সরকারের কাছে সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে রোহিঙ্গারা
উম্মুল ওয়ারা সুইটি: মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীরা চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে। কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার সীমান্ত দিয়ে গত তিনমাসে কতজন রোহিঙ্গা এসেছেন তার কোনো হিসেব নেই সরকারের কাছে। প্রতিদিন সীমান্ত দিয়ে নাফ নদী পাড়ি দিয়ে নৌকায় করে শত শত রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এদের মধ্যে একটি সংখ্যা টেকনাফ ও উখিয়ার অনিবন্ধিত শরণার্থী ক্যাম্প লেদা ও কুতুপালং-এ আশ্রয় নিলেও একটি বড় অংশ আশপাশের জেলাগুলোতে চলে যাচ্ছে দালালদের মাধ্যমে।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, গত তিনমাসে প্রতিদিনই সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গারা প্রবেশ করেছে। টেকনাফের মিয়ানমার সীমান্তের ৭৯ কিলোমিটার জুড়ে পথে পথে রোহিঙ্গা। প্রতিদিনই একটি দুটি নৌকা বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) সদস্যরা ফেরত পাঠাচ্ছে। কিন্তু যাদের ধরতে পারছে না তারা এক-দুদিনের মধ্যেই টেকনাফ উখিয়া ছেড়ে বান্দরবান, খাগড়াছড়িসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছেন। তাদের সংখ্যা নির্ধারণ করতে না পারলে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখে পড়বে দেশ।
টেকনাফের লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চেয়ারম্যান হাফেজ মো. আয়ুব বলেন, নিবন্ধিত ক্যাম্পে ঢুকতে পারছে না কেউ। তবে আসা অব্যাহত রয়েছে এবং তারা নয়াপাড়া নিবন্ধিত ক্যাম্প, উখিয়ার কুতুপালং অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প ছাড়াও কক্সবাজার, মহেশখালী, নাইক্ষ্যংছড়িসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ছে। অভাব-অনটনে অনেকে অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এই সংখ্যা নিরূপণ করা জরুরি।
নগর পুলিশ কমিশনারের পক্ষ থেকে জানানো হয়,নজরদারি অনেক বেশি। ধরা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুশব্যাক করা হচ্ছে। তবে রোহিঙ্গারা চট্টগ্রামের ভাষায় কথা বলতে অভ্যস্ত বিধায় তাদের ধরা কঠিন হয়ে পড়েছে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু সমস্যাটি প্রায় ৪০ বছরের পুরনো। কিছু দিন পর পর জাতিগত সংকট সৃষ্টি করে তারা বাংলাদেশে আসছে। উখিয়া টেকনাফে বাংলাদেশি নাগরিক ছয় লাখ থাকলে রোহিঙ্গাও আছে ছয় লাখের বেশি। আরও রোহিঙ্গা ঢুকলে পরিস্থিতির অবনতি হবে। এরা দেশের জন্য ভয়ানক হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। এই সংখ্যা বের করতে না পারলে বাংলাদেশ বিপাকে পড়বে। তাদের কারণে কক্সবাজার, বান্দরবান ও চট্টগ্রাম জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।