থামছেনা বাস যাত্রীদের পকেট কাটা
ইসমাঈল হুসাইন ইমু: শীতের সকাল। কর্মস্থলে যেতে হবে যথাসময়ে। কারও তাড়া রয়েছে,রোগী হাসপাতালে ভর্তি। জরুরি কাজে ঢাকায় এসেছেন অনেকেই। এরা সকলেই রাজধানীর গণপরিবহনের যাত্রী। বেশিরভাগ যাত্রী বিভিন্ন রুটের নির্ধারিত ভাড়ার পরিমাণ জানেন না। আর না জানা থাকলেতো কথাই নেই। বাড়তি ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের ধমকানো হচ্ছে অন্য পরিবহনের দোহাই দিয়ে। এ নিয়ে প্রতিনিয়ত যাত্রী ও হেলপারদের মধ্যে বচসা চলছেই। নতুন বছরের শুরুর গত দুইদিন রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুর, গুলশান ও উত্তরা রুটের গণপরিবহনে সরেজমিনে এ অবস্থা লক্ষ্য করা গেছে।
পরিবহন সংস্থা, মালিক, বাস-মিনিবাস, এমনকি গাড়ির সহকারী ভেদে একই দূরত্বে আদায় করা হচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন ভাড়া। প্রায় সব বাস-মিনিবাসে সেবার মান না থাকলেও নানা কায়দায় যাত্রীর এই পকেট কাটা চলছেই। প্রতিটি রুটে কয়েক টাকা থেকে শুরু করে তিনগুণ পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে যাত্রী প্রতিনিধিত্বহীন রাজধানীর ঢাকা মেট্রো আরটিসির ও বিআরটিসির তৎপরতাও দৃশ্যমান নয়। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা বলেছেন, আসলে ঢাকা ও ঢাকার আশপাশের রুটগুলোতে চলাচলকারী বাসগুলোতে বিশৃঙ্খলা রয়েছে। অনেকেই একই দূরত্বে বিভিন্ন বা বাড়তি ভাড়া আদায় করছে। এ বিষয়ে মালিক সমিতির পক্ষ থেকেও অনেক সময় একাধিক চালক ও সহকারীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একাধিক পরিবহন মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দকে সরিয়ে দেয়া বা কমিটিও ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা শহরের ১৭ নম্বর রুট। মতিঝিল থেকে মিরপুর ১২। গতকাল রোববার গাড়ির ভাড়া তোলার সময় মাঝে মাঝেই বাস হেলপারের সঙ্গে যাত্রীদের বাক-বিত-া হচ্ছিল। সবার সঙ্গে বাড়তি ভাড়া নিয়ে ঝগড়া। কোনো কোনো যাত্রী মারমুখি হয়ে উঠছেন। ওই বাসের হেলপার মনির জানান, আমরা ২৮ বা ৩০ টাকা ভাড়া নিয়ে থাকি। তবে কিছুদিন আগেও ২৫ টাকা নেয়া হতো।
চালক সুমন বলেন, শুধু কী আমরা? অন্যরাও একইভাবে ভাড়া নিচ্ছে। বিআরটিএর বাসও তো ২৫ টাকা ভাড়া আদায় করছে। মিনিবাসের সর্বনিম্ন ভাড়া ৫ টাকা হলেও কেন বড় বাসের ভাড়ার চেয়ে বেশি আদায় করছেন তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, মিনিবাস হলেও আমারটা বড় বাস হিসেবে তালিকাভুক্ত।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি সূত্র জানিয়েছে, গণপরিবহনে নানা নৈরাজ্য বিরাজ করছে। গাড়িগুলোতে দূরত্ব ও ভাড়ার তালিকা না টানিয়ে নীরবে একই দূরত্বে বাড়তি ভাড়া আদায় হচ্ছে। অতিরিক্ত ভাড়া তো রয়েছেই। সাধারণ যাত্রীরা এর প্রতিবাদ করলেই হয়রানির শিকার হচ্ছেন। সমিতি এ সমস্যা নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে দায়ী করছে। সম্পাদনা: শারমিন আজাদ