক্রিকেটে ‘ধবল ধোলাইমুক্ত’। দেশের মাটিতেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে জয়-জয়কার ছিল বাংলাদেশ। ২০১৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়ে ওয়ানডে সিরিজের সব ম্যাচই পরাজয় স্বীকার করে টাইগারবাহিনী। এরপর ধারাবাহিক সাফল্যে থেকে বাংলাদেশের কেটে যায় দুই বছর চার মাস। যে দলের বিরুদ্ধে এখন খেলছে, সেই নিউজিল্যান্ডকে দু-দুবার বাংলাওয়াশ করেছিল টাইগাররা। এবার নিউজিল্যান্ডে খেলতে গিয়ে তাদের কাছে ধবলধোলাই হয়ে পুরনো লজ্জাটা নতুন করে ফিরে এলো।
প্রায় আড়াই বছরের সাফল্যের গল্পটা মনে করে ক্রিকেটাররা স্বস্তি পেলেও এদেশের মানুষ থাকতে চায় বর্তমানে। কিন্তু গতকাল মানরক্ষার লড়াইয়ে নেমে ৮ উইকেটে ম্যাচ হেরে ধবলধোলাইয়ের স্বাদ নিয়ে বর্তমানটাকেই বিবর্ণ করে দিল মাশরাফিরা। নিউজিল্যান্ড কন্ডিশনে ম্যাচ জেতা কষ্টের, এটা যে কেউ স্বীকার করবে। কিন্তু হারের একটা সম্মান আছে, সিরিজের তিন ম্যাচ বাংলাদেশ যেভাবে হেরেছে, সেটাকে অসহায় আত্মসমর্পণই বলতে হয়। তিন ম্যাচের একটি ম্যাচ নিয়েও বাংলাদেশের মিডিয়ার লেখার সুযোগ হয়নি যে, বাংলাদেশ দুর্দান্ত খেলে হেরেছে। এত হার নয়, যেন কানের পাশ ঘেঁষে গুলি যাওয়ার মতো। তিনটি ম্যাচেই এদেশের ক্রিকেট দর্শকদের চোখে যন্ত্রণা বেড়েছে। তবে গতকাল নেলসনের মাঠে তৃতীয় ম্যাচটি নিয়ে আশাবাদী ছিল ক্রিকেটার থেকে শুরু করে দেশের ক্রিকেট বোদ্ধারা। কিন্তু কে শোনে কার কথা। এই ম্যাচেও পরাজয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রাখলো টাইগার সেনারা। লজ্জা এড়ানোর ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে পাত্তাই পেল না মাশরাফির দল। হারল ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে।
বাংলাদেশের দেওয়া ২৩৭ রানের লক্ষ্য কেন উইলিয়ামসের ৯৫ রানের ইনিংসে সহজ হয়ে যায় নিউজিল্যান্ডের জয়। তবে শুরুতেই উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। কিউই শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন মুস্তাফিজই। নিজের প্রথম ওভারেই এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন লাথামকে। ইনজুরির কবলে পড়ে মাঠ ছাড়েন গাপটিল। এরপর নীল ব্রুম ও কেন উইলিয়ামসন দলকে টেনে নিতে থাকেন। নিউজিল্যান্ডের ইনিংসের ৩৫তম ওভারে ভয়ংকর হয়ে উঠা নীল ব্রুমকে আউট করেন এই কাটার মাস্টার। মাশরাফির তালুবন্দি হওয়ার আগে সেঞ্চুরি থেকে মাত্র তিন রান দূরে ছিলেন নিল ব্রুম। তবে শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেট হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় নিউজিল্যান্ড।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৩৬ রান তুলেছে মাশরাফিরা। নেলসনের স্যাক্সটন ওভালে তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েসের ১০২ রানের ওপেনিং জুটিতে দুর্দান্ত সূচনা পায় বাংলাদেশ। কিন্তু‘ মাঝ পথে ধস নামে টপঅর্ডারে। ১৭৯ রানে সাত উইকেট হারিয়ে বসে। শেষ দিকে নুরুল হাসান সোহানের ৪৪ ও মাশরাফি বিন মর্তুজার ব্যাটে আসা ১৮ রানের ইনিংসে মাঝারিমানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ। এর মাঝে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৩৪তম অর্ধশতক তুলে নেন ওপেনার তামিম ইকবাল। দলীয় ১০২ রানে প্রথম উইকেট হিসেবে ইমরুল কায়েসের বিদায়ের পর বালুর বাঁধের মতো ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের টপঅর্ডার। সম্পাদনা: নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী