জাতীয় প্রেসক্লাবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির জয় প্রমাণ করেছে সমাজে পরিবর্তন হচ্ছে : ফরিদা ইয়াসমিন
উম্মুল ওয়ারা সুইটি: জাতীয় প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন গতকাল নির্বাচনোত্তর সাক্ষাৎকারে বলেন, আমার এই জয় প্রমাণ করে নারীর ক্ষমতায়নে যোগ্যতাই বেশি মূল্যবান। যোগ্যতা থাকলে নারী-পুরুষের বৈষম্য কাজ করে না। নারী বলে পিছিয়ে থাকার কোনো সুযোগ নেই। একজন প্রার্থী নারী বা পুরুষ তা গুরুত্বপূর্ণ নয়, আসলে তার নেতৃত্বের যোগ্যতা রয়েছে কিনা এবং তিনি পেশাদার কিনা সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, নারীদের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আসার বিষয়টি অন্য নারীদের জন্য অনুপ্রেরণার বিষয় হয়ে থাকবে। নারীরা পিছিয়ে থাকবেন না। আমার এ বিজয় থেকে সাংবাদিকসহ অন্যান্য ক্ষেত্রের নারীরা প্রত্যয়ী হবেন। তারা জানবেন, প্রতিযোগিতায় নারীর পাশে পুরুষরা অবশ্যই আছে।
তিনি বলেন, যখন প্রেসক্লাবে প্রথম সদস্য পদে নির্বাচন করেন তখন ক্লাবে মাত্র ২০জন নারী সদস্য ছিলেন। এখন অনেক বেড়েছে। তখনো নারী-পুরুষ সব সহকর্মীদের ভোটেই তিনি তিনবার প্রেসক্লাব ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এবং একবার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় তিনি এবার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।
তিনি তার এই জয়কে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার জয় বলে মনে করেন। তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতেন এবং তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে ধারাকে অব্যাহত রেখেছেন এ জয় তাদের জন্য উৎসর্গ করলাম। আমরা চাই প্রেসক্লাব মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় পরিচালিত হবে।
আগামী দুই বছর প্রেসক্লাবে কাজের পরিকল্পনা সম্পর্কে ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ক্লাবের প্রেসিডেন্ট শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত নতুন কমিটিকে নিয়েই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করব। আমার পরিকল্পনাগুলো তাদের সঙ্গে আলোচনা করব। সমন্বয় এবং মেলবন্ধন ঘটাতে চাই তৃণমূলের সাংবাদিকদের সঙ্গে ঢাকার সাংবাদিকদের।
অন্যান্য দেশের প্রেসক্লাবের সঙ্গে আমাদের প্রেসক্লাব সদস্যদের সঙ্গে পারস্পরিক বিষয় নিয়ে মতবিনিময়ের উদ্যোগ নিতে চাই। প্রেসক্লাব এবং এই পেশার মান উন্নয়নে কাজ করতে চাই। আর শিল্প সংস্কৃতি, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাস যেন সমাদৃত হয় সেজন্য সভা-সেমিনার, সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করব। এসব কাজগুলো বেশিরভাগই তরুণ সাংবাদিকদের জন্য করা হচ্ছে। যারা সিনিয়র তাদের সঙ্গে তরুণদের সমন্বয় করেই এগিয়ে যাবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। তিনি বলেন, শফিকুর রহমানের নেতৃত্বাধীন বিগত কমিটির কাজ ৩১ তলাবিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু মিডিয়া কমপ্লেক্স যার ভিত স্থাপন করেছেন শেখ হাসিনা সেটির বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করব।
ক্লাবের নতুন সদস্য পদের বিষয়ে বলেন, গত দুই বছরে ক্লাবে ৬ শতাধিক সাংবাদিককে স্থায়ী সদস্যপদ দেওয়া হয়েছে। তারা তো থাকবেনই, পাশাপাশি সব পেশাদার সাংবাদিক যেন সদস্যপদ পান সেই চেষ্টাই আমরা করব।
সাংবাদিক হিসেবেই নারীদের সাহসী হতে এই জয় সহায়ক হবে কিনা এই প্রশ্নে ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, এই জয় বলে দিচ্ছে, সমাজের মানসিকতা বদলেছে। বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নে যে অবস্থানে পৌঁছেছে নারীর এই নিজ দক্ষতায় এগিয়ে যাওয়া এর পিছনের অন্যতম কারণ।
ফরিদা ইয়াসমিন তাকে বিজয়ী করার জন্য ক্লাবের সব সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান। সম্পাদনা: বিশ্বজিৎ দত্ত