পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্প তত্ত্বাবধানে সেনাবাহিনী
আনিসুর রহমান তপন : পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব পেয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন কনসালটেন্ট (সিএসসি)। এ কাজে সিএসসিকে সহযোগিতা করবে বুয়েটের বিআরটিসি (ব্যুরো অব রিসার্চ টেস্টিং অ্যান্ড কনসালটেন্ট)।
এ বিষয়ে গতকাল রোববার রেলভবনে সিএসসির সঙ্গে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের একটি চুক্তি হয়। রেলওয়ের পক্ষে রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক সুকুমার ভৌমিক ও সেনাবাহিনীর পক্ষে প্রকল্প ব্যবস্থাপক কর্নেল আবুল কালাম আজাদ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এসময় রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক ও সেনাপ্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক উপস্থিত ছিলেন।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের জন্য সিএসসিকে সুপারভিশন পরামর্শক হিসেবে নিয়োগের বিষয়টি গত ২০ ডিসেম্বর সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সায় পায়। এ কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৪১ কোটি টাকা। পরামর্শক সেবাকাল ২ হাজার ১০০ দিন। এই সেবার আওতায় সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সদস্যরা ঠিকাদারের দাখিল করা নকশা যাচাই করে এর অনুমোদন দেবেন। এছাড়া রেলের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ, সাইট ক্লিয়ারেন্স এবং পুনর্বাসন কার্যক্রমে সহায়তা ও তদারকি করবে।
দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে নির্মাণকাজ সুষ্ঠু তদারকিসহ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণসহ যোগ্যতা বৃদ্ধি করা পরামর্শক সেবার মধ্যে রয়েছে।
চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, পদ্মা সেতুতে একইসঙ্গে রেল চলাচলের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সঠিক সময় নির্মাণকাজ শেষ করতে পরামর্শক কাজ সেনাবাহিনীকে দেওয়া হয়েছে।
সেনাপ্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক বলেন, এরইমধ্যে সেনাবাহিনীর কাছে ন্যস্ত পদ্মা বহুমুখী সেতুর ৩টি প্রকল্পের মধ্যে দুটি প্রকল্প যথাসময়ে সম্পন্ন করে বাংলাদেশ ব্রিজ অথরিটির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সিএসসির কর্মদক্ষতা ও পেশাদারিত্বের নতুন মাইল ফলক রচিত হয়েছে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন রেলসচিব ফিরোজ সালাউদ্দিন, রেলওয়ের মহাপরিচালক আমজাদ হোসেন প্রমুখ।
বহু প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতুর মূল কাঠামোর নির্মাণ কাজ চলছে এখন। ২০১৮ সাল নাগাদ এই সেতু চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া যাবে এবং ওই সময় পদ্মা সেতুতে ট্রেন চলাচলও শুরু করা সম্ভব হবে বলে আশা করছে সরকার।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণে গত আগস্টে চীনের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে রেলপথ মন্ত্রণালয়। এ প্রকল্পের আওতায় ১৪টি নতুন স্টেশন ভবন ও ৬টি স্টেশন পুনর্নিমাণ, ৬৬টি গুরুত্বপূর্ণ সেতু এবং ২৪৪টি ছোট সেতু নির্মাণ, ১০০টি নতুন রেলকোচ কেনা এবং আধুনিক সিগন্যাল সিস্টেমের জন্য অপটিক্যাল ফাইবার লাইন স্থাপন করা হবে। সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী