সংসদ সদস্য হত্যা ঘটনায় গ্রেফতার ১৮ লিটন হত্যা সন্ত্রাসীদের নতুন ডাইমেনশন : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
আনিসুর রহমান তপন: গাইবান্ধা-১ আসনের সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনকে হত্যার ঘটনাটি সন্ত্রাসীদের নতুন ডাইমেনশন কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হঠাৎ করে এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা সন্ত্রাসের নতুন অধ্যায় হতে পারে। গতকাল সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিজ কক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এর আগেও আমরা সন্ত্রাসীদের কঠিন হাতে দমন করেছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী এ বিষয়ে আমরা জিরো টলারেন্স নীতিতে আছি। তিনি বলেন, সন্ত্রাসীদের কঠিন হাতে দমন করা হবে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। জড়িত সন্দেহে এ পর্যন্ত ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হত্যার মোটিভ ও তথ্য উদঘাটনে সরকারের সবগুলো গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। সন্ত্রাসীদের অচিরেই ধরা হবে। মন্ত্রী বলেন, ঘটনাস্থলের আশপাশের এলাকার মোবাইল টাওয়ার অবজারভেশনে রাখা হয়েছে। কে কার সঙ্গে কথা বলেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অবিলম্বে এ ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করা হবে।
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান বলেন, প্রশ্নই আসে না। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এ বিষয় নিয়ে কাজ করছে। তাদের প্রতি আমাদের বিশ্বাস আছে। এটি সন্ত্রাসীদের কৌশল হতে পারে। কারণ এ ধরনের ঘটনা গত সাত-আট বছরে আর হয়নি। লিটন হত্যা ঘটনার বিষয়ে অনেকগুলো ধারণা সামনে রেখে পুলিশ কাজ করছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
সংসদ সদস্য লিটন হত্যায় জামায়াত-শিবির জড়িত কিনা এই প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, এলাকাটি জামায়াত-শিবির অধ্যুষিত। এর আগে জামায়াত-শিবির ওই এলাকায় যথেষ্ট পরিমাণে সন্ত্রাসী কর্মকা- করেছে। এক জন বীর সেনানীর মতো এমপি লিটন জামায়াত-শিবিরের এসব সন্ত্রাসী কর্মকা-ের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা রেখেছে। তবে উনি একজন সংসদ সদস্য। তাই একজন সংসদ সদস্যকে কেন টার্গেট করা হয়েছে তা তদন্ত না করে বলা যাচ্ছে না।
এ ঘটনা সরকারের জন্য হুমকি কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সরকারের উপর কোনো হুমকি নেই। পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা আগেও করা হয়েছে। আমরা সব কিছুই মাথায় রেখে কাজ করছি।
একজন এমপিকে বাসায় ঢুকে হত্যার ঘটনা আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে ব্যর্থতা প্রমাণ করেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা ব্যর্থতা না। তিনি অত্যন্ত দরদী মানুষ ছিলেন। মানুষের সঙ্গে, জনগণের সঙ্গে মিলে মিশে কাজ করেছেন। সে কারণেই সন্ত্রাসীরা এ সুযোগটা নিয়েছে।
এ ঘটনায় সরকার উদ্বিগ্ন কিনা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা মোটেও উদ্বিগ্ন নই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপর আমাদের বিশ্বাস আছে। তারা এর আগে তাদের দক্ষতা প্রমাণ করেছে।
সংসদ সদস্য ও জেলা প্রশাসকদের সতর্কতার সঙ্গে চলাচলের নির্দেশ দেবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবাই নিজের এলাকায় সতর্কতার সঙ্গে চলাচল করবে এটাই স্বাভাবিক। আগেই তাদের এ নির্দেশনা দেওয়া আছে।
এছাড়া একই দিন খুলনায় মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জেডএ মাহমুদ ডনকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় পথচারী শিল্প ব্যাংকের ডিজিএম চিত্র রঞ্জন কু-ুর স্ত্রী শিপ্রা কু-ু নিহত হয়।
এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, খুলনা আওয়ামী লীগের নেতু ডনকে হত্যা চেষ্টায় কারা জড়িত সেটা সনাক্ত করা গেছে। এমনকি হত্যা ঘটনায় (পিস্তল) আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহকারী কারেন্ট বাবুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি জানান, খুব শীঘ্রই এ ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে। সম্পাদনা: এনামুল হক