রাশিদ রিয়াজ: মাবাহ গোটো ১৪৬তম জন্মদিন পালন করেছেন। অফিশিয়াল রেকর্ড অনুয়ায়ী এর আগে যিনি বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তির আসনটি ধরে রেখেছিলেন সেই জিয়ান্না কালমেন্ট, গোটোর চেয়ে ১৯ বছরের ছোট এবং ১৯৯৭ সালে মারা গেছেন। সাপারম্যান সোদিমেজো স্থানীয় এলাকাবাসীর কাছে মাবাহ গোটো নামেই পরিচিত। তার জন্ম তারিখ মনে করতে না পারলেও তিনি অনায়াসে তার দেশে ১৮৮০ সালে চিনিকল স্থাপিত হয়েছিল তা স্মরণ করতে পারেন। তবে ইন্দোনেশিয়ার জন্ম নিবন্ধন কর্মকর্তারা বলছেন, মাবাহ গোটো জন্মগ্রহণ করেন ১৮৭০ সালের নববর্ষে। তারপরও তার প্রকৃত বয়স নিয়ে সন্দেহ করেন অনেকে।
২০১০ সালে ইন্দোনেশিয়ায় শুমারিতে মাবাহ গোটোর বয়স রেকর্ড করা হয় ১৪২ বছর। তারপর তার পরিবারও ঘটা করে জন্মদিন পালন করেছে। মাবাহ গোটোর নাতি-নাতনিরাও এসেছিল এ আয়োজনে যোগ দিতে। মাবাহ গোটের ১০ ভাইবোনের কেউ বেঁচে নেই। বিয়ে করেছেন চারটি। স্ত্রীদের সবাই চলে পরপারে চলে গেছেন। তার ছেলে মেয়েরাও মারা গেছে। এখন মাবাহ গোটো বেঁচে আছেন, নাতি, পুতি ও পুতির ঘরের ছেলেমেয়েকে নিয়ে। যখন মাবাহ গোটোর ১২২ বছর বয়স তখন তিনি মরণের প্রস্তুতি নেন। ২৪ বছর আগে ১৯৯২ সালে তার সমাধিস্তম্ভ তৈরি করা হয়। তার ছেলেমেয়ের পাশেই সমাধির স্থানও নির্ধারণ করা হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট অনুযায়ী মাবাহ গোটোর পরিচয়পত্রে তার জন্ম তারিখ লেখা রয়েছে ৩১ ডিসেম্বর, ১৮৭০ সাল। তবে তিনিই বিশ্বের সবচেয়ে সিনিয়র ব্যক্তি কি না তা এখনো গ্রহণযোগ্য হিসেবে প্রমাণিত হয়নি। দৃষ্টিশক্তি কিছুটা হ্রাস পাওয়ায় মাবাহ গোটো অধিকাংশ সময় রেডিও শুনে সময় কাটান। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ যখন শুরু হয় তখন তার বয়স ছিল ৪৪ বছর। বিশ্বের প্রথম গাড়ি কার্ল বেঞ্জ মডেলের কার তৈরির কিছু দিন আগে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। আলেক্সান্ডার গ্রাহাম বেলের জন্মের ৬ বছর আগে তার জন্ম। এমনকি প্রথম বিমান তৈরিকারক রাইট ভ্রাতৃদ্বয়ের চেয়ে তিনি ৩৩ বছর বড়। বিশ্বের প্রথম গণহত্যা থেকে শুরু করে মাবাহ গোটো টাইটানিক ডুবে যাওয়া যুগের মানুষ হিসেবে প্রথম বলকান যুদ্ধের সাক্ষী। ১৯৯২ সালে চীনা সম্রাটের শাসনকালের ইতিও তিনি দেখেছেন।
ঠা-া যুদ্ধের সমাপ্তি, বার্লিন দেয়ালের পতন, চাঁদে প্রথম ব্যক্তির পদচারণার মত কত অসংখ্য ঘটনার সাক্ষী হয়ে বেঁচে আছেন মাবাহ গোটো। এখনো লাঠি ভর দিয়ে তিনি অনায়াসে হেঁটে বেড়ান। ধূমপানের জন্যে চুপি চুপি দোকান থেকে দিয়াশলাই কিনে আনেন। চামচ দিয়ে খাইয়ে দিতে হয়। তাকে যখন জিজ্ঞেস করা হয় এত দীর্ঘকাল বেঁচে থাকার রহস্য কি? তার সহজ সরল উত্তর, ‘নিছক ধৈর্য’। দি সান